জৈব প্রযুক্তি ও আইন নিয়ে আন্তর্জাতিক সম্মেলন বাঁকুড়ায়, থাকবেন জেনেভা, পোল্যান্ডের অধ্যাপকরা
প্রতিদিন | ০৮ অক্টোবর ২০২৫
গোবিন্দ রায়: জীবপ্রযুক্তি ও আইনের পারস্পরিক সম্পর্ক নিয়ে আন্তর্জাতিক সম্মেলন করতে চলেছে বাঁকুড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগ। আগামী ১৪ ও ১৫ অক্টোবর বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ক্যাম্পাসে অনুষ্ঠিত হবে দু’দিনের আন্তর্জাতিক সম্মেলন। যার মূল আলোচ্য বিষয় — “বায়োটেকনোলজি ও আইনের পরিসর” (The Contours of Biotechnology and Law)।
এই আন্তর্জাতিক সম্মেলনের আহ্বায়ক ও পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের প্রধান অধ্যাপক সুবীরকুমার রায়। দু’দিনের এই সম্মেলনে অংশগ্রহণ করবেন জেনেভা, পোল্যান্ড, বাংলাদেশ ও মরিশাসের বিশিষ্ট অধ্যাপক ও গবেষকরা। যাঁরা তাঁদের গবেষণা ও অভিজ্ঞতার মাধ্যমে জীবপ্রযুক্তি ও আইনের ভবিষ্যৎ সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা করবেন।
সম্মেলনে উপস্থিত থাকবেন ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অফ জুরিডিকাল সায়েন্স (এনইউজেএস), ধর্মশাস্ত্র ন্যাশনাল ল’ ইউনিভার্সিটি, জবলপুর, মধ্যপ্রদেশ (ডিএনএলইউ), কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়, বাঁকুড়া বিশ্ববিদ্যালয়-সহ রাজ্যের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন ও বর্তমান উপাচার্য, প্রখ্যাত অধ্যাপক ও গবেষকরা। এই বিশাল উদ্যোগের প্রধান পৃষ্ঠপোষক হিসেবে বর্তমান উপাচার্য অধ্যাপক রূপকুমার বর্মন মহাশয়ের ভূমিকা প্রশংসনীয় এবং উল্লেখযোগ্য।
জানা গিয়েছে, দেশের উত্তর প্রান্তের জম্মু-কাশ্মীর ও উত্তর প্রদেশ থেকে শুরু করে দক্ষিণের গোয়া, পূর্বের আসাম, ও পশ্চিমের পাঞ্জাব দেশের প্রায় প্রতিটি প্রান্ত থেকেই গবেষকরা তাঁদের প্রবন্ধ পাঠিয়েছেন। এখন পর্যন্ত প্রায় একশোরও বেশি গবেষণাপত্র জমা পড়েছে। এবং দুই শতাধিক গবেষক ও শিক্ষাবিদ এই আন্তর্জাতিক সম্মেলনে অনলাইন ও অফলাইন উভয় মাধ্যমে অংশগ্রহণ করবেন বলে জানা গিয়েছে।
অধ্যাপক সুবীরকুমার রায় বলেন, “মানবজাতি আজ জীবসামঞ্জস্য ও জেনেটিক কোডের মানচিত্রণ, অনুকরণ ও পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে বিজ্ঞানের এক নবযুগে প্রবেশ করেছে। বায়োটেকনোলজি জীবিত অঙ্গ, পণ্য ও মডেল ব্যবহার করে জ্ঞান, প্রযুক্তি ও সেবার নতুন দিগন্ত উন্মোচন করছে। এর প্রভাব কৃষি, খাদ্যপ্রযুক্তি, ঔষধ ও স্বাস্থ্য, জৈববৈচিত্র্য সংরক্ষণ, শক্তি, তথ্যপ্রযুক্তি ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা পর্যন্ত বিস্তৃত।” তিনি আরও বলেন, “তবে, জেনোম সিকোয়েন্সিং, সিন্থেটিক বায়োলজি ও ন্যানোপ্রযুক্তির দ্রুত অগ্রগতি যেমন মানবকল্যাণের বার্তা দেয়, তেমনি জৈবসুরক্ষা ও নৈতিকতার নতুন প্রশ্নও উত্থাপন করে। জেনেটিক পরিবর্তন প্রযুক্তি খাদ্য উৎপাদনে বিপ্লব আনলেও, একই প্রযুক্তি জীবাণু অস্ত্র ও বায়ো-সন্ত্রাসের মতো ভয়াবহ ঝুঁকি সৃষ্টি করতে পারে। যেমন অ্যান্ত্রাক্সের দৃষ্টান্ত। তাই বায়োটেকনোলজির বিকাশকে নৈতিক, আইনি ও নিরাপত্তার কাঠামোর মধ্যে এনে দায়িত্বশীলভাবে পরিচালনা করা আজ সময়ের দাবি।”