• ৫০টি ব্রেথ অ্যানালাইজার কিনছে লালবাজার, ৮ সেকেন্ডেরও কম সময়ে ‘অন-স্পট’ রিপোর্ট
    বর্তমান | ০৯ অক্টোবর ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: দুর্গাপুজো থেকে যে উৎসব মরশুমের শুরু, ইংরেজি নববর্ষ পর্যন্ত তার রেশ চলে। বছর শেষের এই তিনমাস কলকাতার রাস্তায় মদ্যপ চালকদের দৌরাত্ম্য 

    চরম আকার নেয়। গতবারেও এমনই ছবি উঠে এসেছে লালবাজারের এ সংক্রান্ত মামলার খতিয়ান থেকে। চলতি বছরে তাই আরও কড়া কলকাতা পুলিশ। ‘সারপ্রাইজড 

    নাকা চেকিং’ বাড়াতে অত্যাধুনিক ৫০টি ব্রেথ অ্যানালাইজার কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে লালবাজার। গাড়ি বা বাইক চালকের শ্বাসে অ্যালকোহলের প্রমাণ মিললে ৮ সেকেন্ডের কম সময়ে পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট পেয়ে যাবেন উর্দিধারীরা। এর জন্য খরচ হচ্ছে মোট ২২ লক্ষ টাকা। 

    পুজোর সময় মদ্যপ চালকদের দাপট রুখতে কড়া ভূমিকা নিয়েছে লালবাজারের ট্রাফিক বিভাগ। শহরের ২৬টি ট্রাফিক গার্ড ও স্পেশাল রেইড 

    শাখার তরফে দুর্গাপুজোর চতুর্থী থেকে দশমী পর্যন্ত টানা নজরদারি চালায় পুলিশ। লালবাজার জানিয়েছে, সাত দিনে মোট ৮১৮ জনের বিরুদ্ধে মদ্যপ অবস্থায় গাড়ি বা বাইক চালানোর জন্য জরিমানা ও আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। ট্রাফিক বিভাগের এক কর্তা বলেন, ‘ডিসেম্বর মাসের শেষ সপ্তাহ থেকে নতুন বছরের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত রাস্তায় মদ্যপ চালকদের দাপদাপি বাড়ে। সেকথা মাথায় রেখে নাকা চেকিং স্পট বাড়ানো হচ্ছে। তার জন্য আরও বেশি সংখ্যায় ব্রেথ অ্যানালাইজার মেশিন প্রয়োজন। তাই ইতিমধ্যে ৫০টি অত্যাধুনিক মেশিনের দরপত্র ডেকেছে লালবাজার। এই মেশিনে বেশ কিছু নতুন বৈশিষ্ট্য যুক্ত হবে।’ 

    সেই বৈশিষ্ট্যগুলি কী কী? মেশিনটির আদতে দু’টি ভাগ। একাংশ চালকদের ফুঁ দেওয়ার জন্য এগিয়ে দেবেন কর্তব্যরত ট্রাফিক সার্জেন্টরা। যদি চালক মদ্যপ হয়ে থাকেন, সেই মতো নির্দেশ করবে মেশিন। মেশিনের অন্য অংশ থেকে বেরিয়ে আসবে পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট। অভিযুক্ত চালকের শ্বাসে কত পরিমাণ অ্যালকোহলের অস্তিত্ব প্রমাণ হচ্ছে, সেই তথ্য চলে আসবে চটজলদি। সেখানে তারিখ, সময়, চালকের ছবি, লাইসেন্স নম্বর, গাড়ির নম্বর সবকিছুই ‘ইনপুট’ করতে পারবেন অফিসার। তার জন্য রয়েছে মোবাইল স্ক্রিনের মতো একটি টাচ-প্যাড। ১০ হাজার মদ্যপ চালকের যাবতীয় তথ্য ‘স্টোর’ করে রাখতে সক্ষম এই মেশিন। একই সঙ্গে পোর্টেবল প্রিন্টার মারফত অনস্পট সেই তথ্যের হার্ড-কপিও পেয়ে 

    যাবেন সার্জেন্ট। এই তথ্য চুরি 

    যাওয়া বা ডিলিট করারও ভয় নেই। কারণ সংশ্লিষ্ট অফিসার চাইলে মেশিনের তথ্য পাসওয়ার্ড-বন্দি করে রাখতে পারবেন। 

    লালবাজার সূত্রে খবর, ট্রাফিক গার্ড ও স্পেশাল রেইড শাখার পাশাপাশি, এই মেশিনগুলি শহরের প্রান্তিক থানাগুলিতে পাঠানোর চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে। সিঁথি, মানিকতলা, কেএলসি, আনন্দপুর, পঞ্চসায়র, পাটুলি, বাঁশদ্রোণী, হরিদেবপুর, ঠাকুরপুকুর, তারাতলা, বন্দর এলাকার থানাগুলিতে এই মেশিন পাঠানো হতে পারে। ট্রাফিকের পাশাপাশি থানার পুলিশও মদ্যপ চালকদের রুখতে রাস্তায় নামবেন বলে জানা গিয়েছে। 
  • Link to this news (বর্তমান)