• ৫ কিলোমিটার যেতে লাগছে ২৪ ঘণ্টা! ৪ দিন ধরে দিল্লি-কলকাতা হাইওয়ের দীর্ঘ যানজটে আটকে শতাধিক ট্রাক
    আজকাল | ০৮ অক্টোবর ২০২৫
  • আজকাল ওয়েবডেস্ক: চারদিন পার। দিল্লি-কলকাতা হাইওয়েতে ভয়াবহ যানজট। এখনও পর্যন্ত ভোগান্তি থেকে রেহাই পায়নি শতাধিক ট্রাক। ঘণ্টার পর ঘণ্টা সেই যানজটেই থমকে রয়েছেন ট্রাক চালকরা। কেউ কেউ অসুস্থ হয়েও পড়েছেন। জল ও খাবারের অভাবে চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন তাঁরা। 

    সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, ঘটনাটি ঘটেছে বিহারে। এই রাজ্যের রোহতাস জেলায় গত কয়েকদিন ধরেই প্রবল বৃষ্টি হচ্ছে। তুমুল বৃষ্টির জেরেই এই জেলার বিস্তীর্ণ এলাকা জলমগ্ন। জল জমেছে জাতীয় সড়ক, হাইওয়েতেও। রাস্তার জায়গায় জায়গায় গর্ত। প্রবল বৃষ্টির কারণেই মূলত যানজটের সৃষ্টি হয়। কিন্তু চারদিন পার করেও সেই সমস্যা এখনও মেটেনি। গত শুক্রবার ভারী বৃষ্টির কারণে ১৯ নম্বর জাতীয় সড়ক প্লাবিত হয়। 

    জানা গেছে, এই হাইওয়েতে কয়েক কিলোমিটার পার করতেই ঘণ্টা খানেক সময় লাগছে ট্রাক চালকদের। রোহতাস থেকে ৬৫ কিলোমিটার দূরে ঔরঙ্গবাদ পর্যন্ত যানজট রয়েছে। দুর্ভোগের কথা জানা সত্ত্বেও স্থানীয় প্রশাসন, ন্যাশনাল হাইওয়ে অথোরিটি অফ ইন্ডিয়ার তরফেও কোনও সাহায্যের আশ্বাস দেওয়া হয়নি। ট্রাক চালকদের অভিযোগ, পাঁচ কিলোমিটার যেতেই ২৪ ঘণ্টা সময় লাগছে! 

    এক ট্রাক চালকের অভিযোগ, 'গত ৩০ ঘণ্টায় আমরা মাত্র সাত কিলোমিটার পথ অতিক্রম করতে পেরেছি। টোল, ট্যাক্স দেওয়ার পরেও যানজটের সমস্যা থেকে রেহাই মিলছে না।' আরেক ট্রাক চালক জানিয়েছেন, 'গত তিনদিন ধরেই এই হাইওয়েতে আটকে আছি। খাবার, জলের অভাবে ধুঁকছেন আমার মতোই অনেকে। তিন, চার কিলোমিটার যেতেই কয়েক ঘণ্টা সময় লাগছে।' অনেকেরই আশঙ্কা, যেসব ট্রাকে খাবার সামগ্রী রয়েছে, তা নষ্ট হয়ে যেতে পারে। ফলে ব্যবসায়ীরাও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারেন। 

    প্রসঙ্গত, গত জুলাই মাসে যানজটের জেরে মর্মান্তিক পরিণতি হয়েছিল একাধিক যাত্রীর। এক, দু'ঘণ্টা নয়। টানা ৪০ ঘণ্টা দীর্ঘ যানজটে আটকে হাজার হাজার গাড়ি। চড়া রোদের মধ্যে হাঁসফাঁস দশা সকলেরই। যানজটে আটকেই হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মর্মান্তিক পরিণতি হল তিনজন যাত্রীর। অসুস্থ বহু। এই ঘটনা ঘিরে ন্যাশনাল হাইওয়ে অথোরিটি অফ ইন্ডিয়ার মন্তব্য চমকে দিল সাধারণ মানুষকে। 

    সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, ঘটনাটি ঘটেছে মধ্যপ্রদেশের ইন্দোরে। আগ্রা-মুম্বই জাতীয় সড়কের ইন্দোর-দেওয়াস সেকশনে তীব্র যানজটের সমস্যা রয়েছে। সম্প্রতি সেই সড়কেই ৪০ ঘণ্টা যানজটে আটকে পড়েন অগণিত মানুষ। পুলিশ জানিয়েছে, কমল পাঞ্জাল(৬২), বলরাম প্যাটেল(৫৫), সন্দীপ প্যাটেল(৩২) এই তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। 

    ওই সড়কের একপাশে দীর্ঘদিন ধরেই রাস্তা খোঁড়া রয়েছে। এখনও পর্যন্ত কাজ সম্পূর্ণ শেষ হয়নি। ফলে রাস্তার একপাশ দিয়েই যান চলাচল হয়। তিনজনের মৃত্যুর পর ন্যাশনাল হাইওয়ে অথোরিটি অফ ইন্ডিয়ার বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ দায়ের হয়। মামলাটি ইন্দোর হাইকোর্টেও ওঠে। বিচারপতি বিবেক রাশিয়া ও বিচারপতি বিনোদ কুমার দ্বীবেদী ন্যাশনাল হাইওয়ে অথোরিটি অফ ইন্ডিয়াকে নোটিশ পাঠায়।  

    এরপরই ন্যাশনাল হাইওয়ে অথোরিটি অফ ইন্ডিয়ার তরফে আদালতে জানানো হয়, 'সকাল সকাল কাজ না থাকলেও কেন সকলে বাড়ি থেকে বের হন!' কাঁধ থেকে দায় ঝেড়ে উল্টে জনগণের উপরেই দোষ চাপিয়েছে তারা। যে মন্তব্য ঘিরে সাধারণ মানুষ আরও ক্ষোভ উগরে দেন। হাইকোর্ট জানিয়েছে, ২০২৪ সালে নভেম্বর মাসের মধ্যে ওই সড়কের কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল। পাল্টা হাইওয়ে অথোরিটি জানিয়েছে, স্ট্রাইকের কারণ কর্মীরা কাজ শেষ করতে পারেননি। 
  • Link to this news (আজকাল)