• কমছে জল, বাড়ছে সাপ, ঘুরে বেড়াচ্ছে ভয়ঙ্কর কিং কোবরা থেকে অজগর, কামড়ে অসুস্থ ৭ জন...
    আজকাল | ১০ অক্টোবর ২০২৫
  • আজকাল ওয়েবডেস্ক: জল কমতেই বেড়েছে সাপের উপদ্রব। গত পাঁচদিনে আলিপুরদুয়ার জেলার বিভিন্ন এলাকায় সাপের কামড়ে অসুস্থ এক মহিলা-সহ ৭ জন। স্বাভাবিকভাবেই ডাক পড়ছে সাপুড়িয়াদের, খোঁজ করা হচ্ছে বন কর্মীদের। তবে এখনও কেউ সাপের কামড়ে মারা যায়নি বলেই জানা গিয়েছে। রবিবার ৫ অক্টোবর সকাল থেকে তোর্সা নদীর জলে ভেসে যায় আলিপুরদুয়ার জেলার বিস্তীর্ণ এলাকা।

    ভুটান পাহাড় থেকে নেমে আসা জলস্রোতে ভেসে যায় গরু বাছুর থেকে শুরু করে জঙ্গলের প্রাণীরা। জঙ্গলের ভেতরে জল প্রবেশ করে ভাসিয়ে নিয়ে যায় গণ্ডার ও হরিণ। জলের তোড়ে নদীতে আটকে পড়ে হাতির পাল। এর পাশাপাশি ভুটানের পাহাড়ি নদীর জলের স্রোত এই জেলায় ঢুকে পড়ায় তার জেরে ভেসে গিয়েছে প্রচুর গাছ। ভেঙেছে ঘরবাড়ি। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন পাহাড় থেকে সমতলের মানুষ।

    এই পরিস্থিতিতে সর্বত্রই বেড়ে চলেছে সাপ ও পোকামাকড়ের উপদ্রব। জলের জন্য  নিজের আস্তানা ছেড়ে আশ্রয়ের খোঁজে লোকালয়ে চলে আসছে  নানা ধরনের বিষাক্ত সাপ। ইতিমধ্যেই আলিপুরদুয়ার জেলায় গত পাঁচদিনে ৭ জনের সাপের কামড়ে ঘটনা সামনে এসেছে। এক মহিলা-সহ ৭ জনকে সাপে কামড়েছে। তাঁদের মধ্যে ৩ জন কালচিনি, ২ জন কুমারগ্রাম এবং একজন তপসিখাতা ও আরেকজন সলসলাবাড়ি এলাকার বাসিন্দা বলে জানা গিয়েছে।

    যদিও সঠিক সময়ে চিকিৎসা শুরু হওয়ার জন্য কারুরই প্রাণহানি হয়নি। তবে বন্যা পরিস্থিতিতে সাপের আতঙ্কে দিন কাটছে জেলার বিভিন্ন এলাকার মানুষের। বিশেষ করে জঙ্গলের আশেপাশে যাদের বাড়ি তাঁরা সবথেকে বেশি চিন্তায় আছেন।‌ এদিকে সাপের উপদ্রব বেড়ে যাওয়ায় ঘাম ছুটছে সাপ ধরতে পটু লোকেদের।

    জানা গিয়েছে, প্রতিদিন জেলার কোনও না কোনও জায়গা থেকে সাপ উদ্ধার হচ্ছে। কোথাও পাইথন আবার কোথাও কিং কোবরা। সেই ঘটনায় একদিকে যেমন বনদপ্তরের কর্মীদের ডাক পড়ছে তেমনি ডাক পড়ছে বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সদস্যদের। প্রায়ই বিভিন্ন জায়গায় ঘরে ঢুকে পড়ছে বিষাক্ত সাপ। ডাক পড়তেই সাপ ধরতে ছুটে যাচ্ছেন বনকর্মী এবং স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সদস্যরা।

    সাপের কামড়ের এই বিষয়টি নিয়ে আলিপুরদুয়ার জেলা হাসপতালের সুপার ডা: পরিতোষ মণ্ডল বলেন, 'গত ৩-৪ দিনে আলিপুরদুয়ার জেলায় সাতজন সাপের কামড় খাওয়া রোগী জেলা হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য এসেছেন। নানা কারণে বাড়ির পাশের জঙ্গল থেকে বিষাক্ত সাপ বেড়িয়ে তাঁদের কামরায়। তবে পরিবারের লোকজন অবহেলা না করে দ্রুত হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে আসায়, কারুর কোনো প্রাণহানি হয়নি।' 

    এই বিষয়ে আলিপুরদুয়ার বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের এক আধিকারিক জানান, 'সারাবছরই সাপ উদ্ধারের ঘটনা ঘটে থাকে। বিশেষ করে পাইথন জঙ্গল থেকে লোকালয়ে চলে আসে। কিন্তু এই ক'দিনে পাইথনের পাশাপাশি বেশ কিছু ছোট মাপের কিং কোবরা বা শঙ্খচূড় সাপ উদ্ধার করা হয়েছে। সাধারণ মানুষ বাড়ির পাশে সাপ দেখলেই আমাদের খবর দিচ্ছেন। বনদপ্তরের কর্মীরা খবর পেতেই ঘটনাস্থলে গিয়ে সাপ উদ্ধার করে নিয়ে আসছেন। উদ্ধার হওয়া সাপগুলিকে বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের উন্মুক্ত পরিবেশে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।'
  • Link to this news (আজকাল)