পুরনো ইটেই তৈরি হচ্ছে উপস্বাস্থ্যকেন্দ্র কাজ আটকালেন উপপ্রধান ও বাসিন্দারা
বর্তমান | ০৮ অক্টোবর ২০২৫
সংবাদদাতা, কান্দি: প্রায় ১৮বছরের পুরনো উপস্বাস্থ্যকেন্দ্র ভবন পূর্ণাঙ্গ সংস্কারের জন্য বরাদ্দ হয়েছে ন’লক্ষ টাকা। টেন্ডার করে কাজও শুরু করেছিল জেলা স্বাস্থ্যদপ্তর। কিন্তু পুরনো ভবনের নোনা ধরা ইট দিয়েই গড়ে তোলা হচ্ছে উপস্বাস্থ্যকেন্দ্রের নতুন দেওয়াল! এমনই অভিযোগে মঙ্গলবার লোকজন সহ এসে ভবন তৈরির কাজ আটকে দিলেন উপপ্রধান। ভরতপুর-১ ব্লকের আলুগ্রাম পঞ্চায়েতে এঘটনা ঘটেছে। অভিযোগ, সোমবার বিকেলে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারের কর্মীদের একটি ঘরে আটকেও রাখা হয়েছিল।
উপপ্রধান বুদ্ধদেব প্রধান বলেন, ঠিকাদার কাজের কোনও শিডিউল দেখাতে চাইছেন না। প্রথম থেকেই কাজে ফাঁকি দিচ্ছেন। পুরনো ভবনের নোনা ধরা ইট দিয়ে নতুন ভবনের কাজ করা হচ্ছিল। তাই কাজ আটকে দেওয়া হয়েছে। ঠিকাদারকে ফোন করলে উনি বলছেন, তিনি সাংসদ, বিধায়কদের কাছের লোক। সুতরাং কেউ কিছু করতে পারবে না।
ওই পঞ্চায়েতের মাসলাই উপস্বাস্থ্যকেন্দ্রের ভবনটি দীর্ঘদিন ধরে জরাজীর্ণ দশায় ছিল। কয়েকমাস আগেই জেলা স্বাস্থ্যদপ্তর সেটি সংস্কারের জন্য টেন্ডার ডাকে। প্রায় ন’লক্ষ টাকা বরাদ্দে কাজ শুরু হয়। কিন্তু প্রথম থেকেই নিম্নমানের কাজের অভিযোগ তুলেছিলেন স্থানীয় বাসিন্দারা। দু’মাস আগেই তাঁরা একবার সংস্কারকাজ আটকে দিয়েছিলেন। এরপর দুর্গাপুজোর সময় ফের সংস্কার শুরু হলে এলাকাবাসীর মধ্যে ক্ষোভ দেখা দেয়। সোমবার বিকেলে এলাকার বাসিন্দা তথা পঞ্চায়েতের উপপ্রধান বুদ্ধদেব প্রধান ও তাঁর লোকজন ঠিকাদারের কর্মীদের সঙ্গে বচসায় জড়িয়ে পড়েন। অভিযোগ, তার জেরে ঠিকাদারের কর্মীদের একটি ঘরে আটকে রাখা হয়েছিল। খবরহ পেয়ে ভরতপুরের বিএমওএইচ শীর্ষ চট্টোপাধ্যায় সেখানে পৌঁছন। তিনি বাসিন্দাদের বুঝিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেন। এরপর মঙ্গলবার ফের কাজ বন্ধ করে দেন স্থানীয়রা।
ঠিকাদার বেলাল শেখ বলেন, আমি জেলার বিভিন্ন জায়গায় উপস্বাস্থ্যকেন্দ্রের কাজ করছি। কোথাও কোনও অভিযোগ নেই। এখানে কাজের বিষয়ে শিডিউলে পরিষ্কার করে কিছু উল্লেখ নেই। তবে পুরনো ইট ব্যবহার করা হচ্ছে না। আমি কাউকে জনপ্রতিনিধিদের কাছের লোক বলেও পরিচয় দিইনি। শান্তিপূর্ণভাবে আমাকে কাজ করতে না দেওয়া হলে কাজ বন্ধ করে চলে যাব।
মঙ্গলবার ওই গ্রামে গিয়ে দেখা গেল, পুরনো ভবনের ছাদের অংশ ভেঙে ফেলার পর দোতলার গাঁথনি চলছে। তবে দোতলার যে দেওয়াল তোলা হচ্ছে, তাতে পুরনো ভবনের ইট ব্যবহার করা হয়েছে। এমনকী, গাঁথনির ইটের মধ্যে কিছু নোনাধরা ইটও রয়েছে। ভরতপুর-১এর বিএমওএইচ জানিয়েছেন, বিষয়টি তদন্ত করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।