• অসুস্থতার জন্য ছুটি চেয়েছিলেন অফিসে, উত্তরে জুটল ম্যানেজারদের ব্যঙ্গ-বিদ্রূপ, তরুণীর দুর্দশায় ক্ষোভের আগুন নেটমাধ্যমে
    আজকাল | ১০ অক্টোবর ২০২৫
  • আজকাল ওয়েবডেস্ক: কর্মক্ষেত্রে মানসিক ভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছিলেন তিনি। চেয়েছিলেন সহানুভূতি। কিন্তু তার বদলে জুটল ম্যানেজারদের অট্টহাসি আর বিদ্রূপ। গুরুগ্রামের একুশ বছর বয়সি এক তরুণীর এমনই এক তিক্ত অভিজ্ঞতা নিয়ে এখন উত্তাল সমাজমাধ্যম। রেডিটে তাঁর লেখা একটি পোস্ট ভাইরাল হতেই ভারতে কর্পোরেট দুনিয়ায় মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে উদাসীনতা এবং সহানুভূতির অভাব নিয়ে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে।

    ‘সাসুকেউচিহা ৩৭৩৩’ নামের ওই রেডিট ব্যবহারকারী নিজের পোস্টে লেখেন, “ভারতে মানসিক স্বাস্থ্য একটা তামাশার বিষয়।”

    তাঁর অভিযোগ, বেশ কয়েক সপ্তাহ ধরেই তিনি মানসিক ভাবে অসুস্থ বোধ করছিলেন এবং সে কথা একাধিক বার ম্যানেজারদের জানিয়েওছিলেন। কিন্তু তাতে কেউ কর্ণপাত করেননি।

    এক দিন অফিসেই কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি। তরুণীর কথায়, “আমার শ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছিল, ঘনঘন শ্বাস পড়ছিল, অঝোরে কেঁদে চলেছিলাম। কিন্তু তাতেও পরিস্থিতির কোনও বদল হয়নি।”

    এর পরেই তিনি কিছুটা বিশ্রাম এবং সুস্থতার জন্য ছুটি চেয়ে এইচআর বিভাগকে একটি ইমেল পাঠান। তিনি লেখেন যে, তিনি বিধ্বস্ত এবং মানসিক স্বাস্থ্যের দিকে নজর দেওয়ার জন্য তাঁর কিছুটা সময় প্রয়োজন। ইমেলে তিনি এ-ও উল্লেখ করেন, “আমার ব্যক্তিগত জীবনে এমন অনেক কিছু চলছে যা আমি সকলের সঙ্গে ভাগ করে নিতে স্বচ্ছন্দ নই... কিন্তু পরিস্থিতি এমন এক পর্যায়ে পৌঁছেছে যেখানে আমি বিধ্বস্ত এবং আর সামাল দিতে পারছি না।”

    কিন্তু তাঁর অভিযোগ, এই ইমেলের পর সহানুভূতি তো দূরস্থান, ম্যানেজাররা তাঁর উপর বেজায় চটে যান। এমনকী তাঁর আড়ালে হাসাহাসিও করেন।

    পরে এক বিশ্বাসভাজন সহকর্মীর থেকে তিনি জানতে পারেন, অফিসের অনেকেই তাঁকে ‘মিথ্যেবাদী’ বলছেন। এমনকি এক সুপারভাইজারও সেই আলোচনায় যোগ দিয়ে আগুনে ঘি ঢালেন।

    বিধ্বস্ত তরুণী লেখেন, “এই ঘটনায় আমি পুরোপুরি ভেঙে পড়ি। কখনও ভাবিনি যে নিজের মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে সৎ থাকার পরিণতি এমন হবে। লোকে তা নিয়ে হাসাহাসি করবে।”

    তিনি আরও জানান, ইমেল পাঠানোর ঠিক পরেই তাঁর ম্যানেজার হোয়াটসঅ্যাপে মেসেজ করে জানতে চান, অসুস্থ থাকা সত্ত্বেও তিনি ‘লগ ইন’ করে অফিসের ফোন ধরতে পারবেন কি না।

    রেডিটে তাঁর এই পোস্টটি সামনে আসতেই নেটিজেনরা ঝড়ের বেগে প্রতিক্রিয়া জানাতে শুরু করেন। অনেকেই তরুণীর প্রতি সহমর্মিতা ও সমর্থন জানিয়েছেন। বহু মানুষ আবার নিজেদের জীবনে ঘটে যাওয়া একই ধরনের অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরেছেন।

    এক নেটিজেন মন্তব্য করেন, “হ্যাঁ, এ দেশে মানসিক স্বাস্থ্য সত্যিই এক তামাশার বিষয়। কিন্তু তার চেয়েও খারাপ হল মানসিক কষ্টের কথা কাউকে বলতে যাওয়া।”

    দ্বিতীয় এক জনের মন্তব্য, “দুর্ভাগ্যবশত, ভারতে মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে কথা বলা এখনও এক নিষিদ্ধ বিষয়।”

    অন্য এক নেটিজেন লেখেন, “কর্পোরেট সংস্থাগুলো আপনার সমস্যা নিয়ে ভাবে না, কারণ তারা জানে আপনি চাকরি ছাড়লে সেই জায়গা ভরাট করার জন্য লোকের অভাব হবে না। আপনি ছুটি নিন এবং থেরাপির মাধ্যমে সুস্থ হওয়ার দিকে মন দিন।”
  • Link to this news (আজকাল)