• ঘুমোচ্ছিলেন ক্লান্ত স্বামী, মাঝরাতে চুপি চুপি বিছানা থেকে উঠে গেলেন স্ত্রী, ফুটন্ত তেল-লঙ্কার গুঁড়ো নিয়ে যা করলেন তারপর...
    আজকাল | ০৯ অক্টোবর ২০২৫
  • আজকাল ওয়েবডেস্ক:সারাদিন অফিস করেছেন। অফিস ফেরত ক্লান্ত স্বামী, সারাদিনের শেষ ঘুমিয়ে পড়েছিলেন। ঘুমিয়ে পড়ার আগে পর্যন্ত তিনি দেখেছেন, তাঁর স্ত্রী ঘুমোচ্ছেন পাশে। মাঝরাতে যখন ঘুম ভাঙল, তখন জ্বালা সারা শরীরে। অসহ্য সন্ত্রণায় কুঁকড়ে যেতে যেতে তিনি বোঝার চেষ্টা করলেন, রাতের অন্ধকারে কী ঘটে গেল।

    দিল্লির দীনেশ। গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পরেই বিষয়টি জানাজানি হয়। জানা গিয়েছে ঘটনাটি ঘটেছে ৩ অক্টোবর। দীনেশ অফিস থেকে মদনগীর এলাকার বাড়িতে ফেরেন। ফিরে ক্লান্ত থাকার কারণে ঘুমিয়ে পড়েন। অভিযোগ, মাঝরাতে তাঁর গায়ে ফুটন্ত তেল ঢেলে দেন স্ত্রী। আরও বেশি যন্ত্রণা দেওয়ার জন্য ঝলসে যাওয়া জায়গায় ছড়িয়ে দেন লঙ্কার গুঁড়ো। 

    দীনেশ। বয়স ২৮। পেশাগত পরিচয় হিসেবে জানা গিয়েছে, ওই যুবক এক ওষুধ কোম্পানির কর্মী। গুরুতর দগ্ধ অবস্থায় সফদরজং হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় এবং শারীরিক অবস্থার বিচারে তাঁকে আইসিইউ-তে রাখা হয়। ঘটনায় ইতিমধ্যে পুলিশে অভিযোগ দায়ের হয়েছে। আম্বেদকর নগর থানায় দায়ের করা একটি এফআইআর অনুসারে, দীনেশ যখন ঘুমিয়ে ছিলেন, তখন ভোর ৩টার দিকে তাঁর স্ত্রী তাঁর শরীরের উপর গরম তেল ঢেলে দেন, দম্পতির আট বছরের মেয়েও বাড়িতে ছিল। তাঁদের পাশেই সে ঘুমিয়েছিল বলে জানা গিয়েছে।

    দীনেশ নিজে পুলিশকে জানিয়েছেন,  ২ অক্টোবর কাজ শেষে তিনি দেরিতে বাড়ি ফিরে রাতের খাবার খেয়ে ঘুমাতে যান। স্ত্রী এবং মেয়েও পাশে ঘুমাচ্ছিলেন। ভোর ৩.১৫ টার দিকে, হঠাৎ সারা শরীরে তীব্র ব্যথা অনুভব করেন। দীনেশের অভিযোগ, 'আমি কোনওমতে তাকিয়ে দেখি, আমার স্ত্রী সামনে দাঁড়িয়ে। সারা শরীরে ঝলসে যাওয়া জায়গায় লঙ্কার গুঁড়ো ছড়িয়ে দিচ্ছে। আমি উঠে বসার, অন্যদের ডাকার চেষ্টা করতেই আরও বেশি লঙ্কার গুঁড়ো ছড়িয়ে দেওয়া হয়।' অন্যদের ডাকলে, চিৎকার করলে আরও ফুটন্ত তেল ঢেলে দেওয়া হবে বলে ভয় দেখিয়েছিলেন, অভিযোগ তেমনটাও। তবে তার মাঝেই শব্দ পৌঁছে যায় নীচতলায়। বাড়ির মালিকের পরিবারের সদস্যরা কোনওমতে তাঁদের ঘরে প্রবেশ করেন বলে জানা যায়।

    ঘটনা প্রসঙ্গে দীনেশের বাড়ির মালিকের মেয়ে অঞ্জলি সংবাদ মাধ্যমে জানিয়েছেন, 'আমার বাবা কী হচ্ছে তা দেখতে উপরে যান। দরজা বন্ধ ছিল। তাঁর স্ত্রী ভিতর থেকে দরজা বন্ধ করে দিয়েছিলেন। আমরা তাঁদের দরজা খুলতে বললাম। অবশেষে যখন দরজা খুলল, তখন আমরা দেখলাম দীনেশ যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছিলেন এবং তাঁর স্ত্রী ঘরের ভিতরে লুকিয়ে ছিলেন।' জানা গিয়েছে, কিছুক্ষণ পর, দীনেশের স্ত্রী স্বামীকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার নাম করে অন্যত্র চলে যাচ্ছিলেন। তবে বাড়ির মালিকের মনে সন্দেহ জাগায় তিনি নিজে দীনেশকে হাসপাতালে নিয়ে যান। দীনেশকে প্রথমে নিকটবর্তী একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়, কিন্তু তাঁর মুখে এবং সারা শরীরের পোড়া দেখে চিকিৎসকেরা তাঁকে সফদরজং হাসপাতালে রেফার করেন। পুলিশ জানিয়েছে যে মেডিকেল রিপোর্টে দীনেশের ক্ষতগুলিকে গুরুতর বলে চিহ্নিত করা হয়েছে।

    জানা গিয়েছে, আট বছর আগে দীনেশের বিয়ে হয়েছিল। তবে শুরু থেকেই তাঁদের দাম্পত্য কলহ ছিলই। মাঝে একবার স্ত্রী তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছিলেন হেনস্থা এবং অত্যাচারের। যদিও পরে তা মিটিয়ে নেন। দীনেশের স্ত্রীর বিরুদ্ধে বিএনএসের ১১৮, ১২৪  এবং ৩২৬ ধারায় মামলা করা হয়েছে।
  • Link to this news (আজকাল)