পুর-নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় নতুন করে চার্জশিটের সম্ভাবনা
দৈনিক স্টেটসম্যান | ০৯ অক্টোবর ২০২৫
পুরসভায় নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই নতুন একটি চার্জশিট তৈরির প্রস্তুতি নিচ্ছে। সূত্রের খবর, এই চার্জশিটে সম্ভবত প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতানেত্রীর পরিচিতদের নাম থাকবে, যাঁরা নিয়োগ প্রক্রিয়ায় জড়িত ছিলেন। বিশেষ করে একজন প্রভাবশালীর পুত্রের নাম তদন্তে উঠে এসেছে এবং তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডাকা হয়েছে।
এই মামলার সূত্রপাত ঘটে স্কুলে নিয়োগ দুর্নীতি থেকে। তদন্তের এক পর্যায়ে ব্যবসায়ী অয়ন শীলকে গ্রেপ্তার করে সিবিআই। অয়নের সল্টলেক অফিসে তল্লাশি চালিয়ে উদ্ধার করা হয় বহু ওএমআর শিট, যেখান থেকেই পুর-নিয়োগ দুর্নীতির হদিশ পাওয়া যায়। অয়নের সংস্থা পুরসভার নিয়োগে ওএমআর শিটের দায়িত্বে ছিল বলে জানা গিয়েছে। তদন্তে অয়নের সঙ্গে যুক্ত আরও অনেককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত বছর সিবিআই এই মামলায় প্রথম চার্জশিট দায়ের করে। সেই চার্জশিটে বলা হয়েছিল, অয়নের দুই এজেন্টের মাধ্যমে অন্তত কয়েকজনকে চাকরি দেওয়া হয়েছিল। প্রত্যেকের কাছ থেকে গড়ে ৫০ হাজার টাকা কমিশন নেওয়া হয়েছিল। কলকাতা-সহ ১৬টি পুরসভায় অনিয়মের মাধ্যমে চাকরি হয়েছে বলে অভিযোগ। শমীক চৌধুরী এবং দেবেশ চক্রবর্তী ওরফে কানুদা নামে এজেন্টরা এ কাজের সঙ্গে জড়িত ছিলেন বলে জানিয়েছে সিবিআই।
সংস্থার দাবিতে, এই নিয়োগ দুর্নীতিতে অন্তত ১৮২৯ জন চাকরি পেয়েছিলেন। সূত্রের খবর, এইবারের চার্জশিটে সেই তালিকায় রাজনৈতিক নেতাদের পরিবার-পরিজনের নামও থাকতে পারে। একাধিক প্রভাবশালীর নাম ইতিমধ্যেই স্কুলে নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তে আদালতে উঠে এসেছে।
উল্লেখ্য, গত বছরের ২০ মার্চ অয়ন শীলকে ইডি গ্রেপ্তার করে। এর আগে চুঁচুড়ায় তাঁর বাড়ি, ফ্ল্যাট ও অফিসে তল্লাশি চালানো হয়। জেরা শেষে অয়নকে সিবিআই হেফাজতে নেওয়া হয়। হেফাজতে থাকার সময় বারবার জামিনের আবেদন করেন অয়ন। কিন্তু সুপ্রিম কোর্ট তা মঞ্জুর করেনি। জামিনের শুনানির সময় আদালত মন্তব্য করে, ‘ওএমআর শিটে কারচুপির অভিযোগ রয়েছে। হাজার হাজার যুবকের ভবিষ্যৎ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।’ আদালত অয়নের আইনজীবীকে তিন মাস পর পুনরায় জামিন আবেদন করার নির্দেশ দিয়েছে।
পুর-নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় এই নতুন চার্জশিট পেশ করা হলে রাজনীতিতে নতুন করে বিতর্ক বাড়তে পারে। বিশেষ করে প্রভাবশালীদের নাম সেই চার্জশিটে যুক্ত হলে।