আজকাল ওয়েবডেস্ক: ভারতীয় বায়ুসেনা দিবসে পরিবেশিত মেনু এবার আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে। এবারের বিশেষ ভোজে পরিবেশিত খাবারের নামগুলি যেন ছিল একেবারে যুদ্ধক্ষেত্রের গল্প বলার মতো — ‘রাওয়ালপিন্ডি চিকেন টিক্কা মাসালা’, ‘ভোলারি পনির মেথি মালাই’, এবং ‘বালাকোট টিরামিসু’। শোনা যাচ্ছে, ভারতের সামরিক সাফল্যের প্রতীক হিসেবেই এই মেনুর প্রতিটি পদ রাখা হয়েছিল।
প্রথম নজরে এটি হয়তো এক সাধারণ উৎসবের ভোজ মনে হতে পারে, কিন্তু বাস্তবে এই মেনু ছিল পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ভারতের সামরিক অভিযানের সাফল্যের এক রসিক উপস্থাপনা। বিশেষত, ‘অপারেশন সিঁন্দুরের’ সময় পাকিস্তানের ভেতরে বায়ুসেনার সফল আঘাতগুলিকে যেন থালায় সাজিয়ে পরিবেশন করা হয়েছে আমাদের বীর বায়ুসেনা সদস্যদের সামনে।
প্রতীকী মেনুতে পাকিস্তানকে কটাক্ষএই বছর বায়ুসেনা দিবসের মেনুতে ভারতের যুদ্ধজয়ের প্রতিচ্ছবি স্পষ্ট। যেমন, ‘রাওয়ালপিন্ডি চিকেন টিক্কা মাসালা’ নামটি বেছে নেওয়া হয়েছে পাকিস্তানের সেনা সদর দপ্তর রাওয়ালপিন্ডিকে ইঙ্গিত করে, যেখানে একাধিক সন্ত্রাসবাদী পরিকল্পনা গড়ে উঠেছিল বলে গোয়েন্দা সূত্রে দাবি।অন্যদিকে, ‘ভোলারি পনির মেথি মালাই’ নামটি সরাসরি পাকিস্তানের সিন্ধ প্রদেশের ভোলারি বিমানঘাঁটি-র প্রতি ইঙ্গিত করছে, যেখানে ভারতীয় বায়ুসেনার হামলায় বড় ক্ষতি হয়েছিল বলে ধারণা করা হয়। আর মিষ্টান্নে পরিবেশিত ‘বালাকোট টিরামিসু’ যেন ২০১৯ সালের সেই ঐতিহাসিক বালাকোট এয়ার স্ট্রাইক-এর প্রতীক — যেখানে ভারত জয়ীভাবে জবাব দিয়েছিল সন্ত্রাসের আশ্রয়স্থলকে।
এই প্রতীকী পদগুলির মাধ্যমে বায়ুসেনা দিবসের ভোজ যেন হয়ে উঠেছিল ভারতের সামরিক সাহসিকতা ও কৌশলের এক সৃজনশীল উদযাপন।
মেনু ভাইরাল, নেটদুনিয়ায় প্রশংসার ঝড়বায়ুসেনা দিবসের ঠিক পরদিনই সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয় এই মেনুর ছবি। বহু সেনা কর্মকর্তা, প্রাক্তন সৈনিক এবং সাংবাদিকরা X (টুইটার)-এ ছবিটি শেয়ার করেন এবং এর সৃজনশীলতাকে সাধুবাদ জানান। নেটিজেনদের মধ্যে এটি একপ্রকার দেশপ্রেমিক উচ্ছ্বাসের প্রতীক হয়ে উঠেছে। অনেকে মন্তব্য করেছেন, “ভারতের সামরিক শক্তি শুধু আকাশে নয়, রসনাতেও ছাপ ফেলেছে!”
মজার কল সাইনও আলোচনায়এবারের বায়ুসেনা দিবসের প্রস্তুতির সময় আকাশে দেখা যায় দুটি বিমান — একটি Lockheed Martin C-130J এবং অন্যটি Antonov An-32। আশ্চর্যের বিষয়, এই বিমানের কল সাইন ছিল যথাক্রমে “Rafiqui” এবং “Shehbaz”।
এটি অনেকের কাছে আবারও পাকিস্তানকে সূক্ষ্মভাবে কটাক্ষ করার একটি উদাহরণ। কারণ “Rafiqui” হল পাকিস্তানের ১৯৬৫ সালের যুদ্ধবীর স্কোয়াড্রন লিডার সর্ফরাজ আহমেদ রফিকি-র নামে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিমানঘাঁটির নাম, যা পাকিস্তানের JF-17 এবং Mirage যুদ্ধবিমানের ঘাঁটি হিসেবেও পরিচিত। অপরদিকে, “Shehbaz” নামটি সরাসরি পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ-এর নামের সঙ্গে মিল, যা নেটিজেনদের হাসির খোরাক জুগিয়েছে।
সব মিলিয়ে, এবারের বায়ুসেনা দিবস শুধু একটি আনুষ্ঠানিক উদযাপনেই সীমাবদ্ধ ছিল না। এটি ছিল ভারতের সামরিক আত্মবিশ্বাস, বুদ্ধিমত্তা এবং রসবোধের অনন্য উদাহরণ। যুদ্ধক্ষেত্রের জয় এবার রসনাতেও প্রতিফলিত হল। এক থালায় পরিবেশিত হল দেশের গৌরবের স্বাদ।