আজকাল ওয়েবডেস্ক: আসন নিয়ে বচসার জেরে চলন্ত লোকাল ট্রেনের মহিলা কামরায় পেপার স্প্রে ছেটানোর অভিযোগ উঠল এক যুবতীর বিরুদ্ধে। এই নজিরবিহীন ঘটনায় তীব্র চাঞ্চল্য ছড়ায় শিয়ালদহগামী একটি লোকাল ট্রেনে। যুবতীর ছোড়া স্প্রে-র ঝাঁঝে কামরার মধ্যে থাকা শিশু-সহ একাধিক যাত্রী কাশতে শুরু করেন। অনেকের শ্বাসকষ্টও শুরু হয়। এই নাটকীয় মুহূর্তের ভিডিও রেকর্ডিং করেন ঘটনাস্থলে উপস্থিত অন্য যাত্রীরা।
ভাইরাল হওয়া সেই ভিডিওতে দেখা গিয়েছে, সবুজ কুর্তি পরা এক যুবতী। তাঁকে ঘিরে ধরে ক্ষোভ উগরে দিচ্ছেন অন্য যাত্রীরা। কামরায় শিশু থাকা সত্ত্বেও কেন তিনি এমন কাণ্ডজ্ঞানহীন কাজ করলেন, সেই প্রশ্ন তোলেন তাঁরা। ভিডিওতে এক জনকে বলতে শোনা যায়, "এখানে বাচ্চারা রয়েছে, আপনি এটা কী করলেন?"
ঘটনার বিবরণ দিয়ে এক প্রত্যক্ষদর্শী নেটমাধ্যমে জানান, অভিযুক্ত যুবতী শিয়ালদহ থেকে ট্রেনে উঠেছিলেন। এর পরেই এক সহযাত্রীর সঙ্গে বসার জায়গা নিয়ে তাঁর তুমুল বচসা শুরু হয়। অভিযোগ, নিজের পছন্দমতো আসন না পেয়েই তিনি ব্যাগ থেকে পেপার স্প্রে-র বোতল বার করে অন্য যাত্রীর মুখে স্প্রে করার চেষ্টা করেন। সেই সময় অন্য এক যাত্রী তাঁকে বাধা দিতে গেলে আক্রোশে ফেটে পড়েন ওই যুবতী। এরপর ভিড়ে ঠাসা কামরার মধ্যেই স্প্রে ছুড়তে থাকেন।
প্রত্যক্ষদর্শীর পোস্টে লেখা হয়েছে, "সঙ্গে সঙ্গে সকলের কাশি শুরু হয়ে যায়, সকলের গলা নাক অসম্ভব জ্বলতে থাকে। কামরায় থাকা দু'টি শিশু অসুস্থ বোধ করতে শুরু করে।" এর পরেই যাত্রীরা ওই যুবতীকে ঘিরে ধরে তাঁর এই বেপরোয়া আচরণের কৈফিয়ত চান। পরে তাঁকে সরকারি রেল পুলিশের (জিআরপি) হাতে তুলে দেওয়া হয়।
জিআরপি সূত্রে খবর, অভিযুক্ত যুবতীকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। পুরো ঘটনাটির তদন্ত শুরু হয়েছে।এই ঘটনায় অভিযুক্তের কড়া শাস্তির দাবি তুলেছেন যাত্রীরা। তাঁদের মতে, আত্মরক্ষার জন্য ব্যবহৃত পেপার স্প্রে কখনওই অন্যকে আক্রমণের অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা উচিত নয়। নেটমাধ্যমে এক জন ঘটনার প্রতিবাদ করে লিখেছেন, "যেখানে নিজেকে সত্যিই অসুরক্ষিত মনে হবে, সেখানেই পেপার স্প্রে ব্যবহার করা উচিত। কিন্তু এই মেয়েটি সমস্ত সীমা লঙ্ঘন করেছে।" অন্য এক জনের মন্তব্য, "এই জঘন্য কাজটা করার পরেও তাঁর মধ্যে কোনও অনুশোচনা দেখা যায়নি। পুরোটাই ইচ্ছাকৃত অপরাধ।"
এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে নেটমাধ্যমে নিন্দার ঝড় উঠেছে। সাধারণ মানুষের উপর এহেন আক্রমণের ঘটনায় অনেকেই স্তম্ভিত। এক জন লিখেছেন, "নিরীহ মানুষের উপর আক্রমণের জন্য পেপার স্প্রে-র অপব্যবহার করা হল।" অন্য এক জনের কটাক্ষ, "মেয়েদের সুরক্ষার জন্য তৈরি হওয়া আইন এবং গ্যাজেটের কী ভাবে আজকাল অপব্যবহার করা হচ্ছে, এটা তার শ্রেষ্ঠ উদাহরণ।" এক জন আবার প্রশ্ন তুলেছেন, "এই হিংসাত্মক মনোভাব কোথা থেকে আসছে? পশ্চিমবঙ্গে পেপার স্প্রে-র এমন ব্যবহার এই প্রথম শুনলাম।" সকলেরই একযোগে দাবি, "এটা একটা অপরাধ। ওকে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া উচিত।"