• সুপ্রিম কোর্ট
    আজকাল | ০৮ অক্টোবর ২০২৫
  • আজকাল ওয়েবডেস্ক: বিহার বিধানসভা ভোটের দিনক্ষণ ঘোষণা হয়েছে সোমবার। এর ২৪ ঘন্টার মধ্যেই, মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্ট জানাল যে-  নির্বাচনমুখী বিহারে বিশেষ নিবিড় সংশোধন (এসআইআর) পরিচালনা নির্বাচন কমিশনের বিশেষাধিকার এবং একেবারেই তাদের এক্তিয়ারভুক্ত ক্ষমতা। ফলে এ ব্যাপারে শীর্ষ আদালত কোনও নির্দেশ জারি করলে তা হস্তক্ষেপ ববলে বিবেচিত হবে।

    মঙ্গলবার মামলার শুনানিতে ডিভিশন বিচারপতি সূর্য কান্ত এবং জয়মাল্য বাগচীর ডিভিশন বেঞ্চ, নির্বাচন কমিশনের কাছে জানতে চায়, অন্য রাজ্যগুলিতে কবে বিশেষ ভোটার তালিকা শুদ্ধকরণের কাজ শুরু হবে? এছাড়া বিহারে খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশের পর ৩.৬৬ লক্ষ ভোটারের নাম বাদ গিয়েছে এবং ২১ লক্ষ ভোটারের নাম সংযোজন হয়েছে। এ  সম্পর্কে বৃহস্পতিবার (৯ অক্টোবর) তথ্য সংগ্রহ করে একটি নোট প্রস্তুত করতেও সুপ্রিম কোর্ট, কমিশনকে নির্দেশ দিয়েছে।

    বিচারপতি সূর্য কান্ত এবং জয়মাল্য বাগচীর ডিভিশন বেঞ্চ বলেছে, "সব কাজে আমাদের হস্তক্ষেপের দাবি কেন? এসআইআর পরিচালনা করা নির্বাচন কমিশনের বিশেষাধিকার এবং একেবারেই তাদের এক্তিয়ারভুক্ত। আমরা যদি এর মধ্যে আসি, তাহলে তা হস্তক্ষেপ করা হবে বলে বিবেচিত হবে।"  

    এসআইআর প্রক্রিয়াকে চ্যালেঞ্জ করে আবেদনকারীদের আইনজীবী কংগ্রেস নেতা এবং সিনিয়র আইনজীবী অভিষেক মনু সিংভির দাবি, ভোটার তালিকা থেকে যাঁদের নাম মুছে ফেলা হয়েছে তাঁদের বেশিরভাগকেই কোনওভাবে অবহিত করা হয়নি। সিংভি বলেন, "নাম মুছে ফেলা হয়েছে এমন ৩.৬৬ লক্ষ লোকের মধ্যে কেউই কোনও নোটিশ পাননি। কাউকে কোনও কারণ জানানো হয়নি। আপিলের বিধান থাকলেও কোনও তথ্য না থাকায় আপিলের প্রশ্নই ওঠে না।"  

    আবেদনকারীদের মধ্যে অন্যতম অ্যাসোসিয়েশন ফর ডেমোক্রেটিক রিফর্মস। এই সংগঠনের পক্ষে উপস্থিত সিনিয়র আইনজীবী প্রশান্ত ভূষণ ৪৭ লক্ষ ভোটারের নাম বাদ দেওয়ার কথা তুলে ধরেন। তাঁর কথায়, "চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশের পর, আমরা দেখেছি ৪৭ লক্ষ ভোটারের নাম বাদ পড়েছে চূড়ান্ত তালিকা থেকে। ২০০৩ সালের এসআইআর-এর নির্দেশিকা এবং ২০১৬ সালের আরেকটি নির্দেশিকা পেয়েছি যেখানে ভুয়ো ভোটারদের কীভাবে অপসারণ করতে হবে তা ব্যাখ্যা করা হয়েছে। এসআইআর সমস্যা সমাধানের পরিবর্তে সমস্যাগুলিকে আরও বাড়িয়ে তুলেছে। পরিস্থিতি জটিল করেছে। স্বচ্ছতার সম্পূর্ণ অভাব রয়েছে। আদালতের নির্দেশের পরেই ৬৫ লাখ বাদ পড়া ভোটারদের তথ্য সরবরাহ করা হয়েছিল। কমিশন নির্দেশিকা অনুসারে তথ্য আপলোড করেনি।"   জবাবে নির্বাচন কমিশনের পক্ষে উপস্থিত আইনজীবী রাকেশ দ্বিবেদী দাবি করেন, যাদের নাম বাদ দেওয়া হয়েছে তাদের এ বিষয়ে অবহিত করা হয়েছে। তিনি বলেন, খসড়া তালিকা এবং চূড়ান্ত তালিকার কপি রাজনৈতিক দলগুলিকে দেওয়া হয়েছে।

    ৩০ সেপ্টেম্বর, নির্বাচন কমিশন বিহারে চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করেছিল। যেখানে এসআইআর-এর পরে প্রায় ৭.৪২ কোটি ভোটারের নাম ভোটার তালিকায় উল্লেখ করা হয়েছে। মোট ৬৮ লক্ষ নাম ভোটার তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। এরপর তা সংশোধন করে ২১ লক্ষ ভোটারের নাম আবার তালিকায় যুক্ত করা হয়।

    শুনানির সময়, সুপ্রিম কোর্ট আবেদনকারীদের এমন কিছু ব্যক্তির তালিকা দিতে বলেছে যারা দাবি করেছেন যে, তাদের নাম ভোটার তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে এবং তারা আপিল করতে পারবেন না। বেঞ্চ বলেছে, "আমাদের বুঝতে হবে কীভাবে এই ব্যবস্থা কাজ করে। তারা সদর দপ্তর থেকে তথ্য দেবে না। তাদের মাঠ পর্যায়ে যাচাই করতে হবে। প্রশ্ন হল, আমরা কার জন্য এটা করছি? কেন মানুষ এগিয়ে আসছে না? আমাদের কাছে অন্তত ১০০ জনের একটি তালিকা থাকা উচিত যাদের এই অভিযোগ আছে এবং তাঁরা বলছেন যে আপিল করতে চান, কিন্তু তাদের কোনও আদেশ দেওয়া হয়নি।" বেঞ্চ বলেছে।

    আগামী বৃহস্পতিবার (৯ অক্টোবর, ২০২৫) এই মামলার পরবর্তী শুনানি। 

    নির্বাচন কমিশন সোমবার বিহার বিধানসভা নির্বাচনের জন্য দুই ধাপের ভোটগ্রহণ ঘোষণা করার পর এটি ছিল এসআইআর ইস্যুতে সুপ্রিম কোর্টের প্রথম শুনানি। বিহারে ৬ এবং ১১ নভেম্বর ভোটগ্রহণ হবে, ১৪ নভেম্বর ফলাফল ঘোষণা।
  • Link to this news (আজকাল)