• জুলজিক্যাল পার্কে এবার ডাঙায় বাঘ, জলে কুমির!
    বর্তমান | ০৯ অক্টোবর ২০২৫
  • প্রদীপ্ত দত্ত  ঝাড়গ্ৰাম

    ঝাড়গ্রামের জঙ্গলমহল জুলজিক্যাল পার্কে এবার দেখা যাবে বাঘ ও কুমির। উত্তরবঙ্গের অভয়ারণ্য থেকে দু’টি বাঘ ও কলকাতার আলিপুর চিড়িয়াখানা থেকে তিনটি কুমির আনা হচ্ছে। সেগুলি  রাখার এনক্লোজার তৈরির কাজ চলছে জোরকদমে। 

    ঝাড়গ্রামের ডিএফও উমর ইমাম বলেন, উত্তরবঙ্গ থেকে দু’টি প্রাপ্তবয়স্ক বাঘ ও বাঘিনী এবং কলকাতার আলিপুর চিড়িয়াখানা থেকে তিনটি কুমির আনা হচ্ছে। কুমির রাখার পুকুরটি সংস্কার করা হয়েছে। বাঘ দু’টি যে এনক্লোজারে রাখা হবে তার কাছ চলছে। আমরা আশাবাদী, আগামী ছ’ মাসের মধ্যে বাঘ ও কুমির পর্যটকরা দেখতে পাবেন। ঝাড়গ্রামের জঙ্গলে দেড়শ বছর আগেও বাঘের দেখা মিলত। অনেকদিন আগেই ঝাড়গ্রামের জঙ্গল বাঘশূন্য হয়েছে। তবে ঝাড়গ্রামের একাধিক স্থানের নামে বাঘ যুক্ত রয়েছে। জেলার বাসিন্দারা বাঘুত দেবতার পুজো করেন। জঙ্গলে ঘুরে বেড়ানো বাঘের গল্প লোকগাথায় পরিণত হয়েছে। বেলপাহাড়ীর গভীর জঙ্গলে বাঘের পায়ের ছাপ দেখার খবর পাওয়া যায়। কিন্তু বাঘের দেখা পাওয়া যায়নি। জঙ্গলে বাঘের দেখা না পাওয়া গেলেও জুলজিক্যাল পার্কে এবার বাঘ ও বাঘিনীর দেখা মিলবে। পার্কের নবনির্মিত পুকুরে তিনটে কুমির ছাড়া হবে। ঝাড়গ্ৰাম শহর লাগোয়া ধবনী বিটে ১৯৮০ সালে ‘মিনি জু’  গড়ে তোলা হয়েছিল। পার্কটির সম্প্রসারণ ঘটিয়ে জঙ্গলমহল জুলজিক্যাল পার্ক করা হয়। চিতাবাঘ, হায়না সহ নানা প্রজাতির বন্য পশুপাখি থাকলেও এতদিন বাঘ ছিল না। পার্কটি ২২ হেক্টর জায়গাজুড়ে ছড়িয়ে আছে। জঙ্গলমহল জুলজিক্যাল পার্ক কতৃপক্ষ মনে করছেন বাঘ, বাঘিনী ও তিনটি কুমির পার্কের আকর্ষণ আরও বাড়িয়ে তুলবে। এই বছর দুর্গাপুজোর চারদিনে পার্কে ৭ হাজারের  বেশি পর্যটক এসেছেন। যা গত কয়েক বছরের রেকর্ড ভেঙে দিয়েছে। পার্কের বন্য পশুপাখিদের জন্য এনক্লোজারের ভিতর কৃত্রিম বন্য পরিবেশ গড়ে তোলা হচ্ছে। কৃত্রিম পরিবেশে বন্যপ্রাণীদের জন্মহার বাড়ছে। রাজ্য সরকার ঝাড়গ্রাম টাইগার সাফারি গড়ে তোলার উদ্যোগ নিয়েছে। জঙ্গলে না হলেও ঝাড়গ্রামের মাটিতে দেড়শ বছর পর ফের বাঘেরা পায়ের ছাপ পড়বে। ঝাড়গ্রাম বন বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, ১৮৬৪  থেকে ১৮৬৯ সাল পর্যন্ত ৯টি বাঘ ও ৮টি চিতাবাঘ মারা হয়ছিল। জঙ্গলে ১৮৭৬ সালেও বাঘের দেখা পাওয়ার খবর রয়েছে। ঝাড়গ্রামের জঙ্গলে তারপর থেকে আর বাঘের দেখা পাওয়া যায়নি। জেলার বনভূমি ও বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আন্দোলনের কর্মী শ্যামসুন্দর মাহাত বলেন, বেলপাহাড়ী ও নয়াগ্ৰামের জঙ্গলে হরিণের সংখ্যা বাড়ছে। ঝাড়গ্রামে থাকা হাতিরা জঙ্গলে শাবকের জন্ম দিচ্ছে। জুলজিক্যাল পার্কে বন্য জীবজন্তুদের জন্মহার বাড়ছে। বাঘ আনার খবরে আমরা উচ্ছ্বসিত। জঙ্গলে না হোক, জেলার মাটিতে আবার বাঘ দেখা যাবে। আমাদের কাছে এই খবর অত্যন্ত আনন্দের।-নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)