বারাসত-হাসনাবাদ শাখা নিয়ে বড় উদ্যোগ রেলের, অবশেষে মিটতে চলেছে দীর্ঘদিনের চাহিদা...
আজকাল | ০৯ অক্টোবর ২০২৫
আজকাল ওয়েবডেস্ক: পরিষেবায় গতি আনতে তৎপর রেল। দীর্ঘ অপেক্ষার পর অবশেষে বারাসত-হাসনাবাদ শাখায় ডাবল লাইনের উদ্যোগ শুরু হল। রেল কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গিয়েছে, খুব শিগগির চাঁপাপুকুর থেকে হাসনাবাদ পর্যন্ত ডবল লাইনের কাজ শুরু হবে।
পূর্ব রেলের বারাসত-হাসনাবাদ শাখার কাঁকরা-মির্জানগর পর্যন্ত ডবল লাইন চালু হয়েছে বেশ কয়েক বছর আগে। ওই শাখার চাঁপাপুকুর থেকে হাসনাবাদ পর্যন্ত এখনও সিঙ্গল লাইন রয়েছে। ফলে রেলের গতি ও যাত্রী স্বাচ্ছন্দ্য নিয়ে বহু অভিযোগ ছিল। বর্তমানে চাঁপাপুকুর থেকে হাসনাবাদ পর্যন্ত সিঙ্গল লাইনে প্রতিদিন ২৩ জোড়া ইএমইউ ট্রেন চলাচল করে। চাঁপাপুকুর থেকে হাসনাবাদ পর্যন্ত ১৬.৫৪ কিলোমিটার পথ সিঙ্গল লাইন থাকায় ট্রেন চলাচলে অনেক দেরি হয়। মাঝে কয়েকটি স্টেশনে দু'টি ট্রেনের মধ্যে ক্রসিং হয়। তখন যে কোনও একটি ট্রেনকে দীর্ঘক্ষণ স্টেশনে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। নিত্যযাত্রীদের পক্ষ থেকে রেল কর্তৃপক্ষের কাছে ওই অংশটি ডবল লাইন করার ব্যাপারে কয়েকবার আবেদনপত্র জমা পড়েছে। অবশেষে রেল কর্তৃপক্ষ বারাসতের চাঁপাপুকুর থেকে হাসনাবাদ পর্যন্ত ডবল লাইন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ইতিমধ্যে প্রকল্পের কাজের অনুমোদনও হয়ে গিয়েছে। খুব শিগগির ডবল লাইনের জন্য লোকেশন সার্ভের কাজ শুরু হবে। সার্ভের কাজ শেষ হওয়ার পরেই ডবল লাইন পাতার কাজ শুরু হবে।নিত্যযাত্রীদের বক্তব্য, ডবল লাইনের কাজ শেষ হয়ে গেলে ট্রেন চলাচলের ক্রসিংজনিত জটিলতা কমবে। চাঁপাপুকুর, ভ্যাবলা হল্ট, বসিরহাট, অনন্তপুর, মধ্যমপুর, নিমদাঁড়িয়া-কোদালিয়া, টাকিরোড ও হাসনাবাদ স্টেশনগুলোর যাত্রীদের সুবিধা হবে। রেলের পরিষেবাও উন্নত হবে।
প্রসঙ্গত, হাসনাবাদ শাখার টাকি রাজ্যের অন্যতম একটি পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত। টাকি থেকে ইছামতী নদী দেখতে সারা বছরই পর্যটকদের ভিড় লেগে থাকে। ইছামতীর বুকে নৌকো করে বাংলাদেশ দেখার টানে পর্যটকরা আসা-যাওয়া করেন। টাকি শহরেও বেশ কিছু দর্শনীয় স্থান রয়েছে। ডবল লাইনের কাজ শেষ হলে পর্যটকদের রেলযাত্রায় স্বাচ্ছন্দ্য বাড়বে বলেই মনে করা হচ্ছে। পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক দীপ্তিময় দত্ত বলেন, 'চাঁপাপুকুর থেকে হাসনাবাদ পর্যন্ত ডবল লাইন করা হবে। তার জন্য খুব দ্রুত লোকেশন সমীক্ষার কাজও শুরু করা হবে। ডবলিং প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে শিয়ালদহ বিভাগে প্রতিদিন লক্ষ লক্ষ যাত্রী উপকৃত হবেন। ট্রেন চলাচল আরও নিরাপদ ও সময় সাশ্রয় হবে।'
পাশাপাশি ইছামতির তীরে গড়ে ওঠা বসিরহাট ভারত-বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক সীমান্ত হিসেবে পরিচিত। বসিরহাট রেলস্টেশন থেকে মাত্র ৬ কিলোমিটার দূরে ঘোজাডাঙা সীমান্ত রয়েছে। তাই রেলপথে বহু পণ্য বসিরহাট রেলস্টেশনে নেমে তা ঘোজাডাঙ্গা সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে রপ্তানি করা হয়। ওয়াকিবহুল মহলের মতে, ডবল লাইনের কাজ শেষ হলে পর্যটকদের রেলযাত্রায় স্বাচ্ছন্দ্য বাড়বে বলেই মনে করা হচ্ছে। পাশাপাশি ভারত বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের ক্ষেত্রেও গতি আসবে বলে মনে করা হচ্ছে।।