গণিতজ্ঞ থেকে চিকিৎসক! বিহারে প্রশান্ত কিশোরের প্রার্থী তালিকায় চমক
প্রতিদিন | ১০ অক্টোবর ২০২৫
বুদ্ধদেব সেনগুপ্ত, নয়াদিল্লি: বিহার ভোটে বেকারদের মনজয়ে মরিয়া লালুপুত্র। ক্ষমতায় এলে পরিবারপিছু একজনকে চাকরি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিলেন তেজস্বী যাদব। তাঁর এই ঘোষণায় চাপে এনডিএ শিবির। অন্যদিকে, বৃহস্পতিবারই বিহারের দুই দফার নির্বাচনের জন্য প্রথম প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করল প্রশান্ত কিশোরের জন সুরজ পার্টি। পিকের এই নতুন দলের ৫১ জন প্রার্থীর তালিকায় রাজনীতির প্রচলিত মুখের বদলে দেখা গেল একেবারে আলাদা ছবি। প্রার্থী হয়েছেন বিশিষ্ট গণিতজ্ঞ, অভিজ্ঞ আইনজীবী, চিকিৎসক, প্রাক্তন আমলা এবং অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ অফিসাররা।
অন্যদিকে, দলের ঘোষিত প্রথম তালিকায় প্রায় ১৬ শতাংশ প্রার্থী মুসলিম এবং ১৭ শতাংশ অতি পিছিয়ে পড়া সম্প্রদায়ের মানুষ। প্রার্থী বাছাইয়ে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে তাঁদের “স্বচ্ছ ভাবমূর্তির” উপর রাজনৈতিক দুর্নীতির বিরুদ্ধে জোরাল অবস্থান নেওয়া প্রশান্ত কিশোর এদিন স্পষ্ট জানান, দল চাইছে এমন প্রার্থী যাঁদের সমাজে বিশ্বাসযোগ্যতা আছে। সবচেয়ে নজর কেড়েছেন প্রখ্যাত গণিতজ্ঞ কে সি সিনহা। বিহার ও অন্যান্য রাজ্যের স্কুলে বছরের পর বছর ধরে তাঁর লেখা পাঠ্যপুস্তক পড়ানো হয়। তিনি প্রার্থী হয়েছেন পাটনার কুমহারার আসন থেকে। তিনি পাটনা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্যও। মানঝি আসন থেকে প্রার্থী হয়েছেন বিহারের বর্ষীয়ান আইনজীবী ওয়াই বি গিরি। তিনি পাটনা হাই কোর্টের সিনিয়র অ্যাডভোকেট। একাধিক গুরুত্বপূর্ণ মামলায় যুক্ত ছিলেন তিনি। অতীতে তিনি বিহার সরকারের অ্যাডিশনাল অ্যাডভোকেট জেনারেল এবং কেন্দ্রের পক্ষ থেকে পাটনা হাই কোর্টে অ্যাডিশনাল সলিসিটর জেনারেলের দায়িত্বও সামলেছেন। মুজাফ্ফরপুর আসন থেকে জন সুরাজ পার্টির প্রার্থী হয়েছেন অমিত কুমার দাস। তিনি পাটনা মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের প্রাক্তনী। বহু বছর ধরে তিনি ও তাঁর স্ত্রী গ্রামাঞ্চলে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা ছড়িয়ে দেওয়ার কাজ করছেন। তাঁর নিজের হাসপাতালও আছে মুজাফ্ফরপুরে।
বিহারে মোট ভোটার ৭ কোটি ৪১ লক্ষ। এরই মধ্যে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, ক্ষমতায় এলে পাঁচ বছরে এক কোটি মানুষের কাজের সুযোগ করে দেবেন। এবার তারই পাল্টা প্রতিশ্রুতির পালা। অপেক্ষা ছিল বিরোধী জোটের নেতা তেজস্বী যাদব কী ঘোষণা করেন সেই দিকে। বৃহস্পতিবার লক্ষ্মীবারে তেজস্বী কথা দিলেন, ক্ষমতায় এলে বিহারের প্রতিটি পরিবারের একজন সরকারি চাকরি পাবেন। চুম্বকে এটা বোঝা যাচ্ছে, বেকারত্ব ও কর্মসংস্থান এবার বিহার ভোটের বড় ইস্যু। এই প্রতিশ্রুতি আরজেডির নির্বাচনী প্রচারে এখনও পর্যন্ত সবচেয়ে আলোচিত বিষয়। রাজনৈতিক মহলের ধারণা, তেজস্বীর এই ঘোষণা রাজ্যের ভোটের সমীকরণে বড় প্রভাব ফেলতে পারে। তিনি বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য পরিষ্কার, বিহারের প্রতিটি পরিবারে অন্তত এক জনের হাতে হোক স্থায়ী কাজ। উন্নয়ন তখনই সম্ভব, যখন বেকারত্ব কমবে।’
আগামী নভেম্বরেই বিহারে বিধানসভা নির্বাচন। দুই দফায় ছয় এবং ১১ নভেম্বর ভোট গ্রহণ হবে। আর গণনা হবে ১৪ নভেম্বর। ভোটের আগে এই প্রতিশ্রুতি ভোটারদের মধ্যে উন্মাদনা তৈরি করেছে।