• হাওড়ার বাঙালবাবু ব্রিজে ১০ ফুট দীর্ঘ ফাটল, চরম আতঙ্ক
    বর্তমান | ০৮ অক্টোবর ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, হাওড়া: মধ্য হাওড়ার সঙ্গে উত্তর হাওড়া, সালকিয়া, বালি, বেলুড়, লিলুয়ার যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম বাঙালবাবুর ব্রিজ। ৯০ বছরের বেশি পুরনো এই ব্রিজ দিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার গাড়ি চলাচল করে। মঙ্গলবার হাওড়া ময়দানের দিক থেকে ব্রিজে ওঠার পর রাস্তার ডানদিকের অংশ ও পাঁচিলে বড়সড় ফাটল দেখা দেয়। যা নিয়ে রীতিমতো আতঙ্ক ছড়িয়েছে। ফাটলের অংশটি আপাতত গার্ডরেল দিয়ে ঘিরে দিয়েছে পুলিশ। ব্রিজের নীচে সাপোর্ট দেওয়ার কাজও শুরু করেছে রেল। কিন্তু রেলের তরফে সবুজ সংকেত না মেলায় বাঙালবাবুর ব্রিজে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ নিয়ে এখনও ধন্ধে রয়েছে পুলিশ।

    ফাঁসিতলা মোড় থেকে গুলমোহর মোড় পর্যন্ত বিস্তৃত এই বাঙালবাবুর ব্রিজে দিনভর ছোট-বড় ভারী যান চলাচলের চাপ থাকে। ফাঁসিতলার পেট্রল পাম্প থেকে ব্রিজে উঠতেই ডান দিকের অংশের রাস্তায় এদিন সকালে প্রায় ৮ থেকে ১০ ফুট লম্বা ফাটল দেখা যায়। ফাটলের কারণে পাশের পাঁচিলটিও খানিকটা হেলে গিয়েছে। বিষয়টি নজরে আসতেই হাওড়া সিটি পুলিশের তরফে তড়িঘড়ি ব্যবস্থা নেওয়া হয়। ব্রিজের ওই অংশ দিয়ে যাতে যান চলাচল না করতে পারে, সেজন্য গার্ডরেল দিয়ে ঘিরে দেওয়া হয়। এদিন সকালে ঘটনাস্থলে যান হাওড়া পুরসভার মুখ্য প্রশাসক ডাঃ সুজয় চক্রবর্তী। তিনি বলেন, ‘ব্রিজ রক্ষণাবেক্ষণের বিষয়ে রেল চূড়ান্ত উদাসীন। ব্রিজে বিপজ্জনকভাবে ফাটল ধরেছে। যে কোনও সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। এই ব্রিজে যাতে যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা যায়, সেজন্য রেল ও হাওড়া সিটি পুলিশকে জানিয়েছি।’ রেল ও পূর্তদপ্তরের ইঞ্জিনিয়াররা এদিন দীর্ঘক্ষণ ব্রিজের ফাটল পর্যবেক্ষণ করেন। পাশাপাশি ব্রিজের নীচের অংশে সাপোর্ট দেওয়ার কাজও শুরু করে রেল। যদিও রেলের দাবি, ব্রিজের উপরে রাস্তার যে অংশে ফাটল ধরেছে, তার রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব পূর্তদপ্তরের। যদিও ফাটল চওড়া হয়ে বড়সড় বিপদ ঘটার আপাতত কোনও সম্ভাবনা নেই বলেই জানিয়েছে রেল।

    হাওড়া সিটি পুলিশের এক পদস্থ কর্তা বলেন,‘মঙ্গলবার বিকেল পর্যন্ত ব্রিজে যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ নিয়ে রেলের তরফে কিছু জানানো হয়নি। কিন্তু ফাটলের কাছ দিয়ে যাতে গাড়ি চলাচল না করে, সেজন্য ব্রিজে পর্যাপ্ত পুলিশকর্মী রাখা হয়েছে’। এই ব্রিজ দিয়ে মধ্য হাওড়ার দিক থেকে আসা অগুনতি বাস ও গাড়ি হাওড়া স্টেশনে আসে। এছাড়াও উত্তর হাওড়ার একাধিক রুটের অসংখ্য অটো চলাচল করে। ব্রিজে ফাটলের ঘটনায় আতঙ্কিত অটো যাত্রীরা। নিত্যযাত্রী অজিতেশ শর্মা, দীপক মিস্ত্রি, পিয়াসী মল্লিক বলেন, ‘প্রতিদিন দু’বেলা এই রুটেই যাতায়াত করতে হয়। এখন তো প্রাণ হাতে করে চলতে হবে। এদিকে, ব্রিজ বন্ধ করলে যানজট আরও বাড়বে।’ হাওড়া স্টেশন ছেড়ে বেরতে থাকা ট্রেনগুলি পর পর দু’টি ওভারব্রিজের নীচে দিয়ে যায়। প্রথমটি বঙ্কিম সেতু, পরেরটি বাঙালবাবুর ব্রিজ বা চাঁদমারি ব্রিজ। ১৯৩৩ সালে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির আমলে তৈরি এই ব্রিজের উপর চাপ কমাতে পাশেই বিদ্যাসাগর সেতুর ধাঁচে চার লেনের কেবল স্টেট আধুনিক ওভারব্রিজ তৈরি করছে রেল।
  • Link to this news (বর্তমান)