• প্রাকৃতিক দুর্যোগে বিধ্বস্ত ডুয়ার্সের বহু রিসর্ট এবং হোটেল, পর্যটনের মরসুমে ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ৪০ কোটি! মাথায় হাত ব্যবসায়ীদের...
    আজকাল | ০৯ অক্টোবর ২০২৫
  • আজকাল ওয়েবডেস্ক: শনিবার ভোররাতে প্রবল বৃষ্টি এবং ভুটানের নদী থেকে নেমে আসা জলে সৃষ্ট হড়পা বানে বিধ্বস্ত উত্তরবঙ্গ। সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত মিরিক। সেখানকার দুধিয়া সেতু ভেঙে গিয়েছে। এছাড়াও আলিপুরদুয়ার, কোচবিহার এবং জলপাইগুড়ির বিস্তীর্ণ অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ক্ষতির মুখে পড়েছে ডুয়ার্সের পর্যটন ব্যবসাও। বন্যা পরিস্থিতির কারণে ডুয়ার্সের বনাঞ্চলে পর্যটকদের প্রবেশ নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। হাতি সাফারির বুকিং বাতিল করেছে বনদপ্তর। বাতিল হচ্ছে একের পর এক বুকিং। এই পরিস্থিতিতে মাথায় হাত ব্যবসায়ীদের। পর্যটনের মরসুমে প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের কারণে কমপক্ষে ৪০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে আশঙ্কা তাঁদের। ব্যবসায়ী সংগঠনের তরফ থেকে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে আবেদন জানানো হয়েছে।

    শনিবার ভোরে কয়েক ঘণ্টার বৃষ্টিতে প্লাবিত হয়ে যায় পাহাড় থেকে সমতল। বন্যার জস এবং কাদামাটিতে ক্ষতিগ্রস্ত বহু হোটেল এবং রিসর্ট। ক্ষতিগ্রস্ত ডুয়ার্সের পর্যটন ব্যবসা।  প্লাবনে জঙ্গল বন্ধ থাকায়, ইতিমধ্যেই প্রচুর পর্যটক ডুয়ার্স থেকে ফিরে গিয়েছেন। অনির্দিষ্টকালের জন্য জঙ্গল বন্ধ হওয়ায় পর্যটক ও পর্যটন ব্যবসায়ী সকলে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। 

    জলদাপাড়ার উপর দিয়ে বয়ে গিয়েছে শিলামারা নদী। এর একদিকে অভয়ারণ্যের এবং অন্যদিকে অনেক হোম স্টে এবং রিসর্ট রয়েছে। ছবির মতো সুন্দর জায়গাটি পর্যটকদের বেশ পছন্দের। কিন্তু রবিবার থেকে সেই জায়গা চেনা যাচ্ছে না। জল নামার পর দেখা যাচ্ছে কাদামাটির ভরে গিয়েছে গোটা এলাকা। ডুয়ার্সের অর্থনীতি মূলত চা, কাঠ এবং পর্যটনের উপর নির্ভরশীল। এই মুহূর্তে চা এবং পর্যটন শিল্প কার্যত মুখ থুবড়ে পড়েছে। ঘুরে দাঁড়ানোর পথ খুঁজে চলেছেন দিশেহারা ব্যবসায়ীরা।

    আলিপুরদুয়ার জেলা ট্যুরিজম আসোসিয়েশনের সম্পাদক মানব বক্সী জানিয়েছেন, প্রবল ক্ষতির মুখে পর্যটন ব্যবসায়ীরা। ভুটান থেকে নেমে আসা জলে হোটেল, রিসর্টগুলির প্রভূত ক্ষতি হয়েছে। পর্যটকরা বুকিং বাতিল করছেন। কমপক্ষে ৪০ কোটি টাকার ক্ষতির আশঙ্কা করা হচ্ছে। কেন্দ্রীয় সাহায্য ছাড়া ঘুরে দাঁড়ানো মুশকিল। 

    সোমবার বন্যা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে ডুয়ার্সের বনাঞ্চলে পর্যটকদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারির নির্দেশ দিয়েছিলেন ভারপ্রাপ্ত বনমন্ত্রী বিরবাহা হাঁসদা। তিনি জানান, পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত এই নির্দেশ বলবৎ থাকবে। সেই নির্দেশের প্রেক্ষিতে জলদাপাড়া টুরিস্ট লজ ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি জহরলাল সাহা বলেন, “তিন মাস বন্ধ থাকার পর পুজোর সময় পর্যটন ব্যবসার মোক্ষম সময়। এই সময় দূরদূরান্ত থেকে পর্যটকরা ডুয়ার্সে প্রকৃতির আনন্দ নিতে ছুটে আসেনি। কিন্তু পুজো শেষ হতে না হতেই উত্তরবঙ্গে প্রাকৃতিক দুর্যোগ দেখা দেয়। প্লাবিত হয়ে যায় জঙ্গল-সহ বিস্তীর্ণ এলাকা। জঙ্গলের ভিতরে জল জমে থাকায় ঘুরতে পারছেন না পর্যটকরা। অনেক পর্যটক নিজেদের বুকিং বাতিল করে ফিরে গিয়েছেন। অনির্দিষ্টকালের জন্য বনাঞ্চল বন্ধ হয়ে যাওয়ায়, আগাম বুকিং বাতিলের জন্য পর্যটকরা ফোন করতে শুরু করে দিয়েছেন। বুকিংয়ের টাকা ফেরত চাইছেন। ফলে পর্যটনের ভরা মরশুমে ক্ষতির মুখে পর্যটন ব্যবসায়ীরা। সরকারকে আবেদন করব, দ্রুত বনাঞ্চলের পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে পর্যটকদের জন্য জঙ্গল খুলে দিক। নইলে ডুয়ার্সের পর্যটন ভেঙে পড়বে।”
  • Link to this news (আজকাল)