• কোশীর জলে পদ্মা ফুলে ফেঁপে, বাড়ছে জলস্তরও, আতঙ্কিত বাসিন্দারা, নজর রাখছে প্রশাসন
    বর্তমান | ০৮ অক্টোবর ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, বহরমপুর: মুর্শিদাবাদ জেলায় পদ্মার জলস্তর বাড়ছে। মঙ্গলবার দুপুরে জলের সর্বোচ্চ স্তর ছিল ২০.৬২মিটার। বিপদসীমার কিছুটা নীচে থাকলেও ক্রমাগত জল বাড়ায় উদ্বেগ বাড়ছে। পদ্মার জলস্তরের দিকে নজর রাখছে সেচদপ্তর ও জেলা প্রশাসন। কোশী থেকে লাগাতার জল ঢুকছে পদ্মায়। বিহারে অতিরিক্ত বৃষ্টি এবং এরাজ্যে গভীর নিম্নচাপের জেরে ভালো বৃষ্টি হয়েছে। বিভিন্ন নদীতে জলস্তর বাড়ছে। পদ্মায় জলের স্রোত বেশি রয়েছে। যদিও ভাগীরথীর জলস্তর এখন স্বাভাবিক থাকায় কিছুটা স্বস্তি মিলেছে। 

    জেলা সেচদপ্তরের এক আধিকারিক বলেন, পদ্মায় জলস্তর ক্রমাগত বাড়ছে। মঙ্গলবার দুপুরে জলস্তর ছিল ২০.৬২মিটার। পদ্মায় বিপদসীমা ২১.৯১ মিটার নির্ধারণ করা আছে। ফলে বিপদসীমা থেকে কিছুটা নীচেই জল আছে। আমরা পরিস্থিতির উপর নজর রাখছি। তবে আরও জল বাড়লে পদ্মা তীরবর্তী গ্রামগুলিতে জল ঢোকার সম্ভাবনা আছে। 

    প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, পদ্মায় জল বাড়লে জেলার আটটি ব্লকে প্লাবনের আশঙ্কা দেখা দেয়। বিশেষ করে লালগোলা, রানিতলা, সাগরপাড়া, জলঙ্গি, রানিনগর-১ ও ২ ব্লক, সূতি-২ ও রঘুনাথগঞ্জ-২ ব্লকে পদ্মা তীরবর্তী গ্রামগুলিতে বিপদের আশঙ্কা করা হচ্ছে। গত আগস্ট মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহেও পদ্মার জলস্তর সর্বোচ্চ বিপদসীমা ছাড়িয়ে গিয়েছিল। পদ্মার সঙ্গে যুক্ত নিকাশি নালা দিয়ে জল গ্রামে ঢুকতে শুরু করে। রঘুনাথগঞ্জ-২ ব্লকের সেকেন্দ্রা, মিঠিপুর, বড়শিমুল ও শেখালিপুর পঞ্চায়েতের বেশকিছু এলাকায় বন্যার আশঙ্কা হয়। পাশাপাশি সূতির নুরপুর, লালগোলা ও ভগবানগোলায় বেশকিছু গ্রামে জল ঢুকে যায়। 

    সেকেন্দ্রার বাসিন্দা লুৎফর মণ্ডল বলেন, গত দু’দিন ধরে পদ্মায় জল অনেকটা বেড়েছে। ভরা বর্ষায় এরকম জল বাড়ছিল। তারপর একদিন রাতে প্লাবনে গ্রামে জল ঢুকে যায়। বৃষ্টি কমার পর এখন আবার এভাবে জলস্তর বৃদ্ধি হওয়ায় আমরা আতঙ্কে আছি। জানি না আবার গ্রামে জল ঢুকবে কিনা। পরিবার নিয়ে কোথায় যাব তা নিয়েই চিন্তা হচ্ছে। 

    জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, জলস্তর বাড়ছে। তবে প্লাবনের আশঙ্কা নেই। স্থানীয় স্কুলগুলিতে ত্রাণশিবির করার জন্য আপদকালীন প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। এলাকায় জল ঢুকলে বাসিন্দাদের ওইসব ত্রাণশিবিরে এনে রাখা হবে। লালগোলার বাসিন্দা মোক্তার শেখ বলেন, বর্ষার পরও পদ্মা ফুঁসছে। রাতের দিকে নদীর স্রোতের শব্দ শুনলে ভয় করছে। ভরা কোটালের সময়ও জল ছাপিয়ে গ্রামে ঢুকলে বিপদ বাড়বে। সূতির বাসিন্দা তথা জেলা পরিষদের সভাধিপতি রুবিয়া সুলতানা বলেন, পদ্মায় জলস্তর বাড়ার খবর আমরা পেয়েছি। তবে জলস্তর বিপদসীমার কাছাকাছি এখনও পৌঁছয়নি। আমরা জেলা প্রশাসন ও সেচদপ্তরের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি। জেলা প্রশাসন ও আমাদের সরকার সবসময় মানুষের পাশে আছে। উত্তরবঙ্গ যেভাবে প্লাবিত হয়েছে সেখানে আমাদের মুখ্যমন্ত্রী নিজে পৌঁছে গিয়েছেন। মুর্শিদাবাদে কিছু এলাকায় ভাঙন হচ্ছে। সেখানে আমরা মানুষের পাশে আছি। এখন পদ্মায় জলস্তর বেড়ে কোনও সমস্যা হলেও সেখানেও মানুষের পাশে দাঁড়াব।
  • Link to this news (বর্তমান)