বই-খাতা সব ভেসে গিয়েছে, সামনেই পরীক্ষা! আমি পড়তে চাই, করুণ আর্তি দুর্গত স্কুলছাত্রীর
বর্তমান | ০৮ অক্টোবর ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, জলপাইগুড়ি: সব বই ভেসে গিয়েছে। আমার কি আর বই পড়া হবে না? সামনেই তো পরীক্ষা! কান্নাভেজা গলায় প্রশ্ন ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী অদিতি রায়ের! জলঢাকা নদীর জলোচ্ছ্বাসে ছারখার হয়ে যাওয়া রামসাইয়ের স্কুল পড়ুয়ার করুণ আর্তি, প্রয়োজনে না খেয়ে থাকব। আর কিছু না হোক, আমার বইগুলো জোগাড় করে দিক কেউ। রামসাই এলাকার সুকানদিঘি, বারোহাতি ও সেনপাড়া গ্রামে বিপর্যয়ের জেরে চারদিক লণ্ডভণ্ড। গ্রামের প্রায় ৩২টি বাড়ির অধিকাংশই বন্যার জলে ধ্বংসপ্রায়। দু’দিনের প্রবল বৃষ্টিতে বাড়িঘর, রাস্তা, সেতু তছনছ হয়ে গিয়েছে। ভেঙে পড়েছে অনেক কাঁচা ঘর, কুয়োর জলে কাদা। হারিয়ে গিয়েছে গৃহস্থলির জিনিসপত্র থেকে নথি, বইপত্র।বিপর্যয়ের ছোবল থেকে রেহাই পায়নি অদিতিরাও। বাবা খেতমজুর। মাথা গোঁজার ঠাঁই বলতে ছিল একটা কাঁচা ঘর। জলের তোড়ে তা ধুয়ে মুছে সাফ হয়ে গিয়েছে। রান্নার উনুনটাও নেই। পানবাড়ি ভবানী স্কুলের ছাত্রী অদিতির কাতর আর্তি, “আমার বইখাতা সব তলিয়ে গিয়েছে। কিন্তু আমি পড়াশোনা করতে চাই।” সুকানদিঘি গ্রামে এখন শুধুই হাহাকার। স্বাস্থ্য দফতরের তরফে সেখানে পৌঁছে প্রতিটি বাড়িতে পরিস্রুত পানীয় জল, ওষুধ ও ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করা হচ্ছে। বাসিন্দাদের সতর্ক করা হয়েছে—এসময়ে কোনওভাবেই বাড়ির কুয়ো কিংবা টিউবয়েলের জল খাওয়া যাবে না। স্থানীয়রা বলছেন, “ ভারী বৃষ্টিতে আমাদের পুরো গ্রাম ধ্বংসপ্রায়। বাড়ি, স্কুল, রাস্তা—সবই ক্ষতিগ্রস্ত।” রামসাই এলাকায় জলঢাকা নদী ও মূর্তি নদীর জলের সঙ্গে গ্রামে ঢুকে পড়েছে বালি ও পলি। ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে চাষের জমি। সর্বহারা বাসিন্দাদের আবেদন, টাকা পয়সা চাই না, চাই শুধু ঘর, হারিয়ে যাওয়া জিনিস! এদিকে, কান্নাভেজা গলায় ছাত্রীর আবেদন, পড়াশোনার বই খাতা দিয়ে সাহায্য করলে ভালো হয়। সামনেই পরীক্ষা!