• বহুদিন ধরে আটকে থাকা বরাদ্দ পেল বাংলা, পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের প্রথম কিস্তির ৬৮০ কোটি টাকা রাজ্য...
    আজকাল | ১০ অক্টোবর ২০২৫
  • আজকাল ওয়েবডেস্ক: ২০২৫-২৬ অর্থবর্ষে পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের প্রথম কিস্তির টাকা পশ্চিমবঙ্গকে দিল কেন্দ্র। নতুন অর্থবর্ষের তিনমাস কেটে গেলেও পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের টাকা কেন্দ্র আটকে রেখেছে বলে অভিযোগ ছিল এতদিন। নানা অজুহাত দেখিয়ে রাজ্যের প্রাপ্য অর্থ (চলতি অর্থবর্ষের) এই টাকা কেন্দ্র আটকে রেখেছিল। অবশেষে এই তহবিলের ৬৮০.৭১ কোটি টাকা কেন্দ্রের তরফে দেওয়া হয়েছে বাংলাকে। ত্রিস্তরীয় পঞ্চায়েতের একাধিক পরিকাঠামো নির্মাণে এই টাকা ব্যবহার করা হবে। রাজ্য যোগ্যতা অর্জন করতে পারিনি বলে চলতি অর্থবর্ষের এই টাকা কেন্দ্র আটকে রেখেছিল। রাজ্যকে সেই জন্য এক কোটি টাকা পেনাল্টিও দিতে হয়েছে।

    বৃহস্পতিবার প্রেস ইনফরমেশন ব্যুরো একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে জানিয়েছে, ভারত সরকার ২০২৫-২৬ অর্থবর্ষের জন্য পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের গ্রামীণ স্থানীয় সংস্থা (RLB) / পঞ্চায়েতি রাজ প্রতিষ্ঠান (PRI) এর জন্য পঞ্চদশ অর্থ কমিশন (XV-FC) এর অধীনে নির্ধারিত নয় এমন খাতে (মৌলিক) অনুদানের প্রথম কিস্তি হিসেবে ৬৮০.৭১ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। রাজ্যজুড়ে যোগ্য ৩,২২৪টি গ্রাম পঞ্চায়েত, ৩৩৫টি ব্লক পঞ্চায়েত এবং ২১টি জেলা পরিষদের জন্য ৬ অক্টোবর এই অনুদান প্রদান করা হয়েছিল।

    পূর্ববর্তী ২০২৪-২৫ অর্থবর্ষ এবং চলতি অর্থবর্ষে পশ্চিমবঙ্গকে মোট ৪,১৮১.২৩ কোটি টাকা সুপারিশ করা হয়েছিল এবং বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল, যার মধ্যে ২,০৮২.১৩ কোটি টাকা মুক্ত অনুদান হিসেবে এবং ২,০৯৯.১০ কোটি টাকা আবদ্ধ অনুদান হিসেবে ছিল। এই বরাদ্দ রাজ্যের পঞ্চায়েতি রাজ প্রতিষ্ঠানগুলির মাধ্যমে তৃণমূল পর্যায়ের শাসনব্যবস্থা এবং পরিষেবা প্রদানকে শক্তিশালী করার জন্য ভারত সরকারের প্রতিশ্রুতির অংশ।

    বেতন এবং স্থাপনা খরচ বাদ দিয়ে পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের নির্ধারিত নয় (আন-টায়েড) এমন খাতে গ্রামীণ স্থানীয় সংস্থাগুলিকে সংবিধানের একাদশ তফসিলের ২৯টি বিষয়ের জন্য অবস্থান-নির্দিষ্ট উন্নয়ন চাহিদা পূরণের নমনীয়তা প্রদান করে। এই তহবিলগুলি রাস্তা এবং ফুটপাত নির্মাণ এবং রক্ষণাবেক্ষণ, এলইডি এবং সৌর রাস্তার আলো, গ্রামের খেলার মাঠ, পরিবেশ সুরক্ষা, আয়বর্ধক কার্যক্রম, ডিজিটাল সংযোগ, শ্মশান রক্ষণাবেক্ষণ ইত্যাদি উদ্যোগগুলির জন্য বরাদ্দ করা হয়। অন্যদিকে, সুনির্দিষ্ট খাতে (টায়েড ফান্ড) অনুদানগুলি অপরিহার্য পরিষেবাগুলির জন্য বরাদ্দ। যার মধ্যে রয়েছে স্যানিটেশন এবং খোলা মলত্যাগ মুক্ত (ODF) অবস্থা রক্ষণাবেক্ষণ, পানীয় জল সরবরাহ, বৃষ্টির জল সংগ্রহ, জলের পুনর্ব্যবহার, ঝড়ের জল নিষ্কাশন, জমা জলের নিকাশি ব্যবস্থাপনা ইত্যাদি। অর্থ কমিশনের বরাদ্দের ৬০% খরচ করতে হয় সুনির্দিষ্ট খাতে (টায়েড ফান্ড)। তার মধ্যে থাকে পানীয় জল সরবরাহ, জল পরিশোধনের পরিকাঠামো নির্মাণ, কঠিন-তরল-প্লাস্টিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা পরিকাঠামো এবং শৌচাগার নির্মাণ ও রক্ষণাবেক্ষণের কাজ। ৪০% অর্থ বরাদ্দ থাকে নির্ধারিত নয় (আন-টায়েড) এমন খাতে। 

    ২০২৫-২৬ অর্থবর্ষ শেষ হয়ে গেলে কেন্দ্রীয় সরকার আর পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের টাকা রাজ্যকে দিতে পারবে না। এর ফলে রাজ্য কেন্দ্রের কাছে বার বার আবেদন জানায়। এই টাকা রাজ্যের কোষাগারের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। কারণ কেন্দ্রের আর্থিক সহায়তা না পেলে, রাজ্যের উন্নয়নমূলক কাজগুলি ব্যাহত হতে পারে।  ২০২১-২২ থেকে ২০২৫-২৬ অর্থবর্ষের মধ্যে অর্থ কমিশনের মোট ১০,৩২০ কোটি টাকা পাওয়ার কথা রাজ্যের। 

    আধিকারিকদের একাংশ জানাচ্ছেন, ২০২৬-র ১ এপ্রিল থেকে ষোড়শ অর্থ কমিশনের কাজ শুরু করার কথা। গত ফেব্রুয়ারিতে অর্থ কমিশনের বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি আগের তুলনায় আরও বেশি অর্থের দাবি করেছিলেন (বিজেপিশাসিত-সহ একাধিক রাজ্য একই দাবি করেছিল) অর্থ কমিশনের থেকে। যা বিবেচনায় রাখার আশ্বাসও দিয়েছেন অর্থ কমিশনের আধিকারিকেরা। 
  • Link to this news (আজকাল)