রাজ কুমার, আলিপুরদুয়ার: শনিবারের ভারী বৃষ্টি, ভুটান থেকে নদীর মাধ্যমে নেমে আসা জল কার্যত তছনছ করে দিয়েছে উত্তরবঙ্গের একাধিক জেলার অংশ। আলিপুরদুয়ার, জলপাইগুড়ি, কোচবিহারের একটা বড় অংশ ক্ষতিগ্রস্ত। ডুয়ার্সের (Dooars) একাধিক জায়গায় ক্ষয়ক্ষতি ছড়িয়ে রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে পরপর বাতিল হচ্ছে পর্যটনের বুকিং। পর্যটনের ভরা মরশুমে এই পরিস্থিতিতে কার্যত মাথায় আকাশ ভেঙে পড়েছে ব্যবসায়ীদের। প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে কমপক্ষে ৪০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে! এমনই মনে করছেন ব্যবসায়ীরা। এই পরিস্থিতিতে কেন্দ্রীয় সাহায্যের আবেদন জানানো হয়েছে সংগঠনের তরফ থেকে।
শনিবার রাতে নিম্নচাপের জেরে ভয়াবহ বৃষ্টি হয়েছে উত্তরবঙ্গ-সহ নেপাল, ভুটানে। নদীগুলি দিয়ে ভুটান থেকে বয়ে আসা জল, কাদামাটিতে বিপর্যস্ত হয়েছে আলিপুরদুয়ার, জলপাইগুড়িতে। হড়পা বানে ভেঙে, ভেসে গিয়েছে বহু হোটেল, রিসর্ট। জলদাপাড়ার উপর দিয়ে বয়ে গিয়েছে শিলামারা নদী। এই নদীর একদিকে জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যান, অন্যপাড়ে নদী বরাবর সারি সারি হোম স্টে ও রিসোর্ট। ছবির মতো সুন্দর ছিল গোটা এলাকা। পর্যটকদেরও পছন্দের জায়গাও এই এলাকা। শনিবার রাতের বিপর্যয়ের পর রবিবার শিলামারার জল চারদিকে ভাসিয়ে দিয়েছে। ডুয়ার্সের বিস্তীর্ণ এলাকার মধ্যে দিয়ে জলের স্রোত বইতে দেখা গিয়েছে।
জল এখন নেমে গিয়েছে। আর তারপরেই ভয়াবহ চেহারা ধরা পড়েছে এলাকায়। বহু রিসর্ট ভেঙে গিয়েছে। পুরু কাদামাটিতে ভরে গিয়েছে গোটা এলাকা। ওয়াকিবহাল মহল জানাচ্ছে, টি, টিম্বার আর ট্যুরিজম। এই তিন পিলারের উপর দাঁড়িয়ে ডুয়ার্সের অর্থনীতি। এই মুহূর্তে দুই পিলার, টি ও ট্যুরিজম কার্যত মুখ থুবড়ে পড়েছে। চলতি মরশুমে কীভাবে কাটিয়ে ওঠা হবে এই ভয়াবহ পরিস্থিতি? সেই উত্তর খুঁজতে দিশেহারা পর্যটন ব্যবসায়ীরা।
আলিপুরদুয়ার ডিস্ট্রিক ট্যুরিজম আসোসিয়েশনের সম্পাদক মানব বক্সী জানিয়েছেন, প্রবল ক্ষতির মুখে পর্যটন ব্যবসায়ীরা। ভুটান থেকে নেমে আসা জলে ভেসে গিয়েছে বিহু এলাকা। হোটেল, রিসর্টগুলির প্রভূত ক্ষতি হয়েছে। এই অবস্থায় পর্যটকরা বুকিং বাতিল করছেন। পর্যটনের ভরা মরশুমে এটি বড় ধাক্কা। কমপক্ষে ৪০ কোটি টাকার ক্ষতির আশঙ্কা করা হচ্ছে। কেন্দ্রীয় সাহায্য ছাড়া ঘুরে দাঁড়ানো মুশকিল। এমনই মনে করছেন তিনি। কেন্দ্রীয় সরকার সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিক। এমনই দাবি করছেন পর্যটন ব্যবসায়ীরা।