• উৎসবে সীমান্তে ১০ কোটি টাকার ‘বিস্কুট’ উদ্ধার! কম দামে মিলছে পাচার সোনা, অলংকার তৈরি করে অফার
    বর্তমান | ০৯ অক্টোবর ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, বর্ধমান: বাংলাদেশ থেকে ঘাসের বস্তায় আসছে সোনার বিস্কুট। কখনও কখনও আবার সারের প্যাকেটে সোনা আসছে এপারে। তা পাঠানো হচ্ছে দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জেলায়। অনেকে সেই সোনা দিয়ে অলংকার তৈরি করে অফারে বিক্রি করছে। বিএসএফ সূত্রে জানা গিয়েছে, উৎসবের মরশুমে শুধু দক্ষিণবঙ্গের সীমান্ত এলাকাতেই প্রায় ১০ কোটি টাকার সোনার বিস্কুট উদ্ধার হয়েছে। এছাড়া, দেশের অন্যান্য সীমান্তেও জওয়ানরা বিপুল পরিমাণ সোনার বাট বা বিস্কুট বা঩জেয়াপ্ত করেছেন। তবে সবক্ষেত্রে পাচারকারীদের আটকানো যায়নি। নজর এড়িয়ে বহু চোরাই সোনা এরাজ্যে ঢুকেছে। সৌদি আরব থেকে সোনা বাংলাদেশে আনা হচ্ছে। ক্যারিয়াররা সেখান থেকে তা এরাজ্যে নিয়ে আসছে।

    বিএসএফ সূত্রে জানা গিয়েছে, নদীয়ার সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে ৭ সেপ্টেম্বর পাঁচ কোটি টাকার সোনার বিস্কুট উদ্ধার হয়েছে। সীমান্তরক্ষী বাহিনী ৩৫টি সোনার বিস্কুট উদ্ধার করে। ১০ সেপ্টেম্বর উত্তর ২৪ পরগনার হাকিমপুর এলাকা থেকে ৫৬ লক্ষ টাকার সোনা উদ্ধার করা হয়। ২৪ সেপ্টেম্বর নদীয়া থেকে ফের ৮০ লক্ষ টাকার সোনা উদ্ধার হয়েছে। ২৭ সেপ্টেম্বর বিএসএফ ১ কোটি ২৯ লক্ষ টাকার সোনার বিস্কুট বাজেয়াপ্ত করে। এক আধিকারিক বলেন, একশ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী পাচার হওয়া সোনা কিনছে। অল্প টাকায় সোনা কিনে তারা কম দামে বিক্রি করছে। অনেক নামী প্রতিষ্ঠানও তাদের মতো কম দামে সোনার অলংকার বিক্রি করতে পারে না। মাঝে সোনা পাচার অনেকটাই কমে গিয়েছিল। দাম বেড়ে যাওয়ার পর পাচারকারীরা ফের সক্রিয় হয়ে উঠেছে। মুর্শিদাবাদ বা নদীয়ার বহু মানুষ সীমান্তবর্তী এলাকায় গবাদি পশুর জন্য ঘাস কাটতে যায়। পাচারকারীরা তাদের কাউকে কাউকে ক্যারিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে। বাংলাদেশের ক্যারিয়াররা তাদের কাছে সোনার বিস্কুট পৌঁছে দিচ্ছে। সীমান্তরক্ষী বাহিনীর চোখে ধুলো দিতে ঘাসের বস্তায় সোনা ভরে তারা নিয়ে আসছে। অনেক সময় মহিলাদেরও তারা ক্যারিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে। কয়েকজন ক্যারিয়ারকে তদন্তকারীরা গ্রেফতার করেছেন। কিন্তু চক্রের মাস্টারমাইন্ডদের কাছে তারা পৌঁছতে পারছে না। তারা অন্তরালে থেকে কারবার চালিয়ে যাচ্ছে। হাওয়ালার মাধ্যমে বাংলাদেশে চক্রের মাস্টারমাইন্ডরা টাকা পাঠাচ্ছে বলে গোয়েন্দারা জানতে পেরেছেন। উৎসবের মরশুমে কারবারিরা সক্রিয় হতে পারে। এমন খবর সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কাছে আগেই ছিল। সেইমতো তারা নজরদারি বাড়াতে থাকে। তারপরও বাংলাদেশ থেকে প্রচুর পরিমাণ সোনা এরাজ্যে ঢুকেছে বলে গোয়েন্দারা জানতে পেরেছেন। তবে, পাচারকারীরা ভিনরাজ্যেও সোনার বিস্কুট পাঠিয়েছে।

    আধিকারিকদের দাবি, মুর্শিদাবাদ, মালদহের মতো জেলাগুলিতে বহু এলাকায় কাঁটাতার নেই। বিস্তীর্ণ এলাকা ফাঁকা থাকায় সব জায়গায় বাহিনী নজরদারি চালাতে পারে না। পাচারকারীরা সেই সুযোগকেই কাজে লাগাচ্ছে।
  • Link to this news (বর্তমান)