• জাতীয় সড়কে পরপর বিস্ফোরণ, বিকট শব্দে কেঁপে উঠল এলাকা, আগুনের লেলিহান শিখা দেখে চক্ষু চড়কগাছ স্থানীয়দের
    আজকাল | ০৯ অক্টোবর ২০২৫
  • আজকাল ওয়েবডেস্ক: জাতীয় সড়কে আবারও ভয়াবহ দুর্ঘটনা। এলপিজি গ্যাস সিলিন্ডার বহনকারী ট্রাকের সঙ্গে ট্যাঙ্কারের সংঘর্ষ। ভয়াবহ বিস্ফোরণে কেঁপে ওঠে গোটা এলাকা। দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন তিনজন। নিখোঁজ রয়েছেন আরও দু'জন। মর্মান্তিক পরিণতি কারও হয়নি। 

    সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, ঘটনাটি ঘটেছে জয়পুর- আজমের জাতীয় সড়কে। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার গভীর রাতে হাইওয়েতে একের পর এক বিস্ফোরণে কেঁপে ওঠে গোটা এলাকা। গতকাল ওই জাতীয় সড়কে এলপিজি সিলিন্ডার বহনকারী একটি ট্রাকে সজোরে ধাক্কা মারে একটি ট্যাঙ্কার। তার জেরেই ভয়াবহ দুর্ঘটনার সাক্ষী থাকলেন স্থানীয় বাসিন্দারা। 

    স্থানীয়রা জানিয়েছেন, এলপিজি গ্যাস সিলিন্ডারের ট্রাকে ট্যাঙ্কার ধাক্কা দিতেই পরপর বিস্ফোরণ ঘটে। মুহূর্তের মধ্যে ট্রাকটিতে দাউদাউ করে আগুন জ্বলতে শুরু করে। নিমেষে কালো ধোঁয়ায় ছেয়ে যায় গোটা এলাকা। আগুনের লেলিহান শিখা কয়েক কিলোমিটার দূর থেকেও দেখা গেছে। দুর্ঘটনার সময় ট্রাকের চালক খাবারের খোঁজে গাড়ি থেকে নেমছিলেন। এই দুর্ঘটনার পর তাঁর আর কোনও খোঁজ মেলেনি। 

    অন্যদিকে দুর্ঘটনার জেরে গুরুতর আহত হয়েছেন ট্যাঙ্কারের চালক সহ আরও দু'জন। রাতেই ঘটনাস্থলে তড়িঘড়ি পৌঁছন রাজস্থানের উপ মুখ্যমন্ত্রী প্রেমচাঁদ বৈরওয়া, বিশাল পুলিশ বাহিনী ও দমকলের একাধিক ইঞ্জিন। দ্রুত ট্যাঙ্কারের চালককে উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। 

    প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশ আধিকারিক জানিয়েছেন, জাতীয় সড়কের ধারে একটি হোটেলের বাইরে এলপিজি সিলিন্ডার বহনকারী ট্রাকটি দাঁড়িয়ে ছিল। ট্রাকের চালক ও সহকারী সেই হোটেলে খেতে গিয়েছিলেন। সেই সময়েই ট্রাকের পিছনে সজোরে ধাক্কা মারে ট্যাঙ্কারটি। এখনও পর্যন্ত ট্রাকের চালকের খোঁজ পাওয়া যায়নি। তবে মৃত্যুর খবর এখনও পর্যন্ত নেই। 

    প্রসঙ্গত, আগস্ট মাসেই এমন এক দুর্ঘটনা ঘটেছিল পাঞ্জাবে। গভীর রাতে ভয়ঙ্কর দুর্ঘটনা পাঞ্জাবে। একটি গাড়ির সঙ্গে সংঘর্ষ হয় এলপিজি গ্যাস সিলিন্ডারের ট্যাঙ্কারের। তারপরেই ওই গ্যাস সিলিন্ডারের ট্যাঙ্কারে বিস্ফোরণ ঘটে। দুর্ঘটনায় এখনও পর্যন্ত সাতজনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন অনেকেই।‌ মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারার আশঙ্কা রয়েছে। 

    সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, শনিবার রাতে দুর্ঘটনাটি ঘটেছে পাঞ্জাবের হোশিয়ারপুর জেলার মান্দিয়ালা আদ্দায়। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, হোশিয়ারপুর- জলন্ধর সড়কে ভয়াবহ দুর্ঘটনাটি ঘটে। ঘটনাস্থলেই সাতজনের মৃত্যু হয়েছে। মৃতদের মধ্যে ট্যাঙ্কারের চালক রয়েছেন। অমৃতসরের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে আরও একজনের মৃত্যু হয়েছে। 

    বিস্ফোরণের জেরে অনেকেই আহত হয়েছেন। গুরুতর আহত অবস্থায় বর্তমানে ১৫ জন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এর মধ্যে কয়েকজনের শারীরিক অবস্থা আশঙ্কাজনক। হোশিয়ারপুরের পুলিশ আধিকারিক মুকেশ কুমার জানিয়েছেন, দুর্ঘটনার ইতিমধ্যেই মামলা রুজু করা হয়েছে। ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ১০৫ এবং ৩২৪(৪) ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে। 

    এই দুর্ঘটনার পরেই পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ভগবন্ত মান শোকপ্রকাশ করেছেন। নিহত ও আহতদের পরিবার পিছু আর্থিক ক্ষতিপূরণ ঘোষণা করেছেন তিনি। মৃতদের পরিবার পিছু দুই লক্ষ টাকা আর্থিক ক্ষতিপূরণ ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। 

    প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশ জানিয়েছে, রাম নগর নেহা লিং রোডের দিকে যাচ্ছিল এলপিজি ট্যাঙ্কারটি। তখনই একটি পিক আপ ভ্যানের সঙ্গে এর সংঘর্ষ হয়। বিস্ফোরণ ঘটে সঙ্গে সঙ্গে। বিস্ফোরণের ফলে গ্রামের বেশ কয়েকটি বাড়ি ও দোকান সম্পূর্ণ ভস্মীভূত হয়ে গিয়েছে। ঝলসে যান বাড়িতে থাকা কয়েকজন সদস্য। এক স্থানীয় ব্যক্তি জানিয়েছেন, 'সেই সময় আমরা ঘরেই ছিলাম। আমি স্নানঘরে ছিলাম। হঠাৎ বিস্ফোরণের শব্দ শুনতে পাই। কয়েক মিনিটের মধ্যে আমাদের বাড়িতেও আগুন ছড়ায়। আমি, আমার স্ত্রী, মেয়ে ও পুত্রবধূ আহত হয়েছি। কোনও মতে নাতিকে কম্বলে মুড়ে রক্ষা করতে পেরেছি।' 

    বিস্ফোরণের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে দ্রুত পৌঁছয় দমকলের একাধিক ইঞ্জিন। আগুন নেভানোর জন্য রাতেই হোশিয়ারপুর, দাশুয়া এবং তালওয়ারা থেকেও দমকলের একাধিক ইঞ্জিন পৌঁছয়। সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে হোশিয়ারপুর-জলন্ধর জাতীয় সড়ক বন্ধ করে দেওয়া হয়। দুর্ঘটনাস্থলের আশেপাশের এক কিলোমিটার এলাকা থেকে লোকজনকে সরিয়ে নিরাপদ স্থানে নিয়ে যাওয়া হয়। 

    পুলিশ আরও জানিয়েছে, বিস্ফোরণের স্থান থেকে ৫০০ মিটার দূরেই গ্যাসের প্ল্যান্ট রয়েছে। কিন্তু আগুন প্ল্যান্ট পর্যন্ত ছড়াতে পারেনি। সেখানে আগুন ছড়ালে আরও ভয়ঙ্কর দুর্ঘটনা ঘটতে পারত। ভয়াবহ এই আগুনে এলাকার কমপক্ষে ১৫টি দোকান এবং ৪টি বাড়ি সম্পূর্ণ পুড়ে ছাই হয়ে গিয়েছে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যান পাঞ্জাবের ক্যাবিনেট মন্ত্রী রবজোত সিং। 

    এদিকে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, ঘটনার পরে ৩০ জন ঝলসে গিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন। অনেকেই প্রাথমিক চিকিৎসার পর ছাড়া পান। যাঁরা বর্তমানে হাসপাতালে ভর্তি আছেন, তাঁদের ৩০ থেকে ৮০ শতাংশ পুড়ে গেছে। মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন অনেকেই। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। ঘটনাটি ঘিরে এখনও উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত চালাচ্ছে পুলিশ। এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখছে তারা। 
  • Link to this news (আজকাল)