• দিওয়ালির আগে বাজি তৈরির কারখানায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড, কাজ করতে করতেই ঝলসে গেলেন বহু, মৃত অন্তত ছয়
    আজকাল | ০৯ অক্টোবর ২০২৫
  • আজকাল ওয়েবডেস্ক: ঘটনা নতুন নয়, বরং পুরনো ঘটনার পুনরাবৃত্তি। ফের বাজি কারখানায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড। আগুনে পুড়ে, ঝলসে প্রাণ গেল অন্তত ছ'জনের। এবারের অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাস্থল অন্ধ্রপ্রদেশ। অন্ধ্রপ্রদেশের কোনাসিমায় বাজি তৈরির কারখানায় মৃত্যুমিছিল, সর্বভারতীয় সংবাদ সংস্থা সূত্রে খবর তেমনটাই।

    তথ্য, অন্ধ্রপ্রদেশের কোনাসীমা জেলার রায়াবরম মণ্ডলে অবস্থিত লাইসেন্সপ্রাপ্ত আতশবাজি তৈরির কারখানা লক্ষ্মী গণপতি বন সঞ্চা প্রস্তুতি কেন্দ্রে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাটি ঘটে। প্রতিবেদন লেখার সময় পর্যন্ত প্রাপ্ত তথ্য, অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় কমপক্ষে ছ'জন নিহত হয়েছেন। ঝলসে গিয়েছেন আরও দু'জন এবং তাঁদের চিকিৎসার জন্য আনাপার্থি সরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে উদ্ধারের পরেই।

    কীভাবে ঘটল এই ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা? প্রাথমিকভাবে মনে করে হচ্ছে, বারুদ তৈরির সময় আগুন লেগেছিল। অনেকেই আবার শট সার্কিট থেকে আগুন লেগেছে বলেও মনে করছেন। যদিও এখনও কোনও নিশ্চিত তথ্য উঠে আসেনি। একইসঙ্গে জানা গিয়েছে, আরও বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায়। 

    জেলা পুলিশ এবং দমকল কর্মকর্তারা দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন এবং এলাকাটি সুরক্ষিত করেন। দাহ্য বস্তু মজুত থাকার কারণে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা যাতে আরও বাড়তে না পারে এবং আশেপাশের বাসিন্দাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য অগ্নিনির্বাপক কর্মীরা চেষ্টা চালাচ্ছেন গত কয়েকঘণ্টা ধরেই, তথ তেমনটাই।

    টিডিপির সাধারণ সম্পাদক নারা লোকেশ ঘটনাপ্রসঙ্গে জানিয়েছেন, 'কোনাসীমা জেলার রায়াবরমে একটি আতশবাজি তৈরির কারখানায় বিস্ফোরণে ছ'য়জন নিহত হয়েছেন, যা গভীর শোকের কারণ। শ্রমিকদের আগুনে আটকে পড়া এবং জীবন্ত ঝলসে মৃত্যুর ঘটনা হৃদয়বিদারক। সরকার ইতিমধ্যেই ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। আহতদের উন্নত চিকিৎসা পরিসেবা প্রদানের জন্য প্রয়োজনীয় সকল ব্যবস্থা করার জন্য কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সরকার সম্ভাব্য সকল উপায়ে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের পাশে থাকবে। আহতদের দ্রুত আরোগ্যের জন্য আমি ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করি। নিহতদের পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি।' কর্তৃপক্ষ দুর্ঘটনার কারণ তদন্ত করছে এবং হতাহতের সংখ্যা যাচাই করছে।

    এর আগে, মঙ্গলবার জানা গিয়েছিল, মুর্শিদাবাদ জেলা থেকে কর্নাটকের বেঙ্গালুরুতে রাজমিস্ত্রির কাজ করতে গিয়ে অগ্নিদগ্ধ হন জেলার সাত পরিযায়ী শ্রমিক। গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁরা সকলে বাঙ্গালুরু সিটি মার্কেটের কাছে একটি সরকারি হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন। প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, আহত পরিযায়ী  শ্রমিকদের নাম মিনারুল শেখ (৩৫),জিয়াবুর শেখ (৩৫), হাসান মন্ডল (৪২), তাজিবুর শেখ (৩১), নুরজামাল শেখ (২০) ,শাফিজুল শেখ (৩৫) এবং জাহিদ আলী (৩২)। আহত জাহিদ আলীর বাড়ি মুর্শিদাবাদের হরিহরপাড়া থানা এলাকার খিদিরপুর গ্রামে। বাকি ছ'জন পরিযায়ী শ্রমিকের বাড়ি বহরমপুর থানার রাজধরপাড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত পাঁচ পীরতলা গ্রামে।

     বেঙ্গালুরুর সরকারি হাসপাতালের এক চিকিৎসক ঘটনাপ্রসঙ্গে জানান, অগ্নিদগ্ধ হওয়ার ঘটনায় আহত সাত পরিযায়ী শ্রমিকের অবস্থা অত্যন্ত আশঙ্কাজনক। তাঁদের শরীরের প্রায় ৮০ - ৯০ শতাংশ পুড়ে গিয়েছে। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রায় এক মাস আগে হাসান মণ্ডল নামে এক ঠিকাদারের অধীনে কাজ করার জন্য মুর্শিদাবাদ জেলা থেকে বেশ কয়েকজন পরিযায়ী শ্রমিক ব্যাঙ্গালোরের  বিরডি এলাকায় গিয়েছিলেন। সূত্রের খবর, মুর্শিদাবাদের বেশ কিছু পরিযায়ী শ্রমিক সেখানে আগে থেকেই একটি বহুতল নির্মাণের কাজের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন। যে এলাকায়  ওই বহুতল নির্মাণের কাজ চলছে তার পাশেই একটি ছোট ঘর তৈরি করে মুর্শিদাবাদের পরিযায়ী শ্রমিকেরা থাকতেন।বেঙ্গালুরুতে কর্মরত  তারিক আজিজ নামে মুর্শিদাবাদের এক পরিযায়ী শ্রমিক বলেন,' বিরডি এলাকায় যে ঘরে আমাদের জেলার ৭ জন পরিযায়ী  শ্রমিকেরা থাকছিলেন সোমবার গভীর রাতে সেখানে কোনওভাবে  আগুন লেগে যায়। আমাদের জেলার পরিযায়ী শ্রমিকেরা গভীর ঘুমে  থাকায় তাঁরা ঘর থেকে বের হতে পারেননি। সকলেই ঘুমের মধ্যেই গুরুতর অগ্নিদগ্ধ হন।' 
  • Link to this news (আজকাল)