পুলিশকে পিটিয়ে আসামী ছিনতাইয়ের অভিযোগ আউশগ্রামে! ধৃত তৃণমূল নেতা
প্রতিদিন | ১০ অক্টোবর ২০২৫
ধীমান রায়, কাটোয়া: পুলিশকে পিটিয়ে আসামী ছিনতাইয়ের অভিযোগ। পূর্ব বর্ধমান জেলার আউশগ্রামে গ্রেপ্তার তৃণমূল নেতা। ধৃতের নাম গোলাম মোল্লা। বাড়ি আউশগ্রামের বেলেমাঠ গ্রামে। জানা গিয়েছে, গোলাম মোল্লা আউশগ্রাম ২ ব্লকের অমরপুর অঞ্চলে দলের সভাপতির পদে রয়েছেন।
আউশগ্রাম ২ ব্লক তৃণমূল সভাপতি আব্দুল লালন বলেন, “আমাদের দলের নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং নেতা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় আগেই জানিয়ে দিয়েছেন দলীয় পদে থেকে আমরা কখনই প্রশাসনের বিরোধীতা করব না। এই অবস্থায় যদি কেউ প্রশাসনের কাজে বাধা দিতে যায় অথবা প্রশাসনের গায়ে হাত তোলে, তাহলে প্রশাসন আইনানুগ ব্যবস্থা নেবে।” তিনি আরও বলেন, “এক্ষেত্রে কঠিন সিদ্ধান্ত নিতেও পিছপা হবে না দল।”
জানা গিয়েছে, ঘটনার সূত্রপাত গত ২৭ সেপ্টেম্বর। অমরপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রাক্তন প্রধান বেলেমাঠ গ্রামের বাসিন্দা এবাদত শেখকে ব্যাপক মারধর করে গোলাম মোল্লার অনুগামীরা। অভিযোগ, এবাদত শেখকে বিষ্ণুপুর বাসস্ট্যান্ডের কাছে বেলেমাঠ গ্রামেরই চারজন ঘিরে ধরে ব্যাপক মারধর করে। এবাদতকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। জাকির শেখ, আমানত শেখ, জীবন মোল্লা এবং নাসির শেখ নামের চারজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন এবাদত শেখের স্ত্রী মোমেনা বেগম। যদিও, অভিযুক্তরা ধরা না পড়ায় পুলিশ সুপারের কাছে অভিযোগ জানান এবাদত।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ১ অক্টোবর আউশগ্রাম থানার পুলিশ বেলেমাঠ গ্রামে অভিযান চালায়। জাকির মোল্লা নামে অভিযুক্তদের একজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তাঁকে গাড়িতে তোলার সময় গোলাম মোল্লার নেতৃত্বে কয়েকজন পুলিশের গাড়ি ঘিরে ধরে বলে অভিযোগ। পুলিশের দাবি, জোর করে অভিযুক্তকে ছিনিয়ে নিয়ে যায় তাঁরা। পুলিশকর্মীরা বাধা দিতে গেলে লাঠি নিয়ে পুলিশকে মারধর করা হয় বলেও অভিযোগ করা হয়েছে।
পুলিশ গোলাম মোল্লা সহ আটজনের বিরুদ্ধে একটি স্বতঃপ্রণোদিত মামলা দায়ের করে। ঘটনার পর ফেরার ছিল অভিযুক্তরা। গোপন সূত্রে খবর পেয়ে বুধবার গভীর রাতে গোলাম মোল্লাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পাশাপাশি, এবাদত শেখের উপর হামলার ঘটনায় জাকির শেখকেও গ্রেপ্তার করা হয়। দু’জনকেই বৃহস্পতিবার বর্ধমান আদালতে পাঠানো হয়েছে। গোলাম মোল্লাকে দশ দিনের জন্য নিজেদের হেফাজতে চেয়ে আদালতে আবেদন জানিয়েছে পুলিশ।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বেশ কিছুদিন ধরেই গোলাম মোল্লার সঙ্গে এবাদত শেখের দ্বন্দ্ব চলছিল। সেই আক্রোশ থেকেই এবাদতের উপর হামলা করা হয় বলে অভিযোগ। পুলিশ গোলাম মোল্লার বিরুদ্ধে সরকারি কাজে বাধা দেওয়া, অভিযুক্তকে পুলিশের হাত থেকে ছিনিয়ে নেওয়া এবং পুলিশকে মারধর-সহ অন্যান্য ধারায় মামলা দায়ের করেছে।