• বর্ধমান পুরসভার চেক ব্যবহার করে মহারাষ্ট্রের একটি ব্যাঙ্ক থেকে ৪৮ লক্ষ টাকা লোপাট! গ্রেফতার কর্মী
    আনন্দবাজার | ০৮ অক্টোবর ২০২৫
  • বর্ধমান পুরসভার চেক ব্যবহার করে একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের মহারাষ্ট্রের নাগপুরের হিঙ্গনঘাট শাখা থেকে প্রায় ৪৮ লক্ষ টাকা হাতানোর অভিযোগ উঠেছে। ওই ব্যাঙ্কের শাখার অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করেছিল মহারাষ্ট্রের আর্থিক অপরাধ দমন শাখা। প্রতারণার অভিযোগে বর্ধমান পুরসভারই অ্যাকাউনট্যান্টকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ধৃতের নাম সমীরকুমার মুখোপাধ্যায়। সোমবার রাতে বর্ধমান থানার সাহায্য নিয়ে মহারাষ্ট্রের আর্থিক অপরাধ দমন শাখা তাঁকে গ্রেফতার করে। মঙ্গলবার ধৃতকে বর্ধমান সিজেএম আদালতে হাজির করানো হয়। যদিও পুরসভা এই গ্রেফতারির বিরোধিতা করেছে।

    বর্ধমান শহরের ইছলাবাদ এলাকায় ধৃতের বাড়ি। তদন্তের জন্য ধৃতকে মহারাষ্ট্রে নিয়ে যাওয়া প্রয়োজন বলে আদালতে জানিয়েছে তদন্তকারী আর্থিক অপরাধ দমন শাখা। মহারাষ্ট্রে নিয়ে যাওয়ার জন্য তিন দিনের ট্রানজিট রিমান্ডের আবেদন জানান আর্থিক অপরাধ দমন শাখার তদন্তকারী অফিসার। সেই আবেদন মঞ্জুর করেছেন বিচারক।

    পুরসভার চেয়ারম্যান পরেশচন্দ্র সরকার আদালত চত্বরে বলেন, ‘‘ব্যাঙ্কের গাফিলতিতেই এই ঘটনা হয়েছে। বিষয়টি জানতে পেরে আমরা বর্ধমান থানাকে জানাই। তারই মধ্যে মহারাষ্ট্র পুলিশ তদন্ত শুরু করে দেয়। অ্যাকাউন্ট্যান্ট মহারাষ্ট্রে গিয়ে কী ভাবে নকল চেক তৈরি করে টাকা তোলা হয়েছিল, তার প্রমাণ দিয়ে আসেন। তাঁর বিরুদ্ধে মামলা করা ঠিক নয়।’’

    আর্থিক অপরাধ দমন শাখা সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০২৪ সালের ৬ অগস্ট পুরসভার চেক ব্যবহার করে একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের অ্যাকাউন্ট থেকে ৪৮ লক্ষ ২১ হাজার টাকা তুলে নেওয়া হয়। তার পর আরও একটি চেকে টাকা তোলা হয়। দিন কয়েক পরে ৯৭ লক্ষ ৫২ হাজার টাকার একটি চেক জমা পড়ে। ব্যাঙ্ক থেকে পুরসভার কাছে চেক জমা পড়ার বিষয়ে জানতে চাওয়া হয়। পুরসভার দাবি, যে সব নম্বরের চেক ব্যবহার করে টাকা তোলা হয়েছে বা তোলার জন্য জমা পড়েছে, সেই সবক’টি চেকই পুরসভার হেফাজতে রয়েছে। চেক গ্রহণ করে পুরসভার অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা তোলা হয়েছে বলে পুরসভার দাবি। পুরসভা ব্যাঙ্কের কাছে টাকা ফেরতের জন্য চিঠি দেয়। ব্যাঙ্ক পুরসভাকে টাকা ফিরিয়ে দেয়।

    ব্যাঙ্কের তরফে মণীশ উত্তম জিগরল হিঙ্গনঘাট থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। তার ভিত্তিতে প্রতারণা ও অর্থ আত্মসাতের ধারায় মামলা রুজু করে মহারাষ্ট্রের থানা। তদন্তে নেমে পুলিশ বিনোদ নামদেব রাও মাতে, তুষার মূর্তিধর হারনে, ভূষণ মাহেন্দ্র পান্দ্রে ও অনুপ অজিত কুমার কোঠারিকে গ্রেফতার করে। ঘটনায় অভিযুক্ত শ্রাবন আন্না এখনও ধরা পড়েননি।

    জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আর্থিক অপরাধ দমন শাখা বর্ধমান পুরসভার অ্যাকাউন্ট্যান্টকে ডেকে পাঠায়। ঘটনায় একটি মোবাইল নম্বরের হদিস পায় তদন্তকারী সংস্থা। সেই নম্বরটি অভিযুক্ত অ্যাকাউন্ট্যান্টের। যদিও অভিযুক্ত তদন্তকারী সংস্থার কাছে দাবি করেন, কেউ তাঁর সিম কার্ড জালিয়াতি করে ব্যবহার করেছে। যদিও তদন্তকারী সংস্থার দাবি, ঘটনার সময় মোবাইলটি অভিযুক্তের কাছেই ছিল এবং সে-ই মোবাইলটি ব্যবহার করেছে।
  • Link to this news (আনন্দবাজার)