• স্কুলের বেতন দেয়নি, তাই বেঞ্চে বসার অধিকারই নেই! ক্লাসরুমের মাটিতে বসে পরীক্ষা দিল পড়ুয়া, সহপাঠীদের সামনেই হেনস্থা
    আজকাল | ১০ অক্টোবর ২০২৫
  • আজকাল ওয়েবডেস্ক: সহপাঠীরা বেঞ্চে বসে পরীক্ষা দিচ্ছিল। অথচ সবার থেকে আলাদা করে, অন্য একটি ক্লাসরুমে মাটিতে বসে পরীক্ষা দিতে বাধ্য করা হল এক দশম শ্রেণির ছাত্রকে। তার বেঞ্চে বসার অধিকার নেই বলেই মুখের উপর জানিয়ে দেন শিক্ষকরা। কারণ? স্কুলের অর্ধেক বেতন দেয়নি সে। বেতন না দেওয়ার জন্য পরীক্ষার সময় স্কুলেই চরম হেনস্থার শিকার হল ওই ছাত্র। 

    সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, ঘটনাটি ঘটেছে মহারাষ্ট্রের ভিওয়ান্দি জেলায়। জানা গেছে, ওই জেলায় সালাহুদ্দিন আয়ুবী মেমোরিয়াল উর্দু হাই স্কুলে। ওই স্কুলেই দশম শ্রেণির এক ছাত্র হেনস্থার শিকার হয়। পরীক্ষার সময় সহপাঠীরা বেঞ্চে বসলেও, ক্লাসরুমের মাটিতে বসে পরীক্ষা দেয় ওই ছাত্র। কারণ? স্কুলের বেতন দিতে পারেনি সে। 

    কাজ সেরে সদ্য বাড়ি ফিরেছিলেন ফৈয়জ খান। বাড়ি ফিরেই দেখেন ছেলে কান্নাকাটি করছে। বাবাকে দেখে ছুটে গিয়ে জড়িয়ে ধরে সে। বাবার কোমর জড়িয়ে ধরে, কাঁদতে কাঁদতেই বলে, 'বাবা, স্কুলের বেতন কবে দেবে?' তখনই স্কুলে হেনস্থার কথা পরিবারে জানায় ছাত্র। 

    ওই ছাত্রের বাবা জানিয়েছেন, ফাহাদের এটি প্রথম সেমিস্কটারের প্রথম পরীক্ষা ছিল। সেদিনই এক ক্লাসরুমের মাটিতে বসে তাকে পরীক্ষা দেওয়ার নির্দেশ দেন শিক্ষিকা। অন্যদিকে তার সহপাঠীরা অন্য ক্লাসরুমের বেঞ্চে বসেই পরীক্ষা দেয়। ঘটনাটি জানতে পেরেই পরদিন শান্ত মাথায় ফাহাদকে স্কুলে গিয়ে পরীক্ষা দিতে বলেন বাবা। 

    পরদিন ছেলের সঙ্গে ফৈয়জ সেই স্কুলে যান। সেখানে গিয়ে জানতে পারেন, স্কুলের চারতলায় এক ক্লাসরুমে বসে ফাহাদ পরীক্ষা দিচ্ছে। কিন্তু সেখানে যেতে চাইলেও বাধা দেন স্কুলের কর্মীরা। কোনও মতে সেই ক্লাসরুমে পৌঁছন ফৈয়জ। সেখানে গিয়ে দেখেন, ক্লাসরুমের মাটিতে খবরের কাগজে বসে রয়েছে ফাহাদ। সেখানে বসেই পরীক্ষা দিচ্ছে সে। বিষয়টি ঘিরে আপত্তি জানান এক শিক্ষককে। কিন্তু তিনি কোনও গুরুত্ব না দিয়ে, কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করতে বলেন। রাগের মাথায় ফৈয়জকে সেখানে তুলে নিয়ে যান তার বাবা। 

    এরপর স্কুলের কর্তৃপক্ষ না, ছেলেকে নিয়ে সোজা থানায় পৌঁছন ফৈয়জ। স্কুলে এহেন হেনস্থার বিষয়ে পুলিশে অভিযোগ জানান। ঘটনাটি জেনেই ওই স্কুলের প্রিন্সিপাল ও শিক্ষকদের বিরুদ্ধে অভিযোগ রুজু করে পুলিশ। পাশাপাশি পড়ুয়াকেও পরীক্ষা শেষ করার জন্য স্কুলে পাঠানোর ব্যবস্থা করে তারা। 

    ফৈয়জ জানিয়েছেন, 'ওই স্কুলের বেতন ২৫০০ টাকা। আমি ১২০০ টাকা আগেই দিয়েছিলাম। বাকি টাকা শীঘ্রই দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম। বাকি ১৩০০ টাকা না দেওয়ায় ছেলের নবম শ্রেণির রেজাল্ট দিতেও অস্বীকার করেছেন স্কুল কর্তৃপক্ষ।' স্কুলেই এমন হেনস্থার শিকার হয়ে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছে পড়ুয়া। সহপাঠীদের সামনে বেতন ঘিরে যে হেনস্থার শিকার হয়েছে সে, তাতে ভবিষ্যতেও তার মনের উপর প্রভাব ফেলবে বলে আশঙ্কা পরিবারের। এই ঘটনাটি ঘিরে অন্যান্য পড়ুয়াদের অভিভাবকরাও আপত্তি জানিয়েছেন। যা ঘিরে রাজ্য জুড়ে শোরগোল পড়েছে। 
  • Link to this news (আজকাল)