সাংসদ খগেন মুর্মুর উপর হামলা, গ্রেপ্তার আরও ২, চলছে বাকিদের সন্ধান ...
আজকাল | ০৯ অক্টোবর ২০২৫
আজকাল ওয়েবডেস্ক: বিজেপি সাংসদ খগেন মুর্মুর উপর আক্রমণের ঘটনায় গ্রেপ্তার করা হল আরও দুই অভিযুক্তকে। ধৃতরা সাহানুর আলম এবং তোফায়েল হোসেন বলে জানা গিয়েছে। বৃহস্পতিবার জলপাইগুড়ি জেলার নাগরাকাটার খয়েরবাড়ি থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এর আগে আরও দুই অভিযুক্তকে বুধবার আলিপুরদুয়ার থেকে গ্রেপ্তার করেছিল পুলিশ। বৃহস্পতিবার এই গ্রেপ্তারির পর আপাতত এই মামলায় এখনও পর্যন্ত পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার মোট ৪ জন। যদিও একটি সূত্র জানায়, বুধবার আলিপুরদুয়ার থেকে দুই অভিযুক্তকে গ্রেপ্তারের পর তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে ওইদিন রাতেই খয়েরবাড়িতে অভিযান চালিয়ে এই দু'জনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
অন্যদিকে বন্যা দুর্গাতদের ত্রাণ দিতে গিয়ে মঙ্গলবার কুমারগ্রামের বিজেপি বিধায়ক মনোজ কুমার ওঁরাও আক্রান্ত হয়েছিলেন ভারত-ভুটান সীমান্তের বিত্তিবাড়ি গ্রামে। ওই ঘটনায় পাঁচ জনের নামে কুমারগ্রাম থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছিলেন তিনি। তদন্তে নেমে বুধবার গভীররাতে আশুতোষ মন্ডল নামে একজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
গত সোমবার বন্যার জেরে বিধ্বস্ত উত্তরবঙ্গের বামনডাঙা চা বাগানে গিয়ে স্থানীয়দের বিক্ষোভের মুখে পড়লেন বিজেপি সাংসদ খগেন মুর্মু এবং বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ। বিক্ষোভ চলাকালীন খগেন গুরুতর আহত হন। অভিযোগ, লাঠি, জুতো নিয়ে খগেন এবং শঙ্করের উপর চড়াও হয়েছিলেন কয়েকশো মানুষ। ধাক্কা দিয়ে বের করে দেওয়া হয় শঙ্করকে। ঘটনাস্থল থেকে যখন তাঁরা বেরিয়ে যাচ্ছিলেন তখন নদী থেকে পাথর তুলে তাঁদের গাড়ি লক্ষ করে ছোড়া হয় বলেও অভিযোগ। তাতেই মুখে আঘাত পান খগেন। লেগেছে বাঁ চোখের নীচে। আঘাতের সঙ্গে সঙ্গেই গলগলিয়ে রক্ত ঝড়তে থাকে খগেনের মুখ থেকে। বাসিন্দাদের বলতে শোনা যায়, পাঁচ বছর পর আজ কেন খোঁজ নিতে এসেছেন? চিকিৎসার জন্য খগেনকে নিয়ে দ্রুত এলাকা ছাড়েন শঙ্কর।
জানা গিয়েছে এই ঘটনার আগে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে কথা বলে তাঁরা পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা করলেও তাঁদের সেই প্রয়াস কাজে আসেনি। ধীরে ধীরে ভিড় বাড়তে থাকে। মারমুখী হয়ে ওঠেন বিক্ষোভকারীরা। পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে যাচ্ছে বুঝতে পেরে দুই নেতাই গাড়িতে উঠে পড়েন। দুই নেতার সঙ্গের দেহরক্ষীরা আটকানোর চেষ্টা করলেও ব্যর্থ হন। আহত খগেন মুর্মুকে প্রথমে নিয়ে যাওয়া হয় চালসা মঙ্গলবাড়ির একটি প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে। সেখান থেকে তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় শিলিগুড়িতে।
গোটা ঘটনার জন্য বিজেপির তরফে তৃণমূল কংগ্রেসের দিকে আঙুল তোলা হলেও ঘাসফুল শিবিরের পক্ষ থেকে অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে। জেলা তৃণমূল নেত্রী মহুয়া গোপের দাবি ছিল, 'রবিবার এই জেলায় যে পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছিল তা নিয়ে বিজেপির সাংসদ বা বিধায়করা কেউ আসেননি। আজ কারা রাজনীতি করতে এসেছেন সেটা মানুষ বুঝতে পেরেছেন।'
অন্যদিকে সাংসদ ও বিধায়কের উপর হামলায় তৃণমূলের দিকে অভিযোগ ওঠায় দলের প্রাক্তন সাংসদ ও নেতা কুণাল ঘোষ জানিয়েছিলেন, 'এটা নিয়ে একটা বিকৃত প্রচার চলছে। দল কোনও অবস্থাতেই এই ধরনের হামলা সমর্থন করে না। কিন্তু এদিনের ঘটনা বিজেপি নেতাদের কর্মফল। তাঁরা মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ রাখেন না। মানুষের উন্নয়নে বাধা দেয়। যেখানে তৃণমূল কর্মীরা দুর্গত এলাকায় উদ্ধার ও ত্রাণের কাজে ব্যস্ত সেখানে বিজেপির নেতারা গিয়েছিলেন ছবি তুলতে। তাঁরা কিন্তু ত্রাণের কাজে যাননি। ফলে সেখানকার মানুষ ক্ষিপ্ত হয়েছেন বলে খবর।' বন্যা পরিস্থিতির মোকাবিলায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি উত্তরবঙ্গ সফরে গিয়ে নিজে খগেনকে দেখতে হাসপাতালে গিয়েছিলেন।