রাজ্যে ২ নভেম্বর থেকে শুরু হতে পারে এসআইআর, তোড়জোড় ভোট প্রস্তুতিতে
দৈনিক স্টেটসম্যান | ০৯ অক্টোবর ২০২৫
বছর ঘুরলেই বাংলায় বিধানসভা নির্বাচন। তার আগে কার্যত ভোটের দামামা বেজে গিয়েছে বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। বিহারে ইতিমধ্যেই নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণা করা হয়ে গিয়েছে। বিশেষ নিবিড় সংশোধনী প্রক্রিয়াও শেষ। বিহারে চূড়ান্ত ভোটার তালিকাও প্রকাশ করা হয়েছে। এবার বাংলায় চালু হতে চলেছে বিশেষ নিবিড় সংশোধনী প্রক্রিয়া বা এসআইআর। আগামী ২ নভেম্বর থেকেই রাজ্যে এসআইআর শুরু হতে পারে বলে বার্তা দিল নির্বাচন কমিশন। বৃহস্পতিবার কোলাঘাটে পূর্ব মেদিনীপুর, বাঁকুড়া এবং ঝাড়গ্রাম জেলার বিএলও এবং ইআরও-এইআরও-দের সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে এই ইঙ্গিত দিয়েছে কমিশন।
সূত্রের খবর, ভোটার তালিকা সংশোধনের আগে প্রতিটি জেলায় প্রস্তুতিপর্ব খতিয়ে দেখতে হবে বলে স্পষ্ট বার্তা দিয়েছে কমিশন। কোথাও যেন ফাঁক-ফোকর না থাকে। কেবল ‘কাগুজে প্রস্তুতি’ নয়, মাঠে নেমে বাস্তব যাচাই প্রক্রিয়া চালাতে হবে বলে জানানো হয়েছে। কমিশনের এক কর্তা জানিয়েছেন, ‘ভোটার তালিকা নির্ভুল করতেই এসআইআর। সব আধিকারিকদের নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করতে হবে। অনিয়ম মিললে দায় এড়ানো যাবে না।‘
প্রতিটি জেলায় বিএলও-দের সঙ্গে পৃথক পৃথক বৈঠকের পরিকল্পনা আছে বলে জানিয়েছে কমিশন। জেলাভিত্তিক রিপোর্ট চাওয়া হবে খুব শীঘ্রই। রাজ্য প্রশাসনের এক কর্তা বলেন, ‘কমিশনের তরফে স্পষ্ট নির্দেশ এসেছে। সবাইকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।‘ এককথায় ভোটের ঢাকে কাঠি পড়ে গেছে। নভেম্বর থেকে রাজ্যজুড়ে ভোটার তালিকা যাচাইয়ের সাফ বার্তা কমিশনের। গাফিলতি কোনওভাবে বরদাস্ত করা যাবে না বলেও ইঙ্গিত।
মঙ্গলবার রাতে দিল্লি থেকে কলকাতায় এসেছে কমিশনের উচ্চপর্যায়ের দল। উপ-নির্বাচন কমিশনার জ্ঞানেশ ভারতী, তথ্যপ্রযুক্তি শাখার ডিরেক্টর জেনারেল সীমা খান্না, কমিশনের সচিব এসবি যোশী এবং উপ-সচিব অভিনব আগরওয়াল রয়েছেন এই দলে। বুধবার সকালে তাঁদের নেতৃত্বেই হয় রাজ্যের জেলাশাসকদের সঙ্গে বৈঠক। ১৫ অক্টোবরের মধ্যে সমস্ত প্রস্তুতি শেষ করতে বলে জানিয়েছে কমিশন। সময়মতো বিজ্ঞপ্তি জারি এবং ফর্ম বিতরণের নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।
এদিন কোলাঘাটের বৈঠকেও জেলার প্রস্তুতির খতিয়ান খোঁজ খবর নেন কমিশনের কর্তারা। কোথায় কতটা কাজ এগিয়েছে, তা সরেজমিনে খতিয়ে দেখা হয়। বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের চার-পাঁচ দিনের মধ্যেই কমপক্ষে ৩০ শতাংশ ফর্ম ছাপানোর কাজ শেষ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রতিটি জেলার নিজস্ব পরিকাঠামো ব্যবহার করে সেই ছাপার কাজ করতে হবে। বিহারের মতো এক জায়গা থেকে ফর্ম পাঠানোর পথে কমিশন হাঁটবে না বলে মনে করা হচ্ছে।
রাজ্যে এই মুহূর্তে ভোটারের সংখ্যা প্রায় ৭.৬৫ কোটি। অন্তত ১৫ কোটিরও বেশি আবেদনপত্র ছাপাতে হবে। প্রতিটি ভোটারের জন্য দু’টি করে ফর্ম লাগবে। একটি ফর্ম ভোটারের হাতে থাকবে এবং অন্যটি সংগ্রহ করে আনবেন বিএলও। দিল্লি থেকে সফট কপি পাঠানোর পরই ফর্ম ছাপার কাজ শুরু হবে। তার পর সেই ফর্ম বিলি করা হবে বুথ লেভেল অফিসারদের হাতে। এরপর বাড়ি বাড়ি গিয়ে সেগুলি পৌঁছে দেবেন তাঁরাই।