• যৌন নির্যাতন: ধৃত বড়গড়িয়া হাইস্কুলের সেই প্রধান শিক্ষক
    বর্তমান | ০৮ অক্টোবর ২০২৫
  • সংবাদদাতা, মানবাজার: অবশেষে ধরা পড়লেন বোরোর বড়গড়িয়া হাইস্কুলের কীর্তিমান প্রধান শিক্ষক ভাস্করচন্দ্র মাহাত। দীর্ঘদিন ধরেই হস্টেলের ছাত্রীদের শ্লীলতাহানির অভিযোগ উঠছিল তাঁর বিরুদ্ধে। ক্ষুব্ধ ছিলেন ছাত্রছাত্রী থেকে শুরু করে অভিভাবকরা। গত ১৫ সেপ্টেম্বর ক্ষোভের আগুনে ঘৃতাহুতি পড়ে। উত্তাল হয়ে ওঠে স্কুল চত্বর। ওই দিনই ভাস্করের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের। সেই থেকে পালিয়ে বেড়াচ্ছিলেন তিনি। সোমবার রাতে হাওড়া থেকে অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষককে গ্রেফতার করে পুলিশ। মঙ্গলবার তাঁকে পুরুলিয়া জেলা আদালতে তোলা হয়। 

    প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরেই তিনি ছাত্রীদের উপর শারীরিক ও মানসিক অত্যাচার চালাচ্ছিলেন। পড়ানোর নাম করে ছাত্রীদের শরীরে ‘ব্যাড টাচ’ করতেন। কখনও কখনও ছাত্রীদের নিজের অফিস রুমে ডেকে পাঠাতেন। এমনকী, ছাত্রীদের হস্টেলেও তিনি যেতেন। সেখানে তাঁর যৌন লালসার শিকার হতেন ছাত্রীরা। কাউকে কিছু বললে স্কুল থেকে বের করে দেওয়ার পাশাপাশি পরীক্ষায় ফেল করিয়ে দেওয়ারও হুমকি দিতেন বলে অভিযোগ। ফলে, ভয় কেউই মুখ খোলার সাহস পেত না। সম্প্রতি বেশ কয়েকজন ছাত্রী ভাস্করের যৌন নির্যাতনের শিকার হয়ে বাড়িতে কান্নাকাটি করে। তাতেই জানাজানি হয়ে তাঁর কুকীর্তি। 

    গত ১৫ সেপ্টেম্বর বিকেলে একটা হেস্তনেস্ত চেয়ে স্কুলে হাজির হন ছাত্রছাত্রী থেকে শুরু করে অভিভাবকরা। তপ্ত হয়ে ওঠে স্কুল চত্বর। তুমুল বিক্ষোভ চলে। খবর পেয়ে পুলিশও চলে আসে। সেখানে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে মৌখিক অভিযোগ জানানো হয়। পরে থানায় জমায়েত হন অভিভাবকরা। ওইদিন রাতেই প্রধান শিক্ষকের নামে লিখিত অভিযোগ জানান হস্টেলের এক আদিবাসী ছাত্রীর মা। পুলিশ অভিযোগের ভিত্তিতে পকসো সহ তপশিলি জাতি-উপজাতি নিগ্রহ প্রতিরোধ আইনে মামলা রুজু করে। প্রধান শিক্ষকের গ্রেফতারের দাবিতে পথে নামে আদিবাসী সংগঠনগুলি। স্কুলের গেটের সামনে বিক্ষোভ দেখাতে থাকে সিপিএমের ছাত্র ও যুব সংগঠন। এদিকে, পুলিশও আদাজল খেয়ে প্রধান শিক্ষককে ধরতে মাঠে নেমে পড়ে। ঘটনার ২১ দিন পর বছর পঞ্চান্নর ওই শিক্ষককে হাওড়া থেকে গ্রেফতার করে নিয়ে আসে পুলিশ। এসএফআইয়ের পুরুলিয়া জেলা কমিটির সহ-সম্পাদক রুদ্র নাগ এদিন বলেন, ‘অনেকদিন পর পুলিশ অভিযুক্ত শিক্ষককে গ্রেফতার করেছে। আমরা ওঁর কঠোর শাস্তি চাই।’ এই দাবিতে একটি মিছিলও বের করে সিপিএম। 

    পাশাপাশি, বীরভূমের রামপুরহাটে আদিবাসী ছাত্রীকে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় অভিযুক্তের শাস্তির দাবিতে বলরামপুরেও বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করে সিপিএম। বলরামপুর কলেজ ময়দান থেকে মিছিলটি পুরো বলরামপুর টাউন পরিক্রমা করে শেষ হয় বলরামপুর বাসস্ট্যান্ডে। 
  • Link to this news (বর্তমান)