• তৃণমূলের কোর কমিটির ডাকে বিজয়া সম্মিলনি, কাজল কেন গরহাজির? বোলপুরে রাজনৈতিক চর্চা
    বর্তমান | ০৯ অক্টোবর ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, বোলপুর: মঙ্গলবার কোর কমিটির বৈঠকের পর বুধবার বিজয়া সম্মিলনিতেও অনুপস্থিত রইলেন জেলা পরিষদের সভাধিপতি কাজল শেখ। এদিন বীরভূম জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের ডাকে বোলপুরের গীতাঞ্জলি সভাগৃহে বিজয়া সম্মিলনি হয়। সেখানে দলের নেতারা উপস্থিত থাকলেও কাজলের অনুপস্থিতির কারণ নিয়ে চর্চা শুরু হয়েছে জেলায়। সংগঠনে ফের অনুব্রত মণ্ডলের ‘আধিপত্য’ বৃদ্ধির কারণেই কোণঠাসা হয়ে একের পর এক কর্মসূচি এড়িয়ে যাচ্ছেন কাজল? এনিয়ে চর্চা অব্যাহত। 

    তৃণমূলের সংগঠনে অনুব্রতর সঙ্গে কাজলের বিরোধ সর্বজনবিদিত। কয়েক বছর আগেও কাজল ও তাঁর অনুগামীরা সংগঠনে কার্যত কোণঠাসা ছিলেন বলে দলীয় সূত্রের দাবি। তবে, অনুব্রত জেলে যাওয়ার পরই সংগঠনে গুরুত্ব বাড়ে কাজলের। জেলা তৃণমূলে কাজল শিবিরের ‘আধিপত্য’ দৃশ্যতই বৃদ্ধি পেয়েছিল। তবে, কয়েক মাস আগেই বীরভূম এসেছিলেন দলের সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে অনুব্রতর সঙ্গে একান্ত বৈঠকও করেন দলনেত্রী। পরে অনুব্রতকে কোর কমিটির আহ্বায়কও করা হয়। ঘটনাচক্রে, তারপর থেকেই জেলার রাজনীতিতে অনুব্রতর প্রাসঙ্গিকতা বাড়তে থাকে। বুধবারের বিজয়া সম্মিলনির মঞ্চেও দিদির প্রিয় কেষ্টই থাকলেন সবার কেন্দ্রবিন্দুতে। কে কোন বিষয়ে বলবেন, সেব্যাপারেও মাঝেমধ্যে নির্দেশ দিতে দেখা গেল তাঁকে। 

    তবে একসময় যেসব নেতা, ব্লক সভাপতি কিংবা বিধায়করা কাজল ‘ঘনিষ্ঠ’ হিসেবে পরিচিত ছিলেন এদিন তাঁদেরকে মঞ্চ আলো করে থাকতে দেখা গেল। কেউ অনুব্রতর সঙ্গে খোশগল্পে মজে রইলেন, কেউ তাঁর গুণগান গাইলেন। দেখা গেল না শুধু কাজলকেই। এব্যাপারে জানতে কল করা হলেও না ধরায় কাজলের কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি। তাঁর ঘনিষ্ঠ এক নেতা অবশ্য বলেন, কোর কমটির সঙ্গে বৈঠক না করেই বোলপুরে বিজয়া সম্মিলনির ডাক দিয়েছিলেন অনুব্রতবাবু। যা মোটেই ভালোভাবে নেননি কাজল। সেকারণেই মঙ্গলবার কোর কমিটির বৈঠক, কিংবা বুধবার বিজয়া সম্মিলনিতে অনুপস্থিত থেকে নিজের অবস্থান বুঝিয়ে দিয়েছেন। এপ্রসঙ্গে নাম না করে কাজলকে খোঁচা মারতে ছাড়েননি মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহ। এদিন তিনি বলেন, লক্ষ্মীপুজোর পর যে বিজয়া সম্মিলনি আমরা করব, সেই সিদ্ধান্ত পুজোর আগেই কোর কমিটির বৈঠকে আমরা নিয়েছিলাম। হয়তো কোনও কোর কমিটির সদস্যের স্মৃতিভ্রম হয়েছে। তাই তিনি বেসরকারিভাবে অনেক কিছু বলছেন। 

    এদিন বিজয়া সম্মিলনিতে অনুব্রত ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন জেলার দুই সাংসদ শতাব্দী রায় এবং অসিত মাল, জেলার দলীয় বিধায়ক, কোর কমিটির চেয়ারম্যান আশিস বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে শুরু করে জেলা ও ব্লকস্তরের নেতারা। এদিনের বিজয়া সম্মিলনি থেকেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ফের মুখ্যমন্ত্রী করার শপথ নেন অনুব্রত। তিনি বলেন, আগামী নির্বাচন খুব টাফ হতে চলেছে। ফের ২০২৬ সালে মমতাকে মুখ্যমন্ত্রী করতে যা করার আমরা করব। বীরভূমের ১১টি বিধানসভা আসনের মধ্যে ১১টিতেই আমরা জিতব। নেতৃত্বকে তাঁর বার্তা, ঝগড়াঝাটি থাকলে আপসে মিটিয়ে নিন। একই কথা শোনা যায় সাংসদ শতাব্দীর গলাতেও। তিনি বলেন, এই নির্বাচন তৃণমূলের ক্ষমতায় থাকার নির্বাচন। আমরা সবাই একত্রিত হয়ে লড়াই করব। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ফের মুখ্যমন্ত্রী করব। 

     গীতাঞ্জলি প্রেক্ষাগৃহে তৃণমূলের বিজয়া সম্মিলনি। -নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)