• ‘আগুন নিয়ে খেলবেন না’ এসআইআর নিয়ে কমিশনকে হুঁশিয়ারি মমতার
    দৈনিক স্টেটসম্যান | ১০ অক্টোবর ২০২৫
  • এসআইআর নিয়ে ফের হুঁশিয়ারি দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আগুন নিয়ে খেলবেন না, বৃহস্পতিবার সাংবাদিক বৈঠক থেকে হুঙ্কার ছাড়েন মুখ্যমন্ত্রী। বৈঠকে তিনি বলেন,‘তাড়াহুড়োয় কাজ করতে গিয়ে যদি কারও নাম বাতিল হয়, তাহলে বলব, আগুন নিয়ে খেলবেন না। এখন বাংলায় দুর্যোগ চলছে। বন্যায় মানুষের ঘরবাড়ি, কাগজপত্র ভেসে গিয়েছে। কোথা থেকে মানুষ এখন কাগজ দেবে।‘

    পুজোর পর নদিয়ার দুই বাসিন্দাকে এনআরসি-র নোটিস পাঠানো হয়েছে। এদিনের বৈঠকে তিনি সেই তথ্য তুলে ধরেন। এসআইআরের নামে এনআরসির নোটিস পাঠানো হচ্ছে, অভিযোগ মুখ্যমন্ত্রীর। এর আগেও অসম সরকার বাংলার বাসিন্দাদের এনআরসি-র নোটিস পাঠিয়েছে। কোন অধিকারে অসম সরকার এই কাজ করছে, তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান।

    তিনি বলেন, ‘এসআইআর-এর নামে কেন এনআরসি নোটিস পাঠানো হচ্ছে। কোন অধিকারে বাংলার মানুষকে অসম সরকার এই নোটিস পাঠাচ্ছে? সামনে এসআইআর আর পিছনে কী? এনআরসি করবেন গায়ের জোরে? পারবেন না কোনওদিন।‘ এসআইআর-এর নামে ভোট কাটার ষড়যন্ত্র চলছে বলে মন্তব্য করেন তিনি। কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলিকে গৈরিকীকরণের অভিযোগও এদিন করেন মুখ্যমন্ত্রী।

    আগামী ২ নভেম্বর থেকে রাজ্যে শুরু হতে পারে এসআইআর। বৃহস্পতিবার কোলাঘাটে পূর্ব মেদিনীপুর, বাঁকুড়া এবং ঝাড়গ্রাম জেলার বিএলও এবং ইআরও-এইআরও-দের সঙ্গে বৈঠক করে নির্বাচন কমিশনের একটি প্রতিনিধি দল। সেই বৈঠকেই কমিশন এমন ইঙ্গিত দিয়েছে বলে খবর।  বৈঠকের পরেই নবান্নে সাংবাদিক বৈঠক থেকে কমিশনকে একহাত নেন মুখ্যমন্ত্রী। বৈঠকের নামে বিএলওদের ডেকে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ করেছেন তিনি। রাজ্যকে বাদ দিয়ে কয়েকজন অফিসারকে নিয়ে বৈঠক করার অভিযোগও তুলেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

    এমনকী রাজ্যের নির্বাচনী আধিকারিক মনোজ আগরওয়ালের বিরুদ্ধেও এদিন দুর্নীতির অভিযোগ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি   বলেন, ‘বাঁশের চেয়ে কঞ্চি দড়! রাজ্যের সিইওর বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ আছে, সময় হলে বলব, তিনি নিজে নানা দুর্নীতিতে অভিযুক্ত।‘

    মুখ্যমন্ত্রীর প্রশ্ন, ‘এখনও তো ভোট ঘোষণা হয়নি, তাহলে কীসের ভিত্তিতে এভাবে জেলায় জেলায় বৈঠক করছে কমিশন?’ মুখ্যমন্ত্রীর দাবি করেছেন, ‘এসআইআর-এর নাম করে এনআরসি চালু করার চেষ্টা হচ্ছে!’ এসআইআরের নামে ভোট কাটার চক্রান্ত কথাও এদিন তিনি বলেন। সামগ্রিকভাবে কমিশনের নিরপেক্ষতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন মুখ্যমন্ত্রী।

    দেড় কোটি রোহিঙ্গার নাম বাদ দেওয়ার হুমকি দেন বনগাঁর সাংসদ শান্তনু ঠাকুর। বিজেপি সাংসদের এই মন্তব্য পরিপ্রেক্ষিতে মমতা বলেন, ‘এসআইআর শুরুর আগে বিজেপির একজন মন্ত্রী কী করে বলে, দেড় কোটি নাম বাদ দেওয়া হবে। কমিশনের কাছে আমরা নিরপেক্ষতা আশা করি। সরকার ও বিরোধী মিলেই গণতন্ত্র। সংবিধানে সাধারণ মানুষের অধিকার রয়েছে, সেটা খর্ব করা বরদাস্ত করব না। রাজবংশী হোক বা মতুয়া, একজন ভোটারের নাম বাদ গেলে পাল্টা অ্যাকশন হবে।‘

    বুধবারের পর বৃহস্পতিবারও অমিত শাহকে ‘মীরজাফর’ বলে কটাক্ষ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। ‘স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী নিজে একটা মিটিংয়ে ইন্সট্রাকশন দিয়ে গেছেন অনেক নাম বাদ দেব। নাম বাদ দেওয়ার ওরা কে?’ হুঙ্কার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের।

     
  • Link to this news (দৈনিক স্টেটসম্যান)