• বাংলায় এসআইআর: প্রস্তুতির কাজ আগামী সাত দিনে শেষ করুন, জেলাশাসকদের বলল কমিশন! ‘বেনিয়মে’ শাস্তিবার্তা
    আনন্দবাজার | ০৮ অক্টোবর ২০২৫
  • সাত দিনের মধ্যে সেরে ফেলতে হবে বিশেষ নিবিড় সমীক্ষা (এসআইআর)-সহ যাবতীয় নির্বাচনী প্রস্তুতি। বুধবারের বৈঠকে রাজ্যের জেলাশাসকদের এমনই নির্দেশ দিল জাতীয় নির্বাচন কমিশন। কোন জেলায় এখনও পর্যন্ত কাজ কতটা এগিয়েছে, সরেজমিনে দেখা হল তা-ও।

    আসন্ন নির্বাচনের আগে রাজ্যে সাজ সাজ রব। বিশেষ নিবিড় সমীক্ষা নিয়ে চলছে চাপানউতর। তার আগে নির্বাচনী প্রস্তুতি খতিয়ে দেখতে মঙ্গলবার রাতেই কলকাতায় পৌঁছে গিয়েছে নির্বাচন কমিশনের দল। দলে রয়েছেন উপ-নির্বাচন কমিশনার জ্ঞানেশ ভারতী, কমিশনের তথ্যপ্রযুক্তি শাখার ডিরেক্টর জেনারেল সীমা খন্না, কমিশনের সচিব এসবি যোশী এবং উপ-সচিব অভিনব আগরওয়াল। বুধবার সকালে সব জেলার ডিইও (ডিস্ট্রিক্ট ইলেকশন অফিসার) তথা জেলাশাসকের সঙ্গে ভার্চুয়াল মাধ্যমে বৈঠক করেন জ্ঞানেশ। কমিশন আগেই ইঙ্গিত দিয়েছিল, আর কিছু দিনের মধ্যেই রাজ্যে এসআইআর শুরু হতে পারে। বুধবারের বৈঠকে একপ্রকার স্পষ্ট জানানো হয়েছে সে কথাই।

    উত্তরবঙ্গের সাম্প্রতিক পরিস্থিতির কারণে বুধবারের বৈঠকে উত্তরের বেশির ভাগ জেলার ডিইও-রা উপস্থিত ছিলেন না। বাকিদের নিয়েই হয়েছে বৈঠক। সূত্রের খবর, এখনও পর্যন্ত এ বিষয়ে কোন জেলা কত দূর প্রস্তুতি নিয়েছে, তা বৈঠকে প্রতিটি জেলা ধরে ধরে আলোচনা করা হয়েছে। শুধু তা-ই নয়, প্রতিটি জেলাকে সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছে যে আগামী এক সপ্তাহের মধ্যেই প্রস্তুতি সংক্রান্ত বেশিরভাগ কাজ শেষ করে ফেলতে হবে। অর্থাৎ, এসআইআর-এর যাবতীয় প্রস্তুতি সেরে ফেলতে হবে আগামী ১৫ তারিখের মধ্যে।

    জ্ঞানেশের নির্দেশ, বিজ্ঞপ্তি জারির পর দেরি কিংবা টালবাহানা করা যাবে না। এসআইআরের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের চার-পাঁচ দিনের মধ্যে জেলাভিত্তিক এনুমারেশন ফর্ম ছাপানোর অন্তত ৩০ শতাংশ কাজ সেরে ফেলতে হবে। প্রতিটি জেলায় আলাদা আলাদা করে ফর্ম ছাপাতে হবে। নিজ নিজ জেলায় ছাপানোর পরিকাঠামো রয়েছে কি না, জেলাশাসকদের কাছে সে সংক্রান্ত তথ্যও জানতে চেয়েছেন জ্ঞানেশ। উল্লেখ্য, বিহারের ক্ষেত্রে এক জায়গা থেকেই ফর্ম ছাপিয়ে প্রতিটি জেলায় তা পাঠানো হয়েছিল। তবে বঙ্গের ক্ষেত্রে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যে প্রতিটি জেলায় আলাদা আলাদা করে ছাপাতে হবে এনুমারেশন ফর্ম।

    দিল্লি থেকে প্রত্যেক ভোটার-ফর্মের সফ্‌ট কপি আলাদা আলাদা করে ইআরও-কে পাঠানো হবে। সেগুলি পোর্টালে আপলোডের পর ছাপানো হবে। ছাপানোর পর সেই ফর্ম দেওয়া হবে বুথ লেভেল আধিকারিক বা বিএলও-দের হাতে। সব শেষে বাড়ি বাড়ি গিয়ে ফর্ম বিলি করবেন বিএলও-রা। রাজ্যে এখন প্রায় ৭.৬৫ কোটি ভোটার রয়েছেন। তার দ্বিগুণ সংখ্যক ফর্ম ছাপানো হবে। এক জন ভোটারের জন্য ছাপানো হবে দু’টি করে আবেদনপত্র। একটি থাকবে ভোটারের কাছে। অন্যটি বিএলও-রা নিয়ে আসবেন।

    এর পাশাপাশি, বিহারের প্রসঙ্গ তুলে আধিকারিকদের বার বার বলা হয়েছে, গোটা পদ্ধতি জানা সত্ত্বেও বিহারে যে সব আধিকারিকের বিরুদ্ধে দায়িত্ব পালনে গাফিলতির অভিযোগ উঠেছে, তাঁদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত পদক্ষেপ করা হয়েছে। বঙ্গেও যদি কোনও আধিকারিকের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ ওঠে, তা হলে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ ছাড়া, বিপর্যস্ত উত্তরবঙ্গের পরিস্থিতির কারণে সেখানকার জেলাশাসক ও অন্য নির্বাচনী আধিকারিকদের বুধবারের বৈঠক থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। কারণ, তাঁরা প্রায় সকলেই ত্রাণ-পুনর্বাসনের কাজে ব্যস্ত। উত্তরবঙ্গের জন্য চলতি মাসের শেষে আলাদা করে বৈঠক ডাকতে পারে কমিশন।
  • Link to this news (আনন্দবাজার)