বিধানসভা ভিত্তিক তিনজনকে বাছাই, প্রার্থী নির্বাচনে প্রস্তুতি তৃণমূলের সহযোগী সংস্থার
বর্তমান | ০৯ অক্টোবর ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, বর্ধমান: সাংগঠনিক রদবদল শেষ পর্যায়ে রয়েছে। এবার প্রার্থী বাছাইয়ের জন্য ময়দানে নেমেছে তৃণমূলের সহযোগী সংস্থা। প্রতিটি বিধানসভা কেন্দ্র ধরে ধরে তারা সমীক্ষা করছে। দলের পদাধিকারীদের পাশাপাশি সাধারণ কর্মী এবং সমর্থকদের সঙ্গেও তারা কথা বলছে। পূর্ব বর্ধমানের ১৬টি বিধানসভা কেন্দ্রই তৃণমূলের দখলে রয়েছে। এখন যাঁরা বিধায়ক রয়েছেন, পাঁচ বছরে তাঁদের ভূমিকা কী ছিল, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এলাকার উন্নয়নে তাঁরা কতটা কাজ করেছেন, বা স্থানীয়দের কাছে ভাবমূর্তি কেমন রয়েছে, সেসব তাঁরা খুঁটিয়ে দেখছেন। সহযোগী সংস্থা অনেক কেন্দ্রেই বিধায়কদের পাশাপাশি আরও দু’জনের নাম জমা করবে।
দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সাংঠনিক স্তরে রদবদল করে তৃণমূল বিচক্ষণতার পরিচয় দিয়েছে। প্রতিটি ব্লকেই সহযোগী সংস্থা সমীক্ষা করে। এক্ষেত্রেও তারা ব্লক সভাপতি হিসেবে তিনজনের নামের তালিকা তৈরি করে। শাখা সংগঠনগুলিতে রদবদলের ক্ষেত্রেও একই পন্থা নেওয়া হয়েছিল। সেই তালিকা নিয়েই তৃণমূলের রাজ্য নেতৃত্ব বৈঠক করে। দলের সিদ্ধান্ত সকলেই মেনে নিতে বাধ্য হন। দলের অনেকেই বলছেন, সাংগঠনিক স্তরে রদবদল হলেও কোথাও বিদ্রোহ হয়নি। এমনটা কোনওদিন হয়নি। এবার রদবদল করার আগে ব্লকের প্রথম সারির নেতাদের সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জোগাড় করেছিল। সেই কারণে কেউ উচ্চবাচ্য করার সাহস দেখায়নি। একইভাবে বিধানসভা নির্বাচনেরও প্রার্থী ঠিক করা হবে। দলীয় সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, জেলার কয়েকজন বিধায়কের বিরুদ্ধে আর্থিক অভিযোগ জমা পড়েছে। কয়েক বছরে তাঁরা ফুলেফেঁপে উঠেছেন। বিভিন্ন অবৈধ কাজে তাঁদের নাম জড়িয়েছে। কোনও কোনও বিধায়কের বিরুদ্ধে দুর্ব্যবহারের অভিযোগ রয়েছে। দলের কর্মীদের সঙ্গেও তাঁরা ভালো আচরণ করেন না। আবার কোনও কোনও বিধায়কের বিরুদ্ধে নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ রয়েছে। উন্নয়ন বা সংগঠন মজবুত করতে তাঁদের সেরকম ভূমিকা দেখা যায়নি। ওই সমস্ত বিধানসভা কেন্দ্রে নতুন মুখ আসার সম্ভাবনা রয়েছে। সহযোগী সংস্থার পাশাপাশি প্রার্থী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে দলীয় রিপোর্টও গুরুত্ব পাবে। দলের নিজস্ব নেটওয়ার্ক কাজে লাগিয়ে নেতাদের সম্পর্কে খোঁজ নেওয়া হচ্ছে। উৎসবের মরশুম শেষ হলেই দল পুরোদমে ময়দানে ঝাঁপিয়ে পড়বে। এখন বিজয়া সম্মিলনির মাধ্যমে জনসংযোগ সারছে। মন্তেশ্বর বিধানসভা কেন্দ্রে শাসক দলের দুই গোষ্ঠীর কোন্দল রয়েছে। মঙ্গলবার সেখানে বিজয়া সম্মিলনির অনুষ্ঠানে সমস্ত জেলার নেতারা উপস্থিত ছিলেন। জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় সভামঞ্চে বলেন, মন্তেশ্বর বিধানসভা থেকে দল অনেক বেশি লিড পাবে। একই দাবি করেন যুব তৃণমূলের সভাপতি রাসবিহারী হালদার। তিনি বলেন, দল এই বিধানসভা কেন্দ্রে সব থেকে বেশি ভোটে লিড পাবে।
তৃণমূল নেতৃত্ব জানিয়েছে, প্রতিটি বিধানসভা কেন্দ্রেই বিজয়া সম্মিলনি করা হচ্ছে। বুথস্তরের নেতা এবং কর্মীরাও কর্মসূচিগুলিতে হাজির থাকছেন। এখন বিধানসভা নির্বাচনের ওয়ার্ম-আপ চলছে। উৎসবের মরশুম কাটলে নেতারা ময়দান কাঁপাতে শুরু করবেন। প্রার্থী যেই হোক না কেন, দলকে জেতাতে সবাইকেই ঐক্যবদ্ধ হতে হবে বলে রাজ্য থেকে ইতিমধ্যেই নির্দেশ পাঠানো হয়েছে।