বিয়েতে রাজি না হওয়ায় মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর উপর অ্যাসিড হামলা! চাঞ্চল্য মিনাখাঁয়
বর্তমান | ০৮ অক্টোবর ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, বারাসত: লাগাতার বিয়ের চাপ দিচ্ছিল পড়শি যুবক। তাতে রাজি না হওয়ায় প্রাণনাশের হুমকিও দিচ্ছিল সে। এবার ‘অত্যাচার’ চূড়ান্ত পর্যায়ে নিয়ে গিয়ে মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীকে লক্ষ্য করে অ্যাসিড ছুড়ল যুবক। কলকাতার সরকারি হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে ছাত্রী। পরিবারের দাবি, শরীরের বেশিরভাগ অংশ ঝলসে গিয়েছে তার। ঘটনাকে কেন্দ্র করে তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে মিনাখাঁ থানা এলাকায়। অভিযুক্তকে আটক করে জেরা করছে পুলিশ। তার কঠোর শাস্তির দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মিনাখাঁ থানা এলাকার দশম শ্রেণির ছাত্রীকে গত কয়েকমাস ধরেই বিয়ে করার জন্য উত্যক্ত করছিল প্রতিবেশী এক যুবক। তাকে বেশ কয়েকবার প্রেমের প্রস্তাবও দেয়। তাতে সাড়া দেয়নি কিশোরী। ঘটনার কথা ওই স্কুলছাত্রী তার বাবা-মাকে বলার পর যুবকের বাড়িতে গিয়ে বিষয়টি জানায় ছাত্রীর পরিবার। তারপরও ছাত্রীকে উত্যক্ত করত প্রতিবেশী যুবক। বরং উত্যক্ত করার মাত্রা বাড়তে থাকে। এমনকি ছাত্রীর মোবাইলে অশ্লীল মেসেজও পাঠায় যুবকটি। সে সব কথা জানতে পেরে মাসখানেক আগে ছাত্রীর মা তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন। তখনও রাতের অন্ধকারে স্কুল ছাত্রীর মাকে অ্যাসিড ছুড়ে মেরেছিল যুবক। তারপর থেকেই ছাত্রীকে রাস্তায়, স্কুলে, যেখানেই দেখতে পেত ওই যুবক সেখানেই নানারকমভাবে বিরক্ত করত। কিশোরী কোনওরকমে এড়িয়ে চলে আসত। তাতে আরও আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠে যুবক। সোমবার গভীর রাতে ছাত্রী যখন ঘুমোচ্ছিল, তখন জানালা দিয়ে তাকে অ্যাসিড ছোড়ে যুবক। তার চিৎকারে পরিবারের লোকজনের ঘুম ভাঙে। দ্রুত তাকে প্রথমে মিনাখাঁ গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে কিছুক্ষণ চিকিৎসা করার পর অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় কলকাতার এসএসকেএম-এ ভর্তি করা হয়েছে। প্রতিবেশী যুবকের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক সাজার দাবি জানিয়েছেন আহত স্কুল ছাত্রীর বাবা-মা ও পরিবারের সদস্যরা। মঙ্গলবার দুপুরে মিনাখাঁ থানায় প্রতিবেশী যুবকের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ জানান। মিনাখাঁ থানার পুলিশ পড়শি যুবককে আটক করেছে। তারপর থেকেই তার বাবা-মা পলাতক। নির্যাতিতার কিশোরীর বাবা বলেন, আমার মেয়েকে ছেলেটি বারবার বিরক্ত করত। আমরা ওর বাড়িতে বলেছিলাম, মেয়ে এবার মাধ্যমিক দেবে। সরকারি নিয়ম অনুযায়ী মেয়ে সাবালিকা হলে বিয়ে দেব। কিন্তু ছেলেটির এই কাজ আমরা মেনে নিতে পারলাম না। ওর কঠোর সাজা চাই। পুলিশ সমস্ত দিক খতিয়ে দেখছে।