'অপব্যবহার নয়', ভোটমুখী বিহারে চিন্তা বাড়াচ্ছে এআই-ডিপফেক? রাজনৈতিক দলগুলিকে বড় বার্তা নির্বাচন কমিশনের...
আজকাল | ১০ অক্টোবর ২০২৫
আজকাল ওয়েবডেস্ক: ভোট বিহারে। দিন ঘোষণা হয়ে গিয়েছে। নানা বিষয়ে, একগুচ্ছ নির্দেশিকা নির্বাচন কমিশনের। তারসঙ্গেই ভাবনা বাড়াচ্ছে প্রযুক্তিও। তথ্য তেমনটাই। তথ্য, বিহার ভোট প্রসঙ্গে এআই, ডিপফেক-ও বাড়াচ্ছে ভাবনা। বৃহস্পতিবার নির্বাচন কমিশন, বিহারের রাজনৈতিক দল, প্রার্থী, নেতাদের নির্দেশিকা জারি করে সতর্ক করেছে, ভোট প্রচার-সহ কোনও বিষয়েই যেন বিপরীত রাজনৈতিক দলের প্রার্থীদের অপদস্থ করতে এআই-ডিপফেক ব্যবহার না করা হয়।
হাতে বাকি আর মাত্র এক মাস। নির্বাচনের আগে ক্রমশ পারদ চড়ছে বিহারে। নজরে রয়েছেন রাষ্ট্রীয় জনতা দল (আরজেডি)-এর নেতা তেজস্বী যাদব, জন সুরজ পার্টির প্রশান্ত কিশোর, জনতা দল (জেডিইউ)-এর নীতিশ কুমার, লোক জনশক্তি পার্টির চিরাগ পাসওয়ান। এরই মাঝে ভোটের আলো নিজের দিকে টানতে বড়সড় প্রতিশ্রুত করে বসলেন তেজস্বী। সাংবাদিক সম্মেলনে তাঁর দাবি, যদি বিহারের মানুষ বিরোধী জোটকে ক্ষমতায় আনে তাহলে বিহারের প্রতিটি পরিবারের একজনকে সরকারি চাকরা দেওয়া হবে। তিনি আরও আশ্বস্ত করেছেন, সরকার গঠনের ২০ দিনের মধ্যে এটি বাস্তবায়িত করার জন্য আইন আনা হবে।
বৃহস্পতিবার তিনি বলেন, “আমরা আজ একটি ঐতিহাসিক ঘোষণা করতে যাচ্ছি। অনেকেই জানতে চেয়েছিলেন আমরা কীভাবে বিহারকে এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই। ২০ বছর ধরে, এই অলস সরকার কখনও বুঝতে পারেনি যে বেকারত্বই সবচেয়ে বড় সমস্যা।” তাঁর অভিযোগ, এনডিএ শরিক জেডিইউ এবং বিজেপি চাকরির প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে না, বরং বেকার ভাতা দিচ্ছে। তেজস্বী বলেন, “বিহারের যে কোনও পরিবার যাদের সরকারি চাকরি নেই, তারা একটি নতুন আইনের মাধ্যমে একটি চাকরি পাবে। সরকার গঠনের ২০ দিনের মধ্যে, আমরা এই আইনটি আনব। এবং ২০ মাসের মধ্যে, আমরা নিশ্চিত করব যে বিহারের এমন একটি পরিবারও যেন না থাকে যেখানে সরকারি চাকরি নেই।” বিহার বিধানসভার বিরোধী দলনেতার দাবি, তাঁর এই দাবি তথ্যের উপর ভিত্তি করেই। তিনি বলেন, “এটা আমার অঙ্গীকার। এটা করা যেতে পারে। এটা কোন জুমলাবাজি নয়।”
তিনি আরও বলেন, “বিহারের মানুষ এবার পরিবর্তন চায়। সামাজিক ন্যায়বিচারের পাশাপাশি, আমরা বিহারের মানুষের জন্য অর্থনৈতিক ন্যায়বিচারও নিশ্চিত করব। এটি করা যেতে পারে, এর জন্য ইচ্ছাশক্তি প্রয়োজন। তাঁরা আমাদের ঘোষণাগুলি নকল করা শুরু করেছে।”
বিহার ভোট প্রসঙ্গে নজর আরও একজনের দিকে। প্রশান্ত কিশোর। একসময়ের ভোটকুশলী। ফলাফল ঈর্ষনীয়। একাধিক রাজনৈতিক দলকে নিখুঁট রুট ম্যাপ বানিয়ে ভোট বৈতরণী পার করেছেন তিনি। তবে সাফল্যের চূড়ায় দাঁড়িয়েই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, ভোটকুশলী হিসেবে আর নয়, তিনি এবার সরাসরি রাজনীতির ময়দানে ঝাঁপাবেন। নেতা হয়ে, প্রার্থী হয়ে। দলও গড়ে ফেলেন। জন সূরজ। আগেই বিহারে তাঁর দল ছোট্ট পরীক্ষা দিয়েছে। তবে সামনেই বিধানসভা নির্বাচন যে পিকে-র দলের জন্য অ্যাসিড টেস্ট, তা নিয়ে সন্দেহ নেই।
বিহার ভোটের নির্ঘন্ট প্রকাশিত হওয়ার পর থেকেই জল্পনা তুঙ্গে ওঠে, পিকে-র দল কোথায় কোথায় প্রার্থী দিচ্ছে? সব আসনে? নাকি ভোট-সমঝোতা হবে কোনও রাজনৈতিক দলের সঙ্গে? চীরাগ পাসওয়ানের নামও সামনে আসে। আবার শোনা যায়, প্রশান্ত কিশোর নিজে, দু'টি কেন্দ্র থেকে ভোট লড়বেন। তার মধ্যে একটি কেন্দ্র, যেখানে মুখমুখি লড়াই করবেন তেজস্বী যাদবের সঙ্গে।
এসব জল্পনার মাঝেই জানা গেল, শুক্রবার বিহার ভোটের জন্য প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করেছে জন সূরজ। মনে করা হচ্ছে, এটি প্রথম প্রার্থী তালিকা। কারণ মাত্র ৫১ জনের নাম রয়েছে তালিকায়। রয়েছেন প্রাক্তন আমলা, আইনজীবী, চিকিৎসক। একই সঙ্গে উল্লেখ্য, ৫১ জনের তালিকায় নাম নেই প্রশান্ত কিশোরের। বেগুসরাই, চম্পারণ, মুজফফরপুর, মধুবনী-সহ মোট ৫১ কেন্দ্রের প্রার্থী তালিকা প্রকাশ্যে এনেছে জেএসপি। পাটনা বিশ্ববিদ্যালয় এবং নালন্দা ওপেন ইউনাভার্সিটির প্রাক্তন ভিসি কেসি সিনহা, যিনি গণিতের উপর তাঁর জনপ্রিয় বইয়ের সিরিজের জন্য বেশি পরিচিত, তিনি পাটনার কুমহরার আসন থেকে পিকে-র দলের প্রার্থী, অন্যদিকে অবসরপ্রাপ্ত আইপিএস অফিসার আরকে মিশ্রকে দারভাঙ্গা থেকে প্রার্থী করা হয়েছে। সিনিয়র অ্যাডভোকেট ওয়াইভি গিরিকে মাঝি থেকে প্রার্থী করা হয়েছে, এবং ভোজপুরি অভিনেতা রীতেশ পান্ডেকে কারগাহার আসন থেকে প্রার্থী করা হয়েছে। তালিকায় নিজ নিজ এলাকায় জনপ্রিয় একাধিক চিকিৎসক রয়েছেন।