একজনও বন্যায় মারা গেলে ডিভিসির নামে মামলা: আইনমন্ত্রী
বর্তমান | ০৮ অক্টোবর ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, আসানসোল: দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলিতে বন্যা পরিস্থিতি দেখা দিয়েছে। তা সত্ত্বেও জল ছাড়া অব্যাহত রেখেছে ডিভিসি। এর প্রতিবাদে এবার আন্দোলনে নামল রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস। মঙ্গলবার কেন্দ্রের অধীন ডিভিসির মাইথন অফিসের সামনে ধরনা দিয়ে চূড়ান্ত হুঁশিয়ারি দিলেন রাজ্যের শ্রম ও আইনমন্ত্রী মলয় ঘটক—‘ডিভিসির ছাড়া জলে কোনও ফসলের ক্ষতি হলে তার দায় ডিভিসিকেই নিতে হবে। একজনের মৃত্যু হলেও সেই দায় ডিভিসির। আইনজীবী হিসেবে বলছি, ইচ্ছাকৃতভাবে রাজ্যকে না জানিয়ে জল ছেড়ে দেওয়ার পর মৃত্যু হলে ডিভিসির বিরুদ্ধে অনিচ্ছকৃত খুনের মামলা রুজু হতে পারে।’ দীর্ঘক্ষণ ধরনার পাশাপাশি মন্ত্রীর নেতৃত্বে এদিন ডিভিসির আধিকারিকদের স্মারকলিপি দেয় তৃণমূলের প্রতিনিধি দল। মন্ত্রী আরও বলেন, ‘আমরা ডিভিসিকে সতর্ক করে এসেছি। এরপরও অবস্থার বদল না হলে কলকাতায় ডিভিসির সদর দপ্তরেও এই কর্মসূচি করা হবে।’ কয়েকদিনের মধ্যে পাঞ্চেতেও প্রতিবাদ কর্মসূচি হবে বলে জানান মলয়বাবু।
ধরনায় মাইথন, পাঞ্চেত সহ ডিভিসির জলাধার সংস্কার না করার বিষয়টি নিয়েও তাঁরা সরব হন। মলয়বাবুর দাবি, ডিভিসির আধিকারিকরাও মেনে নিয়েছেন, পলি না তোলায় জলধারণ ক্ষমতা কমেছে। এব্যাপারে ডিভিসির এগজিকিউটিভ ডিরেক্টর সুমনপ্রসাদ সিং বলেন, ‘এবার ৭০ হাজার কিউসেকের বেশি জল প্রায় ছাড়াই হয়নি। ডিভিসি জল ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেয় না। এজন্য দামোদর ভ্যালি রিজার্ভার রেগুলেশন কমিটি রয়েছে। তাতে পশ্চিমবঙ্গ সরকারেরও প্রতিনিধি আছেন। জল ছাড়ার তথ্য হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের মাধ্যমেও জানানো হয়।’ যদিও সেকথা মানতে নারাজ প্রতিবাদ কর্মসূচিতে হাজির রানিগঞ্জের বিধায়ক তাপস বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘অফিসাররা বলছেন, হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে জানানো হয়। কিন্তু হোয়াটসঅ্যাপ কি কখনও এত গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দেওয়ার মাধ্যম হতে পারে? ’
গত জুন মাস থেকে ধারাবাহিকভাবে হাজার হাজার কিউসেক হারে জল ছাড়া হচ্ছে মাইথন ও পাঞ্চেত থেকে, যা একপ্রকার নজিরবিহীন। রাজ্য সরকার সরব হওয়ায় অবশ্য গত দু’দিনের তুলনায় জলধারগুলি থেকে জল ছাড়ার পরিমাণ কমিয়েছে ডিভিসি। মাইথন ও পাঞ্চেত থেকে মোট ৫৫ হাজার কিউসেক হারে জল ছাড়া হচ্ছিল। এদিন সেই পরিমাণ নেমে এসেছে ৩৫ হাজার কিউসেকে।