বাংলাদেশে ভেসে ওঠা গণ্ডার কি জলদাপাড়ার? ভাইরাল ভিডিও ঘিরে উদ্বেগে পশুপ্রেমীরা
প্রতিদিন | ১০ অক্টোবর ২০২৫
রাজ কুমার, আলিপুরদুয়ার: রবিবারের ভয়ংকর দুর্যোগে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে উত্তরবঙ্গে। একাধিক জায়গায় প্লাবনের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। সবথেকে বেশি ক্ষতি হয়েছে জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যান-সহ আশেপাশের বনাঞ্চলগুলিতে। একদিকে ভারী বৃষ্টি, অন্যদিকে ভুটান থেকে আসা জলের তোড়ে বহু বন্যপ্রাণীকে ভেসে যেতে দেখা যায়। এমনকী ভেসে যায় একাধিক গণ্ডারও। শীলতোর্সা নদীতে এই ছবি দেখা গিয়েছে। শুধু তাই নয়, বনাঞ্চলের জল দাঁড়িয়ে যাওয়ার ফলে লোকালয়েও ঢুকে পড়ে বহু গণ্ডার। পরিস্থিতির উন্নতি হলেও বন্যপ্রাণের অবস্থা নিয়ে উদ্বেগে রয়েছেন পশুপ্রেমীরা। এর মধ্যেই বাংলাদেশের কুড়িগ্রামের একটি ভিডিও সমাজ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।
যেখানে একটি গণ্ডারকে মৃত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখা যাচ্ছে। যদিও ভাইরাল হওয়া ভিডিওটির সত্যতা যাচাই করেনি সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল। কিন্তু ভাইরাল ভিডিওতে এক ব্যক্তিকে বলতে শোনা যাচ্ছে, ”ভারত থেকে বন্যার সঙ্গে একটি গণ্ডার ভেসে এসেছে কুড়িগ্রাম জেলায়।” তবে সেটি কীভাবে ভেসে এসেছে, তা জানেন না বলেই দাবি করছেন ওই ব্যক্তি। এমনকী গণ্ডারটি উত্তরের কোনও উদ্যান থেকে ভেসে গিয়েছে কি না তাও স্পষ্ট নয়। তবে একটি সূত্রের দাবি, বাংলাদেশে উদ্ধার হওয়া মৃত গণ্ডারটি জলদাপাড়ার। সম্ভবত শীলতোর্সা নদী হয়েই গণ্ডারটি ভেসে যেতে পারে।
অন্যদিকে এখনও বন্ধ রয়েছে জলদাপাড়া। বিস্তীর্ণ জঙ্গল আপাতত বিপন্মুক্ত। কোথাও আর জল জমে নেই। তবে সামগ্রিক অবস্থা তেমন ভালো নয়। এখনও জঙ্গলের ভিতরের কোর এলাকায় প্রবেশ করা যায়নি। কারণ, জঙ্গলপথে যাতায়াতের জন্য মূলত কাঠের সেতু থাকে। বৃষ্টির জলে হলং সেতু-সহ একাধিক কাঠের ব্রিজ ভেঙে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়েছে। তাই আরও কোনও বন্যপ্রাণীর মৃত্যু হয়ছে কি না, তা এখনও নিশ্চিত নয় জলদাপাড়া কর্তৃপক্ষ।
কীভাবে দুর্যোগ সামলে ঘুরে দাঁড়াবে, কীভাবে ফের অরণ্যের সুরক্ষা ফিরিয়ে আনা যাবে, সেসব নিয়ে গত মঙ্গলবারেই উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে বসে জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যান কর্তৃপক্ষ। বৈঠকের পর জলপাড়ার ডিএফও প্রবীণ কাসওয়ান জানান, ”আমরা সামগ্রিক পরিস্থিতি নিয়ে একটি পর্যালোচনা করেছি। পুনর্গঠনের কাজ কীভাবে হবে, তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। তবে এখনই পর্যটন চালুর কোনও সম্ভাবনা নেই।” এর মধ্যেই বাংলাদেশের মাটিতে মৃত অবস্থায় একটি গণ্ডার উদ্ধারকে কেন্দ্র করে পশুপ্রেমীদের মধ্যে বেড়েছে আরও ক্ষোভ।