অবশেষে কুপার্সের বেহাল রাস্তা সংস্কারে বরাদ্দ দেড় কোটি টাকা
বর্তমান | ০৯ অক্টোবর ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, রানাঘাট: দীর্ঘদিন ধরে কুপার্স শহরের রাস্তাঘাটের বেহাল অবস্থার জেরে নাকাল হচ্ছেন শহরবাসী। প্রধান সড়ক থেকে শুরু করে প্রায় প্রতিটি পাড়ার গলিরাস্তা বড় গর্ত ও খানাখন্দে ভরে গিয়েছে। পানীয় জলের পাইপলাইন বসানোর কাজ শেষ হওয়ার পরও জনস্বাস্থ্য ও কারিগরি দপ্তর রাস্তা মেরামতির উদ্যোগ না নেওয়ায় বাসিন্দাদের মধ্যে ক্ষোভ ছড়ায়। বহুবার অভিযোগ জানিয়েও ফল না মেলায় প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তা নিয়েও প্রশ্ন ওঠে। অবশেষে সেই সমস্যা মিটতে চলেছে। কুপার্স শহরের ১২টি ওয়ার্ডে রাস্তা সংস্কারের জন্য প্রথম দফায় দেড় কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে পুর ও নগরোন্নয়ন দপ্তর।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন দপ্তর কুপার্স পুর এলাকার রাস্তাঘাট সংস্কারের জন্য প্রায় দেড় কোটি টাকা বরাদ্দ মঞ্জুর করেছে। ইতিমধ্যেই তার ‘অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ অ্যাপ্রুভাল’ হয়ে গিয়েছে। তা এখন আর্থিক অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে। পুরসভা সূত্রের খবর, পুরো কাজটি তিন ধাপে সম্পন্ন হবে। প্রথম পর্বে শহরের ১ থেকে ৪ নম্বর ওয়ার্ডের গুরুত্বপূর্ণ রাস্তাগুলি সংস্কার করা হবে। এর মধ্যে রয়েছে প্রায় তিন ডজনেরও বেশি ছোট এবং মাঝারি রাস্তা। পরবর্তী দু’ধাপে বাকি আরও ৮টি ওয়ার্ডের রাস্তাগুলিকে এই প্রকল্পের আওতায় আনা হবে। ইতিমধ্যেই কাজের পরিকল্পনা ও টেন্ডার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে বলে পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে।
বিগত কয়েক বছর ধরে শহরের রাস্তাঘাটের ভগ্নদশা নিয়ে চরম ভোগান্তিতে পড়েছিলেন কুপার্সবাসী। বর্ষাকালে রাস্তার খানাখন্দে জল জমে চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়ত। একাধিক দুর্ঘটনা ঘটেছে। এমনকী, খারাপ রাস্তার কারণে নিয়ন্ত্রণহীন লরির ধাক্কায় পথচারীর মৃত্যু হয়েছে।
পুরসভার কার্যনির্বাহী আধিকারিক শুভঙ্কর বিশ্বাস বলেন, শহরজুড়ে ১২টি ওয়ার্ডে বেশ কয়েকশো ছোট ও মাঝারি রাস্তা রয়েছে। সেগুলি পর্যায়ক্রমে সংস্কার করা হবে। আমরা ইতিমধ্যেই প্রস্তুতি শুরু করেছি। ১ থেকে ৪ নম্বর ওয়ার্ডের রাস্তা সংস্কারের জন্য দেড় কোটি টাকা এসেছে। বাকি দু’দফায় আটটি ওয়ার্ডের টাকা আসবে।
কুপার্সের নাগরিকদের একাংশের মতে, শুধু পরিকল্পনা নয়, টেকসই রাস্তা নির্মাণ করাই চ্যালেঞ্জ। শহরের অন্যতম প্রবীণ বাসিন্দা প্রতুলকুমার গোস্বামী বলেন, শুধু রাস্তা তৈরি করলেই হবে না। তা টেকসই হতে হবে। কারণ, কাজ তো আগেও হয়েছিল। দু’-একবারের বৃষ্টিতে সব নষ্ট হয়ে যায়। গুণগত মান ঠিক না থাকলে সুফল মিলবে না। একই দাবি বাসিন্দা আশালতা বর্মনেরও। তিনি বলেন, বরাবর নিম্নমানের কাজ হয়। বরাদ্দ করা টাকায় যেন টেকসই রাস্তা তৈরি করা হয়। না হলে আমরা কোনওভাবেই মেনে নেব না। অবশ্য প্রশাসনিক সূত্রের আশা, এই নতুন প্রকল্প সফলভাবে বাস্তবায়িত হলে কুপার্সের রাস্তাঘাট নিয়ে মানুষের স্বস্তি ফিরবে। নাগরিক পরিষেবার মানও উন্নত হবে। তিন ধাপে পরিকল্পিত এই উদ্যোগ বাস্তবায়িত হলে কুপার্স শহরের দীর্ঘদিনের সমস্যা দূর হবে। নিজস্ব চিত্র