• হিমাচল প্রদেশের বিলাসপুরে ভুমিধসে মৃত অন্তত ১৮, চলছে উদ্ধারকাজ...
    আজকাল | ০৮ অক্টোবর ২০২৫
  • আজকাল ওয়েবডেস্ক: হিমাচল প্রদেশের বিলাসপুর জেলার ঝানডুটা উপবিভাগের বালুঘাট এলাকায় মঙ্গলবার ভয়াবহ ভূমিধসের ঘটনায় অন্তত ১৮ জনের মৃত্যু হয়েছে এবং আরও কয়েকজন ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে পড়েছেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। স্থানীয় প্রশাসন ও উদ্ধারকারী দল ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধারকাজ শুরু করেছে।

    প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী, একটি বেসরকারি যাত্রীবাহী বাস ওই সময়ে পাহাড়ি রাস্তা দিয়ে যাচ্ছিল, যখন আকস্মিকভাবে পাহাড় ধসে পড়ে। বিশালাকার পাথর, কাদা ও ধ্বংসাবশেষ বাসটির উপর আছড়ে পড়ে, ফলে মুহূর্তের মধ্যে সেটি চাপা পড়ে যায়। ঘটনাস্থলটি পাহাড়ি ও দুর্গম হওয়ায় উদ্ধারকাজে যথেষ্ট বেগ পেতে হচ্ছে।

    স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, ভূমিধসের পরপরই চারদিক ধুলোয় ঢেকে যায় এবং কেউ কিছু বুঝে ওঠার আগেই পুরো এলাকা কাদা ও পাথরে ভরে যায়। কিছু যাত্রী কোনোরকমে জানালা ভেঙে বেরিয়ে আসতে পারলেও অনেকে এখনও নিখোঁজ।

    বিলাসপুর জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, জেলা বিপর্যয় ব্যবস্থাপনা দল, ফায়ার সার্ভিস, পুলিশ ও রাজ্য বিপর্যয় প্রতিক্রিয়া বাহিনী যৌথভাবে উদ্ধারকাজে নেমেছে। খননযন্ত্র, ক্রেন ও হেলিকপ্টার মোতায়েন করা হয়েছে। দুর্ঘটনাস্থলে প্রবল বৃষ্টির কারণে কাদা জমে থাকায় উদ্ধারকাজে বাধা সৃষ্টি হচ্ছে।প্রশাসনের এক কর্মকর্তা বলেন, “আমাদের অগ্রাধিকার এখন জীবিতদের উদ্ধার করা। ধ্বংসস্তূপের নিচে কতজন আটকা পড়েছেন, তা নিশ্চিতভাবে বলা যাচ্ছে না, তবে সংখ্যা অনেক হতে পারে।”

    হিমাচল প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী সুখবিন্দর সিং সুক্কু শিমলা থেকে সরাসরি পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছেন। তিনি প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়েছেন যেন উদ্ধারকাজে সর্বোচ্চ সম্পদ ও জনবল ব্যবহার করা হয়। মুখ্যমন্ত্রী টুইট করে জানান, “বালুঘাটের দুর্ঘটনাটি অত্যন্ত মর্মান্তিক। উদ্ধার ও ত্রাণ কার্যক্রম দ্রুত সম্পন্ন করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আহতদের দ্রুত হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।”

    তিনি আরও বলেন, আহতদের চিকিৎসা ও পুনর্বাসনের জন্য রাজ্য সরকার সম্পূর্ণ দায়িত্ব নেবে। জেলা প্রশাসনকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে হাসপাতালগুলিতে বিশেষ মেডিকেল টিম গঠন করতে এবং আহতদের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করতে।

    সরকারি সূত্রে জানা গেছে, রাজ্য বিপর্যয় তহবিল থেকে জরুরি ভিত্তিতে ২৫ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে প্রাথমিক ত্রাণ ও উদ্ধার কার্যক্রমের জন্য। নিহতদের পরিবারকে প্রতিজন ৫ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ এবং আহতদের চিকিৎসা খরচের সম্পূর্ণ দায়ভার সরকার নেবে।

    এছাড়া ন্যাশনাল ডিজাস্টার রেসপন্স ফোর্স (NDRF)-এর একটি বিশেষ দলও বিলাসপুরের উদ্দেশে রওনা হয়েছে, যাতে বড় পাথর সরানো ও আটকে পড়া যাত্রীদের বের করার কাজ দ্রুত সম্পন্ন হয়।

    হিমাচল প্রদেশে এই সিজনে ইতিমধ্যে একাধিক ভূমিধস ও রাস্তা ধসের ঘটনা ঘটেছে। বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন, অতিবৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢাল কেটে রাস্তা নির্মাণের ফলে মাটি দুর্বল হয়ে পড়ছে, যা এই ধরনের বিপর্যয়ের মূল কারণ। প্রশাসন নাগরিকদের পাহাড়ি রাস্তায় ভ্রমণের সময় সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছে এবং ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় যাতায়াত আপাতত বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে।
  • Link to this news (আজকাল)