পার্টি অফিসে হামলা, ত্রিপুরার আইন-শৃঙ্খলা নিয়ে প্রশ্ন, আগরতলায় TMC প্রতিনিধি দল
হিন্দুস্তান টাইমস | ০৮ অক্টোবর ২০২৫
উত্তরবঙ্গে বিজেপি সাংসদ খগেন মুর্মু এবং বিধায়ক শঙ্কর ঘোষের ওপর হামলার পরেই ত্রিপুরার রাজধানী আগরতলায় তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য কার্যালয়ে হামলার ঘটনা ঘটেছে। সেই হামলাকে কেন্দ্র করে রাজ্যের রাজনীতি সরগরম। মঙ্গলবার রাতের ওই ঘটনার পরদিনই ত্রিপুরায় পাঠানো হল তৃণমূলের প্রতিনিধি দল। বুধবার সকালেই পাঁচ সদস্যের দল ত্রিপুরার উদ্দেশে রওনা দিয়েছে। দলে রয়েছেন তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ, যাদবপুরের সাংসদ ও যুবনেত্রী সায়নী ঘোষ, জয়নগরের সাংসদ প্রতিমা মণ্ডল, মন্ত্রী বিরবাহা হাঁসদা এবং তৃণমূল ছাত্র পরিষদ নেতা সুদীপ রাহা। এছাড়াও সঙ্গে রয়েছেন সাংসদ সুস্মিতা দেব।
জানা যাচ্ছে, ত্রিপুরা পৌঁছে দল সেখানকার কর্মী-সমর্থকদের সঙ্গে কথা বলবে এবং কিছু দলীয় কর্মসূচি পালন করবে। বিমানবন্দরে ঢোকার আগে কুণাল ঘোষ বলেন, আগরতলায় তৃণমূলের রাজ্য দফতর ভাঙচুর করেছে বিজেপি-আশ্রিত সমাজবিরোধীরা। পুলিশ সেখানে দাঁড়িয়ে দেখছিল। এই পরিস্থিতিতে তাঁদের পাঠানো হচ্ছে। অতীতে আগরতলায় তাঁদের রাস্তায় আটকানো হয়েছিল, তখনও প্রাণে বেঁচে ফিরেছিলেন। গতকাল থেকে সামাজিক মাধ্যমে আবার হুমকি দেওয়া শুরু হয়েছে। প্রতিনিধি দল যাচ্ছে, মৃতদেহও ফিরতে পারে।
কুণাল আরও জানান, নাগরাকাটায় বিজেপি সাংসদ খগেন মুর্মুর উপর আক্রমণের জের ধরে তৃণমূলের কার্যালয়ে হামলা হয়েছে বলে কিছু দাবি উঠেছে। তবে তিনি স্পষ্ট করেছেন, ক্ষোভ প্রকাশে কারও ওপর শারীরিক আক্রমণ সমর্থন করেন না এবং দলের কোনো সদস্য এতে জড়িত নয়।
সায়নী ঘোষ বলেন, ত্রিপুরার তৃণমূল কর্মীদের উদ্দেশ্যে বার্তা হল তাঁরা একা নন। দল তাঁদের পাশে আছে। ত্রিপুরায় আইন-শৃঙ্খলার প্রশ্ন রয়েই যায়। পুলিশের চোখের সামনে পার্টি অফিসে হামলা হয়েছে। অতীতে দলের প্রতিনিধিদের জন্য যে পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হয়েছে, তাতে প্রশাসনিক এবং আইন-শৃঙ্খলার অবস্থা নিয়েই প্রশ্ন ওঠে।
যাদবপুরের সাংসদ উল্লেখ করেন, খগেন মুর্মু ও শঙ্কর ঘোষের উপর হামলার সমর্থন দল করে না। তৃণমূলের কেউ জড়িত নয়। তবে এটি সাধারণ মানুষের ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ। বছরভর তারা বিপদের সময়ও ফোটোশুট করতে যান। এতে জনরোষ হওয়াই স্বাভাবিক। মঙ্গলবার রাতে আগরতলায় তৃণমূলের রাজ্য কার্যালয়ে হামলার অভিযোগ উঠেছে বিজেপির বিরুদ্ধে। মালদা উত্তরের সাংসদ খগেন মুর্মু ও শিলিগুড়ির বিধায়ক শঙ্কর ঘোষের উপর হামলার প্রতিবাদে মঙ্গলবার আগরতলার বনমালীপুর এলাকায় বিজেপি বিক্ষোভ মিছিল ডেকেছিল। তৃণমূলের দাবি, সেই মিছিল থেকেই তাদের অফিসে হামলা চালানো হয়েছে। দল অভিযোগ করেছে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী হামলার নির্দেশ দিয়েছিলেন, তবে বিজেপি তা অস্বীকার করেছে।
ঘটনার সমালোচনা করেছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি সামাজিক মাধ্যমে লিখেছেন, বাংলায় ব্যালট বাক্সে তৃণমূলকে হারাতে পারেনি বিজেপি। যেখানে তারা ক্ষমতায়, সেখানে হিংসা ছড়াচ্ছে। ত্রিপুরার পুলিশের চোখের সামনে তৃণমূলের কার্যালয়ে তারা হামলা করেছে। এটি প্রতিশোধমূলক এবং আইন-শৃঙ্খলাবিহীন মানসিকতার পরিচয়।