মধ্যপ্রদেশে মৃত্যু একাধিক শিশুর, ‘বিষাক্ত’ কফ সিরাপ কেনা-বেচায় নিষেধাজ্ঞা বাংলায়
প্রতিদিন | ১০ অক্টোবর ২০২৫
স্টাফ রিপোর্টার: মধ্যপ্রদেশে কফ সিরাপ ‘কোল্ডরিফ’ খেয়ে একাধিক শিশুর মৃত্যুর পরিপ্রেক্ষিতে নিষেধাজ্ঞা বাংলায়। বেঙ্গল কেমিস্ট অ্যান্ড ড্রাগিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে নির্দেশিকা পাঠিয়ে প্রতিটি খুচরো ও পাইকারি বিক্রেতাকে জানানো হয়েছে, বিষাক্ত কফ সিরাপ ‘কোল্ডরিফ’ যেন কোনওভাবেই কেনা-বেচা না হয়।
সংগঠনের সম্পাদক পৃথ্বী বসু জানিয়েছেন, যে ব্যাচ নম্বরের কোল্ডরিফ কফ সিরাপে এই ঘটনা ঘটেছে, তা বাংলায় ঢোকেনি। তবু সাবধানতা মেনে আমরা সমস্ত পাইকারি এবং খুচরো বিক্রেতাকে জানিয়েছি কোনওভাবেই এই প্রাণঘাতী কফসিরাপের কেনা বেচা চলবে না। ১১ অক্টোবর বিক্রেতাদের সঙ্গে বৈঠক ডেকেছে অ্যাসোসিয়েশন। সেখানেও এই সতর্কতার কথা বলা হবে।
মধ্যপ্রদেশের ঘটনার জেরে ইতিমধ্যেই গ্রেপ্তার হয়েছেন তামিলনাড়ুর ওই ওষুধ প্রস্তুতকারী সংস্থার মালিক। শিশুমৃত্যুর জেরে আতঙ্ক ছড়িয়েছে বাংলায়। দেখা গিয়েছে, ওই কফ সিরাপে উপকরণ হিসেবে রয়েছে প্রপিলিন গ্লাইকল, গ্লিসারিন, সর্বিটল। পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য ড্রাগ কন্ট্রোল বোর্ড নির্দেশিকা জারি করে জানিয়েছে, অনুমোদিত কোনও জায়গা থেকে কিনতে হবে কফসিরাপের উপকরণ এই প্রপিলিন গ্লাইকল, গ্লিসারিন, সর্বিটল। শুধু তাই নয়, প্রতিটি ওষুধ প্রস্ততকারক সংস্থাকে বোর্ডের নির্দেশ, এই উপকরণ একাধিকবার ল্যাবরেটরিতে পরীক্ষা করে দেখতে হবে কোনও গন্ডগোল রয়েছে কিনা। তার রিপোর্ট জমা দিতে হবে বোর্ডের লাইসেন্সিং অথোরিটির কাছে। তবে শুধু ওই তিনটি নয়, শিশুরোগ বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন চিন্তার কারণ অন্য। ইন্সটিটিউট অফ চাইল্ড হেলথের অধ্যক্ষ ডা. জয়দেব রায় জানিয়েছেন, অভ্যন্তরীণ তথ্য অনুযায়ী ওই কফসিরাপে নিশ্চিতভাবে ছিল ডাই-ইথালিন গ্লাইকল, ইথিলিন গ্লাইকল, যা কিডনি ড্যামেজ করে। এর আগেও এই ঘটনা ঘটেছে।এ বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে।
তিনি জানিয়েছেন, মূলত চার ধরনের কাশির সিরাপ হয়। একটি কফ সাপ্রেশন, যা কাশি দমন করে। এটি কাজ করে মস্তিষ্কের মধ্যে। দ্বিতীয়টি এক্সপেক্টোরেন্ট। এতে কফ পাতলা হয়ে মুখ-কিম্বা নাক দিয়ে বের করতে হয়। তৃতীয়টি ব্রঙ্কোডাইলেটর মিউকোলিওটিক, যা ফুসফুসে বাতাসের পথকে প্রসারিত করে। এবং চতুর্থটি ডিকনজেস্টেড, যা কনজেশন বা বন্ধ নাক খুলতে সাহায্য করে। ডা. রায়ের পরামর্শ, কফ পাতলা হয়ে গেলেও স্বতঃফূর্ত ভাবে তা মুখ দিয়ে বার করতে পারে না খুদেরা। খুব ছোট বাচ্চাদের তাই কফ সিরাপ না দেওয়াই শ্রেয়। অনেক অভিভাবক গুগল করে কাফসিরাপ কেনেন বলে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এই প্রবণতা মারাত্মক। ডাক্তারবাবুর পরামর্শ ছাড়া কাফ সিরাপ কিনবেন না।