আজকাল ওয়েবডেস্ক: অন্য পুরুষের সঙ্গে স্ত্রীর অবৈধ সম্পর্ক রয়েছে , এই সন্দেহে স্ত্রী ও নিজের নাবালক সন্তানকে খুন করে আত্মঘাতী হলেন এক ব্যক্তি। ঘটনাটি ঘটেছে মঙ্গলবার গভীর রাতে মুর্শিদাবাদের বেলডাঙা থানার অন্তর্গত আন্ডিরণ হালদারপাড়ায়। বেলডাঙা থানার পুলিশ ইতিমধ্যে তিনটি দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়েছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃত ব্যক্তিদের নাম সঞ্জিত হালদার (৩৬), মৌসুমী হালদার (২৮), এবং তাঁদের সন্তান রায়হান হালদার (৭)। রায়হান আন্ডিরণ প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রথম শ্রেণীর ছাত্র ছিল।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বেশ কয়েক বছর আগে বেলডাঙা থানার নিশ্চিন্তপুরের বাসিন্দা মৌসুমির সঙ্গে সঞ্জিতের বিয়ে হয়। কিন্তু প্রায়শই ওই দম্পতির মধ্যে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে গন্ডগোল হতো। মঙ্গলবার সন্ধেবেলায় ওই দম্পতির মধ্যে কিছু গন্ডগোল হওয়ার পর রাতে দু'জনে একই ঘরে ঘুমাতে চলে যায়। বুধবার সকালে সঞ্জিতের বাড়ির লোকেরা দেখতে পান ওই ঘরের মধ্যে সিলিং ফ্যান থেকে সঞ্জিতের দেহ ঝুলছে। এরপর সঞ্জিতের মা চিৎকার শুরু করলে পাড়ার লোকেরা ঘরের মধ্যে ঢুকে মৌসুমী এবং রায়হানের রক্তাক্ত দেহ খাটের মধ্যে পড়ে থাকতে দেখেন।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মৌসুমী এবং রায়হানকে প্রথমে হাতুড়ি দিয়ে মাথায় আঘাত করে সঞ্জিত খুন করে। এরপর তাঁদের মৃত্যু নিশ্চিত করার জন্য করাত দিয়ে গলা কেটে দেয়।
এরপর সঞ্জিত নিজেই ঘরের মধ্যে দড়ি দিয়ে ঝুলে আত্মঘাতী হয়। ইতিমধ্যে পুলিশ হত্যার জন্য ব্যবহৃত হাতুড়ি এবং করাত উদ্ধার করেছে।
প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, মৌসুমীর অন্য পুরুষের সঙ্গে অবৈধ সম্পর্ক রয়েছে এই সন্দেহ থেকেই সঞ্জিত স্ত্রীকে খুন করেছে।
মৃত সঞ্জিতের দিদি শিবানী মন্ডল বলেন,"আমার বৌদি এর আগেও দু'একবার অন্য এক পুরুষের সঙ্গে বাড়ি থেকে পালিয়ে গিয়েছিল। গত দু'দিন আগে সে বাড়িতে ফিরে আসে। আজ সকালে ঘরের মধ্যে ভাই ,বৌদি এবং তাঁদের ছেলের দেহ আমরা দেখতে পাই। আমাদের ধারণা ভাই এবং বৌদির মধ্যে কোনও অশান্তির জন্যই এই খুনের ঘটনা ঘটেছে।"
মৃতের প্রতিবেশী মঙ্গল হালদার বলেন,"ওই দম্পতির মধ্যে মাঝেমধ্যেই গন্ডগোল হতো। গতকাল রাতের বেলায় সকলেই তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে পড়েছিল। আজ সকালে আমরা ওই দম্পতির ঘর খোলা দেখতে পাই। রাতে ওই দম্পতির ঘরে কী হয়েছে আমাদের কোনও ধারনা নেই।"
তিনি বলেন, "ওই দম্পতির ঘরে একটি ফ্যান খারাপ থাকায় তা থেকে প্রচন্ড জোরে আওয়াজ হয়। তার ফলে রাতের বেলায় কেউ চিৎকার চেঁচামেচি করলেও আমরা কিছুই শুনতে পাইনি।"