আজকাল ওয়েবডেস্ক: বিহার বিধানসভা নির্বাচনের আগে এনডিএ জোটে অস্বস্তির সুর স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। এনডিএ সহযোগী ও প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী জিতন রাম মাঝি স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, তাঁর দল ‘হিন্দুস্তান আওয়াম মোর্চা’-কে যদি অন্তত ১৫টি আসন না দেওয়া হয়, তবে তারা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে না। তবে, দল এনডিএ শিবিরেই থাকবে বলে তিনি জানিয়েছেন।
বিজেপি সভাপতি জে.পি. নাড্ডা মাঝির সঙ্গে যোগাযোগ করে তাঁকে শান্ত করার চেষ্টা করেছেন বলে সূত্রে জানা গেছে। মাঝি বলেন, “আমরা এনডিএ নেতাদের কাছে প্রার্থনা করছি, কারণ আমরা অপমানিত বোধ করছি। আমরা এমন কিছু আসন চাই যা আমাদের রাজনৈতিকভাবে সম্মান দেয়। যদি আমাদের প্রস্তাবিত আসন সংখ্যা না দেওয়া হয়, আমরা নির্বাচনে লড়ব না। তবে এনডিএ-র পাশে থাকব। আমি মুখ্যমন্ত্রী হতে চাই না, কেবল চাই আমাদের দলকে স্বীকৃতি দেওয়া হোক।”
তিনি আরও বলেন, “আমাদের পার্টির সম্মানই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। আমরা এনডিএ-র অঙ্গ হিসেবে থাকতে চাই, কিন্তু যদি যোগ্য মর্যাদা না পাই, তাহলে নির্বাচনে না লড়াই করাই ভালো।”
এর আগে এক ইঙ্গিতপূর্ণ পোস্টে মাঝি কবি রামধারী সিং দিনকর-এর বিখ্যাত কাব্য ‘রশ্মিরথী’ থেকে একটি পংক্তি উদ্ধৃত করে নিজের দাবি স্পষ্ট করেছিলেন। এনডিএ এখনও পর্যন্ত বিহার নির্বাচনের জন্য আসন বণ্টনের চূড়ান্ত ফর্মুলা ঘোষণা করেনি। সূত্রের খবর অনুযায়ী, বিজেপি এবং জেডিইউ প্রায় ১০০টি আসন করে লড়বে ২৪৩ সদস্যের বিধানসভায়। চিরাগ পাসওয়ানের নেতৃত্বাধীন লোক জনশক্তি পার্টি পেতে পারে ২৪টি আসন, মাঝির হিন্দুস্তান আওয়াম মোর্চা পেতে পারে ১০টি, আর উপেন্দ্র কুশওয়াহার দলকে বরাদ্দ হতে পারে প্রায় ৬টি আসন। তবে, মাঝি ও পাসওয়ান উভয়েই এই প্রস্তাবে অসন্তুষ্ট। চিরাগ পাসওয়ান দাবি করেছেন, তাঁর দল অন্তত ৪০টি আসনে লড়তে চায়।
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, মাঝির এই অবস্থান এনডিএ-র অভ্যন্তরীণ সমীকরণে চাপ তৈরি করেছে। বিহারের দলিত ভোটব্যাঙ্কে তাঁর প্রভাব থাকায় বিজেপি নেতৃত্ব সহজে তাঁকে উপেক্ষা করতে পারছে না। একইসঙ্গে আসন সমঝোতা নিয়ে টানাপোড়েন জোটের ঐক্যে ফাটল ধরাতে পারে বলেও রাজনৈতিক মহলে আলোচনা শুরু হয়েছে। এনডিএ শিবিরে এখন সব নজর রয়েছে বিজেপি নেতৃত্বের সিদ্ধান্তের দিকে। তারা কি মাঝির দাবি মেনে নেবে, নাকি তাকে সন্তুষ্ট না করেই নির্বাচনে ঝাঁপাবে।