টার্গেট কাশ্মীর, আইএসের সঙ্গে জোট লস্করের! সন্ত্রাসের নয়া ছক পাকিস্তানের
বর্তমান | ০৯ অক্টোবর ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, নয়াদিল্লি: লস্কর-ই-তোইবা এবং জয়েশ-ই-মহম্মদের একাধিক কমান্ডো ইতিমধ্যেই খতম। এই দুই সংগঠনের সুপ্রিম কমান্ডারের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের নজরদারিও তীব্র। ইন্টারপোলের মোস্ট ওয়ান্টেড তালিকায় বহু সন্ত্রাসবাদী নেতা। এবং সম্প্রতি ভারতের অপারেশন সিন্দুরের ধাক্কায় বহু জঙ্গি শিবির ধ্বংস, শতাধিক জঙ্গি ও বেশ কিছু কমান্ডারও নিহত। আর তাই নতুন নতুন জঙ্গি সংগঠনের সন্ধানে ঝাঁপিয়েছে পাকিস্তানের গুপ্তচর সংস্থা আইএসআই। কিন্তু সন্ত্রাসের দীর্ঘ অভিজ্ঞতা এবং নেটওয়ার্ক না থাকলে সফল অপারেশন করা সম্ভব নয়। আর তাই আইএসআই এবার পাকিস্তান, আফগানিস্তানের সীমানা ছাড়িয়ে ইরাক, সিরিয়া থেকে ভারতবিরোধী জেহাদি আনতে কাজে লাগাচ্ছে আইএসকে। লস্করের সঙ্গে আইএসের যোগসূত্র গড়ে তোলার পাশাপাশি ইসলামিক স্টেট খোরাসান প্রভিন্স (আইএসকেপি) সংগঠনকে বালুচিস্তান এবং কাশ্মীর দু’দিকেই অপারেশনে নামানো হচ্ছে।
বালোচ বিদ্রোহীদের দমন করতে ধারাবাহিকভাবে ব্যর্থ ইসলামাবাদ। তাই এবার এবার আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠন আইএসকে দিয়ে তারা নিজেদের দেশের ওই নাগরিকদের শায়েস্তা করতে চায়। আবার ভারতের কাশ্মীরে আইসিস যাতে সন্ত্রাসের নতুন শাখা খুলতে পারে সেই চুক্তিও হয়েছে। আইএসকেপির মুখপত্র ‘ইয়ালগার’-এর সাম্প্রতিক বিবৃতিতে বলা হয়েছে— এবার কাশ্মীর! আইএসকেও সরাসরি নামতে বলেছে আইএসআই। কারণ একটাই, ভারতীয় গোয়েন্দা ও গুপ্তচরদের কাছে কাশ্মীরে লস্কর, জয়েশের অপারেটিভ নেটওয়ার্ক ও স্লিপার সেল সম্পর্কে যত তথ্য আছে, আইএস সম্পর্কে তার সিকিভাগও নেই। বিগত ১২-১৫ বছর ধরে ভারতের বিভিন্ন রাজ্য থেকে জঙ্গি ‘রিক্রুট’ করেছে আইএস। নানাবিধ প্রচার, প্রোপাগান্ডা, তহবিল তৈরি, এমনকী যোদ্ধা নিয়ে যাওয়ার প্রবণতাও দেখিয়েছে। কিন্তু নিজেরা সরাসরি ভারতে হামলার কোনও কৌশল নেয়নি। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক সূত্রে দাবি, আইএসকে এবার অস্ত্র সহায়তার আশ্বাস দিয়েছে পাকিস্তানের আইএসআই। সেই চুক্তির প্রমাণ হিসেবে প্রকাশ করা হয়েছে একটি প্রতীকী ছবি, যেখানে আইএসকেপি কোঅর্ডিনেটর শফিক মেঙ্গল পিস্তল তুলে দিচ্ছে লস্কর কমান্ডার রানা মোহম্মদ আশফাকের হাতে। আইএস এবং আইএসকেপি দু’টি পৃথক কাজ করবে। একদিকে আফগানিস্তানে পাকিস্তানি তালিবানকে আরও বেশি করে নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করবে। অন্যদিকে বালুচিস্তান ও কাশ্মীরে অপারেশন চালাবে। এই অপারেশন হবে বিপরীতমুখী। বালুচিস্তানে যাতে বিদ্রোহীরা আজাদ বালোচের স্বপ্ন পূরণ করতে না পারে। এবং কাশ্মীরে যাতে আজাদ কাশ্মীরের স্লোগান রূপায়িত করা যায়।
কিন্তু আইএস এবং আইএসকেপি তো সন্ত্রাসের নেটওয়ার্ক চালায় বিপুল অর্থের বিনিময়ে। পাকিস্তানের কাছে তাদের দেওয়ার মতো এত অর্থসম্পদ কোথায়? তাহলে কি আইএসকে ভারতে নিয়ে আসার পিছনে কোনও তৃতীয় পক্ষ আছে? পাক অধিকৃত কাশ্মীরে এতদিন ধরে ভারত বিরোধী জেহাদের ট্রেনিং ক্যাম্প ছিল। এবার জানা যাচ্ছে, বালুচিস্তানের কোয়েটায় গড়ে উঠছে অসংখ্য জঙ্গি প্রশিক্ষণ শিবির। এটাও ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি। কারণ, ইন্ডিয়ান মুজাহিদিনের উত্থানের সময় এই কোয়েটায় সিংহভাগ ট্রেনিং ক্যাম্প ছিল। খোদ ইয়াসিন ভাটকল এখানে এসেছে। আবার কোয়েটা প্রজেক্ট শুরু হয়েছে। এবার আরও ভয়ঙ্কর অপারেটিভ। আইএস!