• কোটি কোটি টাকার কর বকেয়া, ধার করে অস্থায়ী কর্মীদের বোনাস
    বর্তমান | ০৯ অক্টোবর ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, মেদিনীপুর: মেদিনীপুর পুরসভার অস্থায়ী কর্মীদের পুজোর বোনাস দিতে ঋণ করতে হয়েছে কর্তৃপক্ষকে। এতটাই হাঁড়ির হাল পুরসভার ভাঁড়ারের। কারণ কোটি কোটি টাকার সম্পত্তি কর বকেয়া। 

    ঋণের পরিমাণ প্রায় ৬৫ লক্ষ টাকা। ঋণের বোঝা চাপতেই মাথায় হাত উঠেছে পুরসভার আধিকারিকদের। তবে কর না মেটালে কড়া পদক্ষেপের হুঁশিয়ারি দিচ্ছেন পুরকর্মীরা। পুরসভার এক আধিকারিক জানাচ্ছেন, পুরসভার স্থায়ী কর্মীরা নিয়ম মেনেই বোনাস পেয়েছেন। তবে প্রায় ১ হাজার ২০০ জন অস্থায়ী কর্মী রয়েছে। টাকার অভাব থাকায় বাজার থেকে ঋণ করেই বোনাস দেওয়া হয়েছে। উৎসব মিটলেই সেই ঋণের টাকা আগে পরিশোধ করা হবে। একইসঙ্গে মেদিনীপুর পুরসভা এলাকায় বহু দফতর সম্পত্তি করের টাকা দেয়নি। সেই বকেয়া টাকার পরিমাণ প্রায় ১০ কোটি। 

    মেদিনীপুর পুরসভার চেয়ারম্যান সৌমেন খান বলেন, বকেয়া করের পরিমাণ অনেকটাই বেশি। যার ফলে পুরসভা চালাতে খুব সমস্যা হচ্ছে। তাই এলাকার মানুষকে কর মিটিয়ে দেওয়ার বার্তা দেওয়া হয়েছে। বকেয়া কর না মেটালে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এটা সত্যি যে, খুব কষ্ট করে আমাদের বোনাস দিতে হয়েছে। উল্লেখ্য, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিভিন্ন প্রশাসনিক বৈঠকে এসে পুর এলাকা ঢেলে সাজানোর বার্তা দিয়েছেন। সেই মতো রাস্তা সংস্কারের পাশাপাশি পুর এলাকার বাসিন্দারা যাতে সরকারি বিভিন্ন প্রকল্পের সুবিধা পান, সেদিকে নজর দেওয়া হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে পুর এলাকায় বিভিন্ন উন্নয়নমূলক প্রকল্পের কাজ চলছে। জানা গিয়েছে, পুজোর মাসে পুরসভার দরকার ছিল প্রায় সাড়ে চার কোটি টাকা। তার উপর কর বকেয়া থাকায় সমস্যায় পড়তে হয়েছে। শহরের মধ্যে গড়ে ওঠা বহু আবাসন কর ফাঁকি দিচ্ছে। মেদিনীপুর শহরে ৪২ হাজার ৭৭১টি হোল্ডিং রয়েছে। তার মধ্যে সরকারি হোল্ডিং রয়েছে ৩১১টি। কয়েকশো হোল্ডিংয়ের কর এখনও বকেয়া। পুরসভার এক আধিকারিক বলেন, দিন দিন পুরসভার খরচ বাড়ছে। এছাড়াও পুরসভার কাজে গতি বাড়াতে একাধিক কর্মী নিয়োগ করা হয়েছে। যাঁরা রাতদিন পরিশ্রম করে শহরকে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখেন। কিন্তু সেই তুলনায় পুরসভার আয় বাড়েনি। পুরসভার তরফে সম্পত্তি করের জন্য নোটিশ দিয়েও লাভ হচ্ছে না। এমনকী করে ছাড়ও দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু তাতেও লাভের লাভ কিছুই হয়নি। 

    মেদিনীপুর পুর এলাকার বাসিন্দা অতীশ বসু বলেন, পরিষেবা সবাই নিচ্ছে। কিন্তু করের টাকা কেউ দিতে চাইছে না। করের টাকা না দিলে, সেই বাড়িতে পরিষেবা দেওয়া বন্ধ করলেই সমস্যার সমাধান হবে। এছাড়া জন প্রতিনিধিরাও নিষ্ক্রিয়। তাঁদের কোনও ভূমিকা নেই। তাঁরা শুধু রাজনীতি করতেই ব্যস্ত থাকেন।-নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)