• ‘পিঠে চাপিয়ে নিয়ে এসেছে, ছেলের জন্য প্রাণে বাঁচলাম’
    বর্তমান | ০৯ অক্টোবর ২০২৫
  • সংবাদদাতা, ময়নাগুড়ি: আমি ভাবতেও পারিনি বাঁচব। শুধু ঠাকুর কে ডাকছিলাম। ছেলে পিঠে চাপিয়ে ঘর থেকে বের করে জলঢাকা নদীর চরে  নিয়ে এসেছিল। ছেলের জন্য প্রাণে বাঁচলাম। চোখের সামনে গোটা ঘর জলের তোড়ে ভেসে গেল। সর্বস্রান্ত হয়ে গেলাম। দু চোখে অশ্রু নিয়ে এমন কথাই বললেন বছর ৭০এর বীনবালা রায়। তাঁর বাড়ি ময়নাগুড়ি ব্লকের আমগুড়ি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায়।

    বীনবালা রায় তাঁর একটি ঘরে নাতিকে  নিয়ে থাকতেন। সেই ঘরের পাশে তিন ছেলে প্রদীপ, ললিত ও হরিপদ রায়ের বাড়ি। বর্তমানে এখন সেখানে কিছু নেই। বাড়ির ভাঙাচোরা কিছু সামগ্রী পড়ে রয়েছে। কিভাবে তাঁরা ফের সংসার সামলে উঠবেন সেটা নিয়ে কপালে চিন্তার ভাঁজ তাঁদের।

    হরিপদ রায় বলেন, বাড়িতে ধান ছিল ১৫০ মন। পাট ছিল ৪০ মন। কিছুই বাঁচাতে পড়লাম না। ভোরে দেখি জলঢাকা নদী ফুলতে শুরু করেছে। চারিদিকে চিৎকার। মা ভালোভাবে হাঁটতে পারেন না। দৌড়বেন কিভাবে? কোলে নিয়ে আমাদের ভাইরা সহ পরিবারের লোকজন নদীর পাড়ে উঠে পড়ি। হঠাৎ বাঁধের একটি অংশ ভেঙে যায়। চোখের সামনে আমার , ভাইদের বাড়ি, মায়ের ঘর ভেসে যায়। ছেলে ভিন রাজ্যে কাজ করে। ঘরে টাকা ছিল। সব শেষ। ৪টি ছাগল মারা গিয়েছে। ১০টি হাঁস নেই ।

    বীনবালা রায় বলেন, এমন জল আমি কোনওদিন দেখিনি। আমাদের পাড়া শেষ হয়ে গেল। সরকার থেকে খাবার দিচ্ছে। সেটা খাচ্ছি। একবার তো ভেবেছিলাম আর বাঁচব না। - নিজস্ব চিত্র।
  • Link to this news (বর্তমান)