• পুজো মিটলেও করিমপুরের নস্করীতলার মেলায় কাঠের আসবাব বিক্রিতে উৎসাহ
    বর্তমান | ০৮ অক্টোবর ২০২৫
  • সংবাদদাতা, করিমপুর: দশমীর বিকেলে মা নস্করীর বিসর্জনের পরে কেটে গিয়েছে পাঁচ দিন। তারপরেও সেখানে প্রতি বছরের মতো আজও বিক্রি চলছে কাঠের জিনিসপত্রের। বহু প্রাচীন এই পুজো উপলক্ষ্যে নস্করীতলায় যে মেলা বসে সেই মেলায় বিভিন্ন খাবার থেকে নাগরদোলা, লোহার জিনিস থেকে মনোহারী দোকানের পাশাপাশি বিরাট এলাকা জুড়ে কাঠের জানালা, দরজা, টেবিল, চেয়ার, খাট কিংবা অন্যান্য আসবাবেরও বিক্রিবাটা হয়। করিমপুর ও আশপাশের জেলার বহু মানুষ এই মেলা থেকে আসবাব কেনার জন্য অপেক্ষায় থাকেন। 

    স্থানীয়রা জানান, অনেক বছর আগে থেকে এই মেলায় কাঠের আসবাব বিক্রি হয়ে আসছে। পুজোর সময় বহু মানুষ আসবাবপত্র কেনেন হোগলবেড়িয়ার পুজোর মেলায়। এক সময় ছিল যখন এলাকার গরিব মানুষ দিনমজুর খেটে পঞ্চাশ টাকাও আয় করতে পারতেন না। সেই সময় মাটির ঘরে অনেকেই মেঝেয় শুয়ে ঘুমোতেন। তখন কারওর নিদেনপক্ষে একটা কাঠের চৌকি কেনারও সামর্থ্য ছিল না। তাঁদের একমাত্র এই মেলায় কম দামে চৌকি কেনার  সুযোগ হতো। নাসিরপাড়ার প্রশান্ত মণ্ডল বলেন, আমি অন্তত ৩০ বছর আগে থেকে এই মেলায় কাঠের জিনিসের কেনাকাটা দেখছি। কারও বাড়িতে যে কোনও কাঠের জিনিস কেনার হলে অন্য জায়গায় বেশি দামে না কিনে এই মেলায় কিনবেন বলে আশায় থাকেন। আগে এই মেলা বড় হলেও এখন মেলার বহরে কমেছে। কিন্তু আসবাবপত্রের বিক্রি বেড়েছে। 

    করিমপুরের সমীর সরকারের কথায়, এখানে নদীয়া, মুর্শিদাবাদের বহু  মানুষ নস্করী মাকে দেখতে আসেন। তাঁদের অনেকে কাঠের মেলায় ভিড় জমান। কম দামে কাঠের প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কেনেন। মহাষষ্ঠী থেকে মেলা শুরু হলেও কাঠের আসবাব বিক্রি হয় নবমী থেকে। দশমী পেরিয়ে গেলে মেলার অন্যান্য দোকান উঠে যায়। কিন্তু কাঠের মেলা পুজোর পরেও অন্তত সাতদিন থাকে। অনেকেই বাড়িতে প্রয়োজনীয় জিনিস দরকার হলে কম দামে এখানে পাবেন বলে এই পুজোর অপেক্ষায় থাকেন। এখানে কম দামে কাঠের জিনিস পাওয়ায় মূলত নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের মানুষই কেনাকাটা সারেন। 

    যেখানে ভাল মানের একটি খাট বাজারে প্রায় চল্লিশ হাজার টাকা দামে বিক্রি হয় সেখানে এই মেলায় খাট পাওয়া যায় ১৫ হাজার টাকায়। মেলায় আসা নবদ্বীপের ব্যবসায়ী স্বপন বিশ্বাস বলেন, প্রায় দশ বছর ধরে এই মেলায় বিভিন্ন ধরণের কাঠের খাট বিক্রি করি। এখানে কাঠের জিনিসের মেলা চলে প্রায় দশদিন। এই ক’দিনে সব মাল বিক্রি হয়ে যায়। বেশিরভাগ ক্রেতা যাঁরা বেশি দামের জিনিস কিনতে পারেন না তাঁরাই এই মেলায় কাঠের আসবাব কিনতে আসেন।  নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)