• উপাচার্যহীন গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে দৈনন্দিন কাজকর্ম নিয়ে সমস্যা, শীর্ষ আদালতের রায়ের দিকে তাকিয়ে কর্তৃপক্ষ
    বর্তমান | ০৯ অক্টোবর ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, মালদহ: প্রায় দেড় মাস অতিক্রান্ত। উপাচার্য নেই গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে। দেশের শীর্ষ আদালতে উপাচার্য নিয়োগ মামলার জট খুলতে পারে বলে আশায় শিক্ষা মহল। কিন্তু উপাচার্যহীন বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাবর্তন অনুষ্ঠান দূর অস্ত। বিশ্ববিদ্যালয়ের দৈনন্দিন কাজ সামাল দিতে গিয়েই হিমশিম খেতে হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে। 

    গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত  রেজিস্ট্রার ডঃ বিশ্বজিৎ দাস জানান, উপাচার্য হলেন একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বময় কর্তা। তিনি না থাকাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ কাজকর্ম থমকে থাকে। নিত্যপ্রয়োজনীয় যেটুকু করার সেটুকুই হচ্ছে। কিন্তু উপাচার্যের অনুমোদন ছাড়া অর্থনৈতিক কোনও সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা যায় না। এতদিন গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের দায়িত্ব সামলেছেন অধ্যাপক পবিত্র চট্টোপাধ্যায়। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্বর্তীকালীন উপাচার্য হিসেবে ২০২৪ সালের ২ মে নিযুক্ত হন। পরবর্তীকালে তাঁকে সরিয়ে দেওয়া হয়। 

    এদিকে গৌড়বঙ্গ সহ রাজ্যের বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়োগ মামলায় জট কাটাতে রাজ্য এবং আচার্যের প্রতিনিধিদের দেশের অ্যাটর্নি জেনারেলের বাড়িতে আলোচনায় বসার পরামর্শ দিয়েছে দেশের শীর্ষ আদালত। ১৫ অক্টোবর এই মামলার শুনানি হওয়ার কথা। এই অবস্থায় গত প্রায় দেড় মাস ধরে গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় এক প্রকার উপাচার্যহীন অবস্থায় রয়েছে। 

    গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য না থাকার ফলে একদিকে যেমন এগজিকিউটিভ কাউন্সিলের বৈঠক করা যাচ্ছে না, তার পাশাপাশি উপাচার্যহীন বিশ্ববিদ্যালয়ের ফল প্রকাশের ক্ষেত্রেও সমস্যা তৈরি হচ্ছে।  সম্প্রতি একটি জরুরী বৈঠকে বসেন গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিন, আধিকারিক থেকে শুরু করে এগজিকিউটিভ কাউন্সিলের সদস্যরা। সেই  যৌথ বৈঠকে আলোচনা করে বিশ্ববিদ্যালয়ের বেতন প্রদানের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।  

    এতো গেল বিশ্ববিদ্যালয়ের দৈনন্দিন কাজের সমস্যার কথা। নতুন বছরের শুরুতেই বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিতে এসেছিলেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। সেই সময় তিনি মার্চের মধ্যেই দীর্ঘ আট বছর ধরে আটকে থাকা সমাবর্তন অনুষ্ঠান সম্পন্ন হবে বলে ঘোষণা করেছিলেন। আপাতত সেই সম্ভাবনাও বিশ বাঁও জলে বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। 

    কারণ মার্চের তৃতীয় সপ্তাহে উচ্চশিক্ষা দপ্তর থেকে একটি নির্দেশিকা জারি করে দীর্ঘ আট বছর পর গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন অনুষ্ঠানের অনুমোদন দেওয়া হয়। 

    ২০১৭ সালের পর নানান কারণে সমাবর্তন অনুষ্ঠান করা সম্ভব হয়নি। ২০০৮ সালে গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপিত হওয়ার আট বছর পর ২০১৬ সালে প্রথম সমাবর্তন অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। এক বছর পর ২০১৭ সালে দ্বিতীয় সমাবর্তন অনুষ্ঠানের পর গত আট বছরে এখানে আর সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয়নি। বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্যই যখন নেই তখন আর সমাবর্তন হবে কিভাবে, প্রশ্ন শিক্ষা মহলের। 
  • Link to this news (বর্তমান)