• ১৫ দিনের মধ্যে বিকল্প রাস্তা তৈরির নির্দেশ মমতার, হাট বন্ধ দুধিয়ায়, ঠেলায় জরুরি সামগ্রী পৌঁছে দিচ্ছে মাটিগাড়া
    বর্তমান | ০৮ অক্টোবর ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, দুধিয়া (কার্শিয়াং): ১৫ দিনের মধ্যে দুধিয়ায় তৈরি হবে বিকল্প রাস্তা। মঙ্গলবার দুধিয়ায় বালাসন নদীর পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের পর একথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। একই সঙ্গে তিনি প্রশাসনকে ধস বিধ্বস্ত রোহিনী রোড খুলতে উদ্যোগী হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। এদিকে, প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের জন্য আপাতত বন্ধ রয়েছে দুধিয়ার হাট। তবে, স্থানীয়দের পাশে দাঁড়িয়েছেন মাটিগাড়ার ব্যবসায়ীরা। তাঁরা ঠেলায় করে নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী নিয়ে পৌঁছে যাচ্ছেন দুধিয়ায়।

    শিলিগুড়ির সঙ্গে মিরিকের যোগাযোগের অন্যতম সড়ক দুধিয়া। গত শনিবার বালাসন নদীর স্রোতের ধাক্কায় ওই রাস্তায় লোহার পুল ভেঙে যায়। যার জেরে শিলিগুড়ি থেকে মিরিকের সরাসরি সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। সেখানে যুদ্ধকালীন তৎপরতায় বিকল্প সেতু তৈরির উদ্যোগ নিয়েছে প্রশাসন।

    এদিন মুখ্যমন্ত্রী বলেন, সংশ্লিষ্ট সেতু তৈরি করতে এক মাস সময় লাগবে বলে পূর্তদপ্তর জানিয়েছে। তাদের সেতুটি ১৫ দিনের মধ্যে তৈরি করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তবে, বালাসন নদীতে মারাত্মক স্রোত। সেজন্য দু’দিন পর থেকে কাজ শুরু করা হবে। এই কাজ করার সময় নদীতে যাঁরা নামবেন, তাঁরা যেন অবশ্যই লাইফ জ্যাকেট পরেন। তা হলে দুর্ঘটনা এড়ানো যাবে।

    দুধিয়ায় ভেঙে যাওয়া লোহাপুলের পরিবর্তে হিউম পাইপ বসিয়ে বিকল্প সেতুর কাজ শুরু করেছে পূর্তদপ্তর। পাশাপাশি, মুখ্যমন্ত্রী এলাকাবাসীদের আশ্বস্ত করেন, ভেঙে যাওয়া লোহারপুলের বিকল্প আরও একটি সেতু তৈরির জন্য ৫৪ কোটি টাকা বরাদ্দ করে আগেই কাজ শুরু হয়েছে। তবে, বর্তমানে ভেঙে পড়া লোহাপুলের পরিবর্তে যে বিকল্প রাস্তা হচ্ছে, তা যত দ্রুত সম্ভব তৈরি করে দেওয়ার জন্য দপ্তরের আধিকারিকেরা যথেষ্ট চেষ্টা করছেন। তবে, সাধারণ মানুষের স্বার্থে তা ১৫ দিনের মধ্যেই শেষ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

    এদিকে, ধস বিধ্বস্ত রোহিনী রোড বন্ধ রয়েছে। যার ফলে পাহাড়বাসী ও পর্যটকরা সমস্যা পড়েছেন। এদিন সংশ্লিষ্ট রাস্তাও মুখ্যমন্ত্রী পরিদর্শন করেন। তিনি বলেন, রাস্তাটির ৫০০ মিটার এলাকায় এখনও বোল্ডার পড়ছে। তবে, সেটি দ্রুত খোলার উদ্যোগ নিতে হবে। না হলে অন্যান্য রাস্তায় কিছুটা চাপ বাড়ছে। প্রশাসনের এক কর্তা জানান, ধস বিধ্বস্ত রাস্তাটির বেশকিছু জায়গা বিপজ্জনক। সেই জায়গাগুলি মেরামতি করতেই সময় লাগছে।

    অন্যদিকে, দুধিয়ার রাস্তা বন্ধ থাকায় সেখানে হাটের ব্যবসা মার খাচ্ছে। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সপ্তাহের রবিবার হাট বসে। সেখানে প্রায় ৫০০ দোকান রয়েছে। শিলিগুড়ি, মাটিগাড়া, নকশালবাড়ি থেকে ব্যবসায়ীরা আসেন। বিপর্যয়ের জেরে গত রবিবার হাট বসেনি। আগামী রবিবারও হাট বসবে কিনা সন্দেহ রয়েছে। এতে হাটের ব্যবসা যেমন মার খাচ্ছে, স্থানীয় বাসিন্দারাও সমস্যায় পড়েছেন।

    এই অবস্থায় স্থানীয়দের পাশে দাঁড়াচ্ছেন মাটিগাড়ার কয়েকজন ব্যবসায়ী। মাটিগাড়ার রামগোপাল সরকার ও দুলাল দাসরা বলেন, দুধিয়ায় বেশকিছু হোটেল রয়েছে। তাই সেখানে মাছ, সবজি দৈনিক প্রয়োজন। স্থানীয়রাও খাদ্য সামগ্রী চাইছে। তাই ঠেলায় করে দৈনিক ঘুরপথে সবজি, মাছ সহ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস নিয়ে এখানে আসছি।  নিজস্ব চিত্র।
  • Link to this news (বর্তমান)