• সিসিটিভি ফুটেজ দেখে ৭ মিনিটে শনাক্ত, গ্রেপ্তার লুটেরা শ্যালক ও জামাইবাবু
    প্রতিদিন | ০৯ অক্টোবর ২০২৫
  • অর্ণব আইচ ও দেবব্রত মণ্ডল: সিসিটিভি ফুটেজ হাতে পাওয়ার পর মাত্র সাত মিনিটে শনাক্তকরণ। আর তার একদিনের মধ্যেই কুখ‌্যাত দুই লুটেরা শ‌্যালক ও জামাইবাবুকে গ্রেপ্তার করল পুলিশ। কলকাতা থেকে শুরু করে দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিভিন্ন এলাকায় দিনের বেলায় বস্তা নিয়ে পুরনো সামগ্রীর ক্রেতা সেজে ঘুরে বেড়াত তারা। একের পর এক বাড়িতে ঢুকে লাখ লাখ টাকার নগদ ও সোনা-রুপোর গয়না হাতিয়ে নিত তারা। কিন্তু দক্ষিণ ২৪ পরগনার ক‌্যানিং এলাকার এক মাস্টারমশাইয়ের বাড়িতে চুরি করে বিপাকে পড়ল জামাইবাবু মহম্মদ কাশেম ও শ‌্যালক মোস্তাফা মোল্লা। ক‌্যানিং থানার আধিকারিক সায়ন ভট্টাচার্যর টিমের প্রচেষ্টায় ঘটনার একদিনের ভিতরই জালে পড়ল তারা। বুধবার আলিপুর আদালতে তোলা হলে দু’জনকেই ৬ দিনের জন‌্য পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন বিচারক।

    পুলিশ জানিয়েছে, গত সোমবার ‘মাস্টারমশাই’ বিপ্লব দাস বাড়িতে ছিলেন না। সিসিটিভির ফুটেজে পুলিশ দেখেছে, প্রথমে জামাইবাবু ও তার পিছনে শ‌্যালক তালা ভেঙে বাড়িতে ঢোকে। তাদের হাতে থাকা বস্তার মধ্যেই থাকত তালা ভাঙার যন্ত্র তথা ‘গামছা’। ঘরের ভিতর ঢুকে শিলনোড়া দিয়ে আলমারির লক ভেঙে দুই লক্ষাধিক টাকার সোনার গয়না নিয়ে পালায় তারা। পরিবারের লোকেরা ফিরে এসে লুটপাটের ঘটনাটি দেখেই ক‌্যানিং থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। এলাকার সিসিটিভির ফুটেজ দেখার সাত মিনিটের মধ্যেই শনাক্ত হয় কাশেম ও মোস্তাফা। এর পর তাদের সন্ধানে চলে ক‌্যানিং, বাসন্তী এলাকাজুড়ে তল্লাশি। মঙ্গলবার গভীর রাতে ক‌্যানিংয়ের একটি গোপন ডেরায় পালানোর সময়ই তাদের ধরে ফেলেন পুলিশ আধিকারিকরা।

    পুলিশের সূত্র জানিয়েছে, কলকাতার দক্ষিণ শহরতলির আক্রা-সন্তোষপুরের বাসিন্দা মোস্তাফার দিদিকে বিয়ে করার পরই জামাইবাবু দাগি লুটেরা কাশেম হয়ে ওঠে মোস্তাফার ‘গুরু’। সন্তোষপুরে থাকাকালীন তারা ট্রেনে করে পৌঁছে যেত কলকাতার বিভিন্ন অংশে। ‘কাবারি’ সেজে পুরনো জিনিসপত্র কেনার অছিলায় ঘুরে বেড়াত রাস্তায় রাস্তায়। যদিও তাদের নজর থাকত ফাঁকা বাড়ির উপর। ফাঁকা বাড়ির দরজা ভেঙে ভিতরে ঢুকে যাবতীয় জিনিসপত্র হাতিয়ে পালাত তারা। লালবাজারের গোয়েন্দাদের হাতে একাধিকবার গ্রেপ্তার হয়েছে শ‌্যালক-জামাইবাবু। গত জানুয়ারি মাসে গড়িয়া, সোনারপুর এলাকায় একাধিক বাড়িতে লুট করার অভিযোগে তাদের গ্রেপ্তার করে সোনারপুর থানার পুলিশ। জামিন পেয়ে সন্তোষপুর ছেড়ে পালিয়ে বাসন্তীতে ডেরা বাঁধে তারা। ক‌্যানিং, বাসন্তী, গোসাবাজুড়ে একই পদ্ধতিতে লুটপাট চালাতে থাকে। অন‌্য ডেরা খোঁজার আগেই ধরা পড়ে যায় দু’জন। তাদের কাছ থেকে চোরাই সোনার গয়না উদ্ধারের চেষ্টা হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
  • Link to this news (প্রতিদিন)